ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন আইএস এর মোকাবিলা করতে সৌদি আরবে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে যোগ দেওয়া বাংলাদেশসহ ৫৬টি দেশ একটি সামরিক সহায়তা চুক্তিতে সই করেছে। চুক্তিতে মধ্যপ্রাচ্যে ৩৪ হাজার সৈন্য পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। রিয়াদ চুক্তি নামে চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও আরও ৫৫টি মুসলিম প্রধান দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা সই করেন।
আয়োজনে সবাই গ্লোবাল সেন্টার ফর কাউন্টারিং এক্সট্রিমিস্ট গঠনের প্রশংসা করে। এই এই সেন্টারের লক্ষ্য বুদ্ধিবৃত্তিক চরমপন্থা, গণমাধ্যমের চরমপন্থা ও ডিজিটাল চরমপন্থা রোধের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন।
এই গ্লোবাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন বাংলাদেশ। সৌদি আরবের রাজধানীতে কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে পেরে সন্তুষ্ট। আমরা অবশ্যই সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ ও অর্থের উৎস বন্ধ করতে চাই।
অনুষ্ঠানে সৌদি আরবের বাদশা ও দু’টি বড় মসজিদের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানগণ বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস ও চরমপন্থা বিশ্বের শান্তির জন্য কেবল বড় হুমকিই নয়, এটি উন্নয়ন ও মানব সভ্যতার জন্যও। বাংলাদেশ সকল প্রকার চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে এবং সর্বদাই যেকোনো ধরনের একক বা সম্মিলিত সন্ত্রাস ও উৎসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরবের রিয়াদে গ্লোবাল সেন্টার ফর কমব্যাটিং এক্সট্রিমিস্ট আইডিওলজি সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা ৫৬টি আরব ও মুসলিমপ্রধান দেশের নেতাদের সঙ্গে ফটোসেশনের পর সৌদি বাদশার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ, মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আল হোসেইন, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি, কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ্ আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহসহ অন্যান্য মুসলিম দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান।
সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে আরব ইসলামিক আমেরিকান (এআইএ) সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ দিনের সরকারি সফরে গত রাতে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদ পৌঁছেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৫ মিনিটে বাদশাহ খালিদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। সৌদি শুরা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ ফয়সাল বিন আবু সাদ এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
পরে মোটর শোভযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে রিয়াদের মোভেনপিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সৌদি আরব সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন। সোমবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা মুবারক জিয়ারত করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন।