ঢাকা; সমঝোতার উত্তর রাজপথ থেকেই আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, সমঝোতার কথা বলি রাজনীতিক কারণে, কৌশলের কারণে। কিন্তু এর উত্তর আসতে হবে রাস্তায়, মাঠে। এটা আদায় করা হবে। তাই আন্দোলন ছাড়া এর কোন বিকল্প নেই। আমরা যে সুস্থ গণতন্ত্র সহায়ক সরকারের কথা বলিÑ সেটা সহায়ক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বলেন, নির্দলীয় যাই বলেন; আমরা এমন একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যে সরকারের কোন রাজনৈতিক স্বার্থ থাকবে না। নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি হস্তক্ষেপ থাকবে না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ফোরাম আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন: নির্বাচন সহায়ক সরকার: সরকার ও নির্বাচন কমিশনের’ ভূমিকা শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আমরা বসে নেই। কিভাবে সহায়ক সরকার গঠন করা যাবে তা নিয়ে আমরা আলাদা রূপরেখা দেব। যে সরকারের অধীনে দেশের সকল দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে এবং সকল মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। বিএনপির ‘ভিশন ২০৩০’ নিয়ে আওয়ামীলীগের প্রতিক্রিয়ার জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, অত্যন্ত দুঃখ লাগে, ‘ভিশন ২০৩০’ উপস্থাপন তখনও শেষ করেননি বা শেষ করেছেন। আওয়ামী লীগ সঙ্গে সঙ্গে একটি অন্তসারশূন্য প্রতিক্রিয়া দিল। তারা ঠিকমতো পড়েও দেখলো না। তাদের সুনির্দিষ্টভাবে বলা উচিত ছিলো। কোন কোন বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সঠিক নয়। যারা বিএনপির এ রূপরেখাকে অন্তসারশূন্য বলছে আসলে তারা নিজেরাই অন্তসারশূন্য। তারা যদি সত্যিকার অর্থে গঠনমূলক রাজনৈতিক দল হতো তবে ‘ভিশন ২০৩০’কে অভিনন্দন জানাতো। এটাকে এফ্রিশিয়েট করতে পারতো। গত ৪০ বছরে কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরণের চিত্র তুলে ধরেনি। খালেদা জিয়া ঘোষিত ‘ভিশন ২০৩০’কে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলিল অভিহিত করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া যেটা উপস্থাপন করেছেন, আমি মনে করি এটি একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলিল হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে থাকবে। এটি দেশের রাজনীতিতে একটি মাইলফলক। এ ভিশনের মাধ্যমে আন্দোলন জোরদার হবে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার ভারসাম্যের প্রয়োজনীতা তুলে ধরে সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, আজকে ভারসাম্যের কথা বলেছি, আমরা দেখেছি যে; প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা কর্তৃত্ববাদের জন্ম দিয়েছে। এ অভিজ্ঞতা আমাদের সময়েও, শুধু এই সরকারের সময়ে নয়। এই সরকার একটু বেশি করেছে। সংবিধান অনুযায়ী এটা একটা কর্তৃত্ববাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় যিনিই প্রধানমন্ত্রী হোন না কেন। বিএনপি জয়লাভ করলে পরবর্তিতে প্রধানমন্ত্রী তো খালেদা জিয়াই হবেন। তিনি নিজেই তো বলছেন, ‘এতো ক্ষমতা থাকার দরকার নেই, এটার একটা ভারসাম্য আনা দরকার।’ জাতীয় সংসদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা একটা ভাইব্রেট ফাংশনাল সংসদ দেখতে চাই। যে সংসদে একটা সত্যিকার বিরোধী দল থাকবে, যে বিরোধী দল সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। সরকারের আজকে কোন জবাবদিহিতা নেই বলে দেশে সুশাসন, প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধবংস করে দেয়া হয়েছে দুর্নীতির মাধ্যমে। আমরা একটি জবাবদিহিমূলক সরকার দেখতে চাই। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করবো না। আমরা বলেছি, আমরা ক্ষমতায় গেলে সংসদে পাবলিক একাউন্টস কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেইকেন কমিটি দুটির চেয়ারম্যান বিরোধী দল থেকে নেব। এই দুটি কমিটি হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্ব কমিটি। আমরা সংসদে সংখ্যানুপাতে আসন বন্টন বা সংখ্যানুপাতে যে বক্তৃতা নির্ধারণ আমরা তুলে দেব। কারণ বিরোধী দলকে সুযোগ দিতে হবে।
নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি পারভেজ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, ড. এস এম হাসান তালুকদার, প্রফেসর এমতাজ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদ ও ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান মিহির বক্তব্য দেন।
নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি পারভেজ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, ড. এস এম হাসান তালুকদার, প্রফেসর এমতাজ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদ ও ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান মিহির বক্তব্য দেন।