পুরুষ বলতে সবেধন নীলমণি শম্ভু। তার নারী আসক্তি বিশেষ না থাকলেও আপাতত তার সঙ্গী দুই নারী শীলাবতী ও কাবেরী। দুই সঙ্গিনীকে নিয়ে দিব্যি বাসুদেবপুরের জঙ্গলে গরমের ছুটি কাটাচ্ছে সে। সারাদিন কাজ নেই। তাই স্নান, খাওয়া, ঘুম আর জঙ্গলের ফুরফুরে হাওয়ায় বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে শম্ভু। শম্ভু, শীলাবতী ও কাবেরী আসলে তিনটি কুনকি হাতি। বাসুদেবপুরে জঙ্গলের পিলখানায় আপাতত এদের রাখা হয়েছে। গত বছর বাঁকুড়ার বিভিন্ন জঙ্গলে হাতির উৎপাত ঠেকাতে উত্তরবঙ্গের হাতি পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে শম্ভু, শিলাবতি, কাবেরী চম্পাকলি ও লক্ষ্মী নামের পাঁচটি কুনকি হাতিকে বাঁকুড়ায় আনা হয়।
বাঁকুড়ায় আসার পর থেকেই শম্ভুর সঙ্গে মনোমালিন্য হয় চম্পাকলি ও লক্ষ্মীর। প্রায়শই শম্ভুর সঙ্গে তাদের ঝগড়া থামাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছিল বন দফতরের কর্মীদের। অগত্যা মাস কয়েক রাখার পরেই চম্পাকলি ও লক্ষ্মীকে ফের উত্তরবঙ্গে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয় বন দফতর। বাসুদেবপুরের পিলখানায় ঠাঁই হয় শম্ভু, শীলাবতী ও কাবেরীর। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ দক্ষিনবঙ্গের যে জেলাতেই দলমার দাঁতাল দল ঢুকে সমস্যা তৈরি করবে, সেখানেই নজরদারির জন্য নিয়ে যাওয়া হবে এই তিনটি কুনকি হাতিকে।
একাধিক বার হাতি খেদানোর কাজে রীতিমতো সাফল্যের সঙ্গে তাদের ব্যবহারও করে বন দফতর। কিন্তু গত মাসে দাঁতাল দল বাঁকুড়া থেকে দলমায় ফিরে যাওয়ায় আপাতত বাঁকুড়ায় দাঁতালের উপদ্রবের সমস্যা নেই। সমস্যা নেই আশপাশের জেলাগুলিতেও। তাই শম্ভু, শীলাবতি ও কাবেরীর আপাতত ছুটি। দিনে দু’বার স্নান, ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া আর জঙ্গলের মিঠে হাওয়ায় ঘুরে বেড়িয়ে আপাতত ছুটির আমেজ চেটে পুটে নিচ্ছে এই তিন কুনকি হাতি। হাতিদের এই ছুটি কাটানো দেখতে আশপাশের অনেকেই হাজির হচ্ছেন বাসুদেবপুরের পিলখানায়।