প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করেছেন, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অপরাধীদের পক্ষে প্রচারণা করছে। তারা কিছু রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এবং বাংলাদেশে একটি পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চায় তারা।
শনিবার, ৬ মে রাতে জয় তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ দাবি করেন।
সম্প্রতি বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেন, বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা ও বিরুদ্ধ মত দমন করা হচ্ছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে তারা দাবি করে যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করা হচ্ছে এবং আমাদের দেশে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। তারা উদাহরণ হিসেবে শফিক রেহমান এবং মাহফুজ আনামের কথা উল্লেখ করেছে।
জয় বলেন, শফিক রেহমান একজন সাবেক মার্কিন এফবিআই এজেন্টের সাথে দেখা করে এবং আমার সম্পর্কে তথ্যের জন্য তাকে ঘুষ প্রদান করে। সাবেক এই এজেন্ট এবং তার দুই সহকর্মীরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে আছে। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস এর ওয়েবসাইটে এই সম্পর্কে বিস্তারিত পাওয়া যায়।
আমরা দেখেছি যে, এক সহযোগী মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছে সে আমাকে অপহরণ ও হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলো এবং শফিক রেহমান এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ প্রদানে জড়িত ছিলেন। শফিক রেহমান যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন, তাহলে তিনিও এখন জেলেই থাকতেন।
তিনি আরও বলেন, মাহফুজ আনাম জাতীয় টেলিভিশনে স্বীকার করেছেন যে তিনি আমার মা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প লিখেছেন। তিনি এও স্বীকার করেছেন যে, একটি অবৈধ সামরিক সরকার আমাদের দেশে যেন ক্ষমতায় আসতে পারে সেজন্য তিনি আমার মা’র বিরুদ্ধে নগ্ন প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তবুও, আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। বিদ্রোহ ও অপবাদের জন্য ন্যায় বিচারের অধিকার থেকেই আমাদের পার্টির সদস্যরা তার বিরুদ্ধে সিভিল মামলা দায়ের করে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি সদস্য এই সামরিক একনায়কত্বের সময় ভোগান্তিতে মাহফুজ আনামকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছিলো।
তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অপরাধীদের পক্ষে প্রচারণা করছে। তারা বলে যে নাগরিক হিসাবে আমাদের নাকি নিজের সম্মান রক্ষার্থেও সিভিল কোর্টে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার নেই। ঠিক এই জায়গাতেই আমাদের শক্ত প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
জয় দাবি করেন, আমরা ভুলি নাই যে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০০৭-২০০৮ সালে সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তখন রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কোন অভিযোগ ছাড়াই আটক হয়েছিলো এবং তাদের সম্পত্তি কোন সঠিক প্রক্রিয়া ছাড়াই বাজেয়াপ্ত হয়েছিলো। মানবাধিকার সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন হয়েছিলো, কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে তখন আমরা নীরব দেখেছি। তবে আজ তারা অপরাধীদের রক্ষা করার কথা বলছে ।
জয় বলেন, আমি সন্দেহ করছি যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কিছু রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তারা ক্ষমতায় একটি পুতুল সরকার আনতে চায়, আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় । ১/১১ থেকেই একটা ব্যাপার খুব পরিষ্কার যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আর কোন মানবাধিকার সংগঠন নয়।