এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় একই দিনে দুই জমজ সহদরসহ পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, রবিবার আমতলী ও চরগোপালপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। দুপুরে উপজেলার আমতলী গ্রামে লিটন মিয়ার ছেলে মোস্তাকিন (৫) ও আওলাদ মিয়ার ছেলে তৌফিক (৫) পুকুরে ডুবে মুত্যু বরন করে।
অপর দিকে চর গোপালপুর গ্রামে রফিক শেখের জমজ দুই ছেলে আব্দুল্লাহ (৩) ও মোহাম্মাদুল্লাহ (৩) খালের পাড়ে খেলতে গিয়ে পানিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করে। অনেক খোজাখুজির পর শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা উপেক্ষা করে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় খাল খননের নামে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে অবাধে তা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে খালের পাড়ে বসবাসকারীদের ঘরবাড়ি ও ওই এলাকার আশপাশের ফসলি জমি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেশ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন।
কাশিয়ানী উপজেলার বলুগা খালের তালতলা থেকে আড়য়াকান্দি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার খননের প্রকল্প গ্রহণ করে পাউবো। এই ১০ কিলোমিটারের জন্য ৩টি প্যাকেজে টেন্ডার দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকায় রামদিয়া থেকে আড়য়াকান্দি পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের কাজ পেয়েছে মেসার্স এ এস কনস্ট্রাকশন। আর এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধেই অবাধে বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খনন কাজে পাউবো’র সরবরাহকৃত নকশা, পরিমাপ ও বিধিমালা কোনোটিই সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে না। খালের যে স্থানে বালু পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে শ্যালো মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এ সব বালু সরকারি জায়গায় না ফেলে টাকার বিনিময় স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বালু ফেলার জন্য খালের তীরে পাউবো’র পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেখানে বালু ফেলা হচ্ছে না। টাকা নিয়ে তা স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে তা বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি খালের তীরে বসবাসকারী দরিদ্র লোকদের কাছ থেকেও সরকারি জায়গা ভরাট করে দিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে। বালু উত্তোলনের পর তা ফুট হিসাবে বিক্রি করা হয়।
কাশিয়ানী উপজেলার আড়য়াকান্দি গ্রামের সমশের আলী বলেন, রামদিয়া বাজার থেকে আড়য়াকান্দি পর্যন্ত বলুগা খালের প্রায় ২০টি স্থানে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ সব বালু পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়ে প্রভাবশালীদের বাড়ির ভিটা, পুকুর, খাল-নালা, রাস্তা, মার্কেট, দোকান পাট ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রামদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী করম আলী শেখ বলেন, সরকারের কোষাগারে রয়েলিটি জমা দিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তিতে বালু নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে সে নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, খাল ড্রেজিং করা হচ্ছে না। খালের যে স্থানে বালু উঠছে, সেখানেই শুধু মেশিন বসানো হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি, ঘরবাড়ি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে।
পাউবো’র জায়গায় বসবাসকারী রাজিয়া বেগম (৪০) বলেন, আমরা গরীব মানুষ সরকারি জায়গায় থাকি। বাড়ির সামনের গর্তটা ভরাট করে দিতে ঠিকাদারের লোকদেরকে বলেছি। কিন্তু সরকারি জায়গা ভরাট করে দিতেও তাদের ফুট প্রতি ৫ টাকা করে দিতে বলেছে। পাশাপাশি মেশিন চালকদের খাবার দিতে হবে বলেও দাবি করেছে।
সাফলীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান (৬০) জানান, তার বাড়ি সংলগ্ন খালে দুই সপ্তাহ ধরে বালু উত্তোলন করছে ঠিকাদারের লোকেরা। তিনি নিষেধ করলে তাকে উল্টো দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের পরিবেশ কর্মী বিধান টিকাদার বলেন, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধি মালায় শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এতে ভূমিকম্পের প্রবণতা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা থাকে।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: সাঈদ-উর-রহমান বলেন, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী বালু বিক্রির অধিকার ঠিকাদারদের নেই।
গোপালগঞ্জ পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাঈন উদ্দিন বলেন, শ্যালো মেশিন দিয়ে খাল খনন করা যাবে না। উত্তোলন করা বালু সরকারি জায়গার বাইরে ফেলাও যাবে না। আমি ঠিকাদারদের এ নিয়ে সাবধান করে দিয়েছি। নির্দেশনা না মানলে মেশিনসহ তাদের আটক করে জেলে পাঠাবো।
গোপালগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের ৪ দালাল আটক
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় অফিসের ভেতর থেকে জুল্লুন মোল্লা, তুহিন শেখ, নান্টু তালুকদার ও নাজমুল মোল্লা নামে চার দালালকে আটক করা হয়। এরা দীর্ঘ দিন ধরে পাসপোর্ট অফিসে দালালি করে আসছিল বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।
অপর দিকে, সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার থেকে ৭৫ পিস ইয়াবাসহ আবুল কাসেম (৪০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের পরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী গ্রেফতার
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭ বোতল ফেন্সিডিলসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের সেকেন ফকিরের ছেলে কাইয়ুম ফকির (৩০) কে ৭ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত কাইয়ুম উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের দুলালের চায়ের দোকানের পাশে বসে দীর্ঘ দিন যাবত মাদক বিক্রি করে আসছিল।
রবিবার দিনগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে।