এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ আজ বিশ্ব মা দিবস। মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার এই দিবসটি পালন করা হয়। (১৪ মে) পৃথিবীর সর্বত্রই যথাযোগ্য মর্যাদা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে এই দিবসটি।
যদিও মায়ের ভালোবাসা কোনো নির্ধারিত দিনের ওপর নির্ভর করে না। মা যেখানেই থাকুক, মায়ের ভালোবাসা সন্তানের হৃদয়ে থাকবে সবসময়।
ধরণীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত হচ্ছে ‘মা’। মায়ের পদতলে রয়েছে জান্নাত। ‘মা’ পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক। মানুষ যে ডাকে খুঁজে পায় প্রশান্তি। দুনিয়াতে মা হলো মানুষের একমাত্র নিরাপদ ও সুখের ঠিকানা।
মা দিবসে প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে অনেকেই অনেককিছু ভেবে রেখেছে। এমনই কিছু গল্পের খোঁজে বেলা ১২ টায় ক্যামেরা, প্যাড-কলম নিয়ে বের হই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।
অনেককে দেখলাম মা’কে নিয়ে রেস্টুরেন্টে, শপিং মলে ঢুকতে। কিন্তু শহরের আরেক প্রান্তে ঢুঁ মারতেই চোখে পড়লো উল্টো চিত্র। ব্যস্ত নগরীরর ঐ ব্যস্ত মানুষগুলোর মাঝে দিবসটিকে ঘিরে কোন উদ্দীপনা নেই, রয়েছে শুধুই কর্মচাঞ্চল্যতা।
ঠাকুরগাঁও শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাদেক মার্কেটের নিচে গ্যারেজের কাজে ব্যস্ত এমনই এক শিশুর সাথে কথা হলো মা দিবস নিয়ে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকার গরীব রিক্সাচালক মোকলেসুর রহমানের ছেলে রনি। মা সালমা বেগম, পরের বাসায় কাজ করেন।
৫ ভাইবোনের চতুর্থ রনির বয়স ১৩ বছর। গ্যারেজে ২ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রনি ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর সামর্থ্যের অভাবে আর পড়াশুনা এগোতে পারেনি।
মা দিবসে মা’কে নিয়ে স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে এক অন্যরকম স্বপ্নের ভুবনে হারিয়ে যায় সে। স্বচ্ছল রনি মা’কে দিতে চায় পৃথিবীর সবকিছু। এসময় তার মুখজুড়ে ফুটে ওঠে এক অনাবিল হাস্যদৃশ্য।
প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা গ্যারেজে কাজ মালিক আমার হাতে ৫০ টাকা ধরিয়ে দেয়। যা দিয়ে আমার পকেট খরচ চলে এবং যতটুকু টাকা বেচে যায় তা তার মায়ের হাতে তুলে দেই।
প্রিয় মানুষটির জন্য প্রিয় কি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা হয় তার এ কথার জবাবে রনি বলে, আমার মা’কে অনেক কিছুই উপহার দেওয়ার ইচ্ছে হয়। শাড়ি, জামাকাপড়সহ আরো অনেক কিছু। মায়ের প্রতি ভালোবাসার কথাগুলো বলতে বলতে চোখ ভিজিয়ে ফেলে সে।