এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ ঃ চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ফসল জলমগ্ন হয়ে পড়ায় গোপালগঞ্জের কৃষকদের স্বপ্ন ভেঙ্গেছে। গত বছর ধান নেওয়র সময় কৃষকদের মধ্যে ছিল উৎস মূখর পরিবেশ। এই বছর হয়েছে তার উল্টো চিত্র। কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শুধুই কষ্ট আর হাহাকার। আধাপাকা ধান কেটে বাড়িতে নেওয়ার সময় কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম উত্তর পাড়ার কৃষক হারাধন মন্ডল। জমিতে পানি জমে থাকার কারনে ধান কেটে গোলায় তুলতে হিমসিম খাচ্ছে কৃষকরা। অনেক জমিতে দেখা দিয়েছে নেক ব্লাষ্ট রোগ। কাঁচা ধান পাকা হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক জমিতে পানি জমে থাকার কারনে ধান কাটতে এবং গোলায় ধান তুলতে সিমাহীন কষ্ট হচ্ছে কৃষকদের। জমি থেকে ধান কেটে প্রথমে উচু জাগায় রাখা এবং সেই ধান যে কোন যানবাহন অথবা মাথায় করে বাড়িতে নিতে হচ্ছে তাদের। গ্রামের কালে বিলে রয়েছে কচুরিপানায় ভরা আর তা অতিক্রম করেও কৃষকদের বাড়িতে ধান নিতে হচ্ছে। কচুরিপানা নিধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন উদ্যোগ নেই। এত কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেক কৃষক ফিরে যাচ্ছে নিজেদের এলাকায়। এমতাবস্থায়, খেত মালিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বাজার থেকে চড়া দামে কৃষান কিনতে হচ্ছে তাদের। আবার ধানের ভাগাও বেশি দিতে হচ্ছে। টুঙ্গীপাড়া উপজেলার গুয়াধানা গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন ভৌমিক বলেন, অন্যান্য বছর প্রায়ই ফসলের খেত থাকে শুকনো। জমি থেকেই ধান ও খর শুকনো অবস্থায় বাড়িতে আনা হয়। অল্প পরিশ্রমে কৃষান কৃষানিরা গোলায় ধান তুলে। এবছর তা হচ্ছে না। চরম দুর্ভোগে পড়েছে কৃষক ও খেত মালিকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, নিবিড় বার্ষিক সফল উৎপাদন কর্মসুচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে জেলায় এই বছর ৭৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ইরি- বোরো ফসলের আবাদ করা হয়। টাকা বর্ষন ও জোয়ারের পানিতে ৭ হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। ১শ ৮০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুধাংশু কুমার মজুমদার বলেন, আর বৃষ্টি না হলে, আবাহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শন করে ক্ষতির তেমন চিত্র পাননি বলেও জানান।