১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে তিন লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা (চার হাজার ৪৬১ কোটি ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার), যা দেশের বর্তমান মোট জাতীয় বাজেটের চেয়েও বেশি। প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৪৯টি দেশের অর্থপাচারের তথ্য রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিবছর অর্থপাচারের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এই ১০ বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অর্থপাচার দুই ট্রিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। সারা বিশ্বে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয় তার ২৪ শতাংশই হয় উন্নয়নশীল দেশ থেকে।
জিএফআই ২০১৩ সালে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সেটা থেকে জানা যায়, ২০১৩ সাল পর্যন্ত হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ৫৫৮ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি ডলার পাচার হয়েছিল। তিন বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬৬ কোটি ডলার। নতুন প্রতিবেদনে পাচারের হার আরও বেশি।
সোমবার প্রকাশিত ‘নতুন গবেষণা : উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বড় এবং স্থায়ী অবৈধ আর্থিক প্রবাহ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য বা সেবা আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই ১০ বছরের গড় হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত থেকে ৫৫ হাজার ৭ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময়ে শ্রীলঙ্কা থেকে ২৩২৩ কোটি, নেপাল থেকে ৫২৫ কোটি, পাকিস্তান থেকে ৫৮৯৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এ ছাড়া আফগানিস্তান থেকে পাচার হয়েছে ১১ হাজার ৭৯৬ কোটি ডলার।
উল্লেখ্য, জিএফআই একটি অলাভজনক সংস্থা, যারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবৈধ আর্থিক প্রবাহ বা মুদ্রাপাচার নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করে থাকে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে অর্থপাচার রোধে বিভিন্ন রকম পরামর্শর মাধ্যমে নীতিগত সহায়তা দিয়ে থাকে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিবছর তারা অর্থপাচারের প্রতিবেদন প্রকাশ করে।