এই বিষয়ে যদিও আমার জ্ঞান কম তারপরও কিছু কথা আর কিছু অভিমত তুলে ধরছি।
কিছুদিন ধরে ধর্ষনের খবর প্রতিদিন দেখছি, সাম্প্রতি ৫ বছরের বাচ্চাকে ধর্ষন করা হয়েছে। একটি ছোট্ট ৫ বছরের বাচ্চাকে কিভাবে ধর্ষন করতে পারে কেউ? কিভাবে সম্ভব? ধর্ষনই কিভাবে করে? ৫ বছরের একটি ছোট্ট বাচ্চাকে দেখলে যেকোন পুরুষের পির্তৃত্ব জেগে উঠার কথা,পশুত্ব না! সেই ধর্ষনকারীর মানসিকতাটা কেমন? কি দিয়ে বানানো? তাকে ফাঁসি দিলেও কি তার এই কর্মের পূর্ন সাজা হবে? আমার তো মনে হয় না। তার উপর, কে জানি সেই ভিক্টিম শিশুটির ছবি ফেসবুকে দিয়ে পোস্ট দিয়ে শিশুটিকে আরো একবার ধর্ষন করেছিল। তাকেও তো ফাসিতে ঝুলাতে হবে। কয়েকবার করে। তাও তো তাদের পাপ মোচন হবে না! শিশুটির প্রজনন অঙ্গ ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলেছে সেই নরপশু। অস্ত্রপাচারও করা যাচ্ছে না।
সেই নরপশূর নাম সাইফুল ইসলাম। তাকে সাধারন ফাসিতে না ঝুলিয়ে হিং¯্র কুমির ভর্তি পুকুরে জ্যান্ত ছেড়ে দেয়া হোক অথবা ক্ষুদার্থ বাঘের খাচায়। এরপর সরাসরি সম্প্রচার করা হোক দেশ ব্যাপী। পশুর পশুত্ব দেখানো দরকার। সেই মামলাম অন্য আসামী কিন্তু এখনও পলাতক! এদের বিনা বিচারে হত্যা করা হোক।
দেশে ইদানীং এধরনের মানসিকতার মানুষের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। বাড়ছে নারীদের উপর আক্রমন। খাদিজাকে কোপানোর মত ঘটনা বা শিশুটির ধর্ষনের মত ঘটনা অহ-রহ ঘটছে। এদের কিছু হয়তো মিডিয়ার সামনে আসছে বলে আমরা জানছি, কিন্তু বাকীগুলো? যে দেশে যৌন মানসিক বেকার গ্রস্ততার চর্চা করার জন্য ফেসবুকে গ্রুপে লক্ষ-মানুষ নিয়ে গ্রুপ থাকে, সে দেশে এধরনের অপরাধ বেড়ে যাওয়টাই মনে হয় স্বাভাবিক। এধরনের পাররভাটের মানুষের সংখ্যাও এখন অনেক। তো কিভাবে থাকবে নারী-শিশুরা নিরাপদে? ৫ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে দেখেও তাদের পশুত্ব জেগে ওঠে! আমার মনে হয়, এখন সময় হয়েছে কঠিন কিছু পদক্ষেপ নেয়ার। এসব ধর্ষক, ইভ-টিজার, হামলাকারী, অনলাইন ইভ-টিজার, বেকারগ্রস্ত ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ – এদের সবাইকে এক কাতারে এনে বিশেষ আইন করে গনহারে এদের নির্মুক করার। এদের শোধরানোর কিছু নেই। এদের শেষ করে ফেলতে হবে। এরা সমাজের ক্যান্সারের মত। ১৭ কোটি মানুষের দেশে এধরনের বিকারগ্রস্ত গুলোকে ফেলে দিলে কিছু যায় আসবে না। বরং বাকী মানুষগুলোর নিরাপত্তা বাড়বে। দৃষ্টান্ত মূলক কিছু একটা করতে হবে। শুধু ফাসী না, এদের কঠিন কোন মৃত্যু দিতে। মারাত্মক কঠিন। আর সেই মৃত্যু যন্ত্রনা সবাইকে দেখাতে হবে। সবাইকে জানতে হবে নরপশু হলে তাদের শেষ পরিণতি কি হয়। এবার আসলেই সময় হয়েছে। আবার মেয়েদের ধর্ষিত হওয়ার পেছনে যারা পর্দা না করাকে দায়ী করে তাদের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করে – একটি শিশুর জন্য পর্দা কতটুকু প্রয়োজন? আপনি বা আপনার মতো মানুষেরা যারা নারী নামের রসগোল্লা খোলা দেখলেই নিজের লালসা সংবরণ করতে পারেন না তাদের কাছে একটি শিশুও কেমন করে সমান যৌন উদ্দীপক হতে পারে? কেন মিডল ইস্টের মত দেশগুলোতে যেখানে মেয়েদের পর্দা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক সেখানে প্রতি ৫ জনের ৪টি শিশুকে তাদের বয়স ৩ থেকে ৬ এর মধ্যে সেক্সুয়ালী এবিউজড বা ধর্ষন করা হয়? একটি শিশু যে হয়তো ঠিক মতো তখনো হাঁটতেই শিখেনি অথচ সে শিখে গেল আপনাদের সেক্সুয়ালী সিডিউসড করা! শুধু ধর্মের দোষ দেই কেন, আমার কাছে সেই সব বিনোদন মাধ্যম – সিনেমা, নাটক বা বলিউডি মুভি/গানগুলোকেও সমান অসুস্থ মনে হয় যেগুলোতে হরহামেশায় মেয়েদের প্রদর্শিত করা হচ্ছে ভোগ্যপণ্য বা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে, যেকারণে ধর্মে মেয়েদের ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে ঠিক একই কারণে সেখানে লোভনীয় রসগোল্লার মতই সেখানে মেয়েদের তুলে ধরা হচ্ছে। নারী অধিকার বলে আলাদা কিছু থাকা লাগবে কেন? নারীবাদী হওয়ারও প্রয়োজন নেই কারো। মেয়েরা কোন আলাদা প্রজাতি নয় এটা কবে মানুষ বুঝবে, মানুষ হিসেবে একটা মেয়ের আবেগ, অনুভূতি, চাওয়া-পাওয়া অংশে আলাদা নয়। কবে মেয়েরা নিজেকে শুধু মানুষ ভেবে বাধাহীন পথ চলতে পারবে? কবে একটি মানুষ শুধুই মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার পাবে? কবে আমাদের প্রত্যকের ভেতর থেকে নারীর প্রতি নারীসুলভ মনোভাব বদলে কেবল মানুষসুলভ মনোভাব জন্ম নিবে? ইভ টিজিং রোধে পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসতে হবে। উত্ত্যক্তকারীরা যৌন উৎপীড়ক, তারা হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। তবু এখনো পুলিশের খাতায় দাগি আসামি বলতে বোঝায় সিঁধেল চোর-পকেটমারদের। কেন এখনো উত্ত্যক্তকারীদের নামে থানায় খাতা খোলা হচ্ছে না?
ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষক মিজানুর রহমানকে হত্যা করা হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যে বখাটেদের হামলায় চাঁপা রানী ভৌমিক নামের একজন মা নিহত হন। এখন প্রয়োজন আইন অনুযায়ী উত্ত্যক্তকারী পলাতক সন্ত্রাসীদের ধরতে ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করা। আইন যথেষ্ট আছে, কিন্তু প্রয়োগ হচ্ছে না। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা ইত্যাদির আওতায় উত্ত্যক্তকারীদের সাজা দেওয়া যায়। কিন্তু উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে যে মেয়েরা, তাদের পরিবারগুলো নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে থানা বা আদালতে যাচ্ছে না। বাংলাদেশে প্রত্যক্ষদর্শী কিংবা নির্যাতিতদের সুরক্ষার জন্য কোনো আইন নেই। যাঁরা আইনের আশ্রয় নেন, তাঁরা আরও বেশি হেনস্তা হন।
তবে ইভ টিজিং রোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা স্থানীয় সরকারগুলো নিতে পারে। পাড়ায় পাড়ায় কারা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছে, সে সম্পর্কে স্থানীয় সরকার পুরোপুরি ওয়াকিবহাল থাকে। তাদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কার্যকরভাবে এদের প্রতিরোধ করা যাবে।
“আমি মেয়েদের উদ্দেশ্য করে করে বলছি।আপনারা ইসলামীক পোশাক পরিধান করে ঘর থেকে বের হোন।ইসলাম আপনাকে শরীরের প্রতিটা অংশ জামার উপর দিয়ে ফুটিয়ে তোলতে বলেনি।
ছেলেদের বলছি আপনারা মেয়েদের সম্মান করুন।আপনার ঘরেও মা বোন আছে।আপনার বোনের সাথে কেউ এমন করলে আপনার কেমন লাগবে??”