বাল্য বিয়ে রুখে দেয়া সেই নীলিমার অভিযোগে মামলা না নেয়ায় পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ

Slider বরিশাল

Gram Bangla

 

 

 

 

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় প্রশাসনের মাসিক আইন-শৃঙ্খলার সর্বাধিক আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে নিজের বাল্য বিয়ে রুখে দেয়া সেই নিলিমা। বাল্য বিয়েতে বাধ্য করতে নীলিমাকে মারধরসহ তার মা ও বোনকে মারধরের দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড না করায় পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় গত ছয় মাস ধরে ওসি মনিরুল ইসলামের দীর্ঘ অনুপস্থিতি হতাশ করছে সভার সদস্যদের। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা প্রতিরোধ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী তারিক সালমনের সভাপতিত্বে আলোচনায় সর্বাধিক গুরুত্ব পায় রতœপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের নিজের বাল্য বিয়ে রুখে দেয়া নিপুল করের মেয়ে সেই নীলিমার কাহিনী। সভার আলোচনায় উঠে আসে গত ২৫এপ্রিল নীলিমা ও তার মা বোনকে মারধরের জন্য থানায় দায়ের করা অভিযোগটি গত ১৩ দিনেও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেননি ওসি মনিরুল ইসলাম। এদিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সরকার বিরোধী আন্দোলনে নাশকতা মামলার চার্জশিটভুক্ত অন্যতম আসামী আনোয়ার শাহ ও ছাত্রদল নেতা রিপন শাহ জোর করে নীলিমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি ওই সভাকে জানালে ইউএনও গাজী তারিক সালমন তাৎক্ষনিক নীলিমাকে ফোনে সভায় ডেকে আনেন। ওই সভায় নীলিমা উল্লেখিত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য প্রদান করে।
সভা সূত্র মতে, আইন-শৃঙ্খলা প্রতিরোধ সভার সদস্য সচিব হলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। কিন্তু ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বরের সভার পরে তিনি কোন সভায় উপস্থিত হননি। ফলে ভেঙ্গে পরেছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন ও বাস্তবায়নের সার্বিক কাঠামো। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সভার সদস্যরা। সভা সূত্রে জানা গেছে, মুলত বিভিন্ন অনিয়ম ও জবাবদিহিতা এড়িয়ে যাবার জন্যই ওসি মনিরুল ইসলাম দীর্ঘ ছয় মাস সভায় উপস্থিত হননি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী তারিক সালমন সাংবাদিকদের জানান, সদস্য সচিব ওসি সভায় উপস্থিত থাকলে প্রশাসনে কাজ ত্বরান্বিত হয়, কাজের গতি ও জবাবদিহিতা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাকে পরবর্তি সভাগুলাতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকতে বলবেন জানিয়ে আরও বলেন, নীলিমার লিখিত বক্তব্যর পর তার কার্যালয় থেকে ওই সাদা কাগজ উদ্ধার ও পরবর্তি আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি ফরোয়ার্ডিংসহ জিডির জন্য থানায় প্রেরণ করা হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায়, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হক তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা আ. রশিদ সিকদার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দীপিকা রানী সেন, আগৈলঝাড়া থানার এসআই মনির হোসেন, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ক্ষিতীশ চন্দ্র ফলিয়া, রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, রতœপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদার প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *