এস. এস. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল বড়মাঠে মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশ চলাকালীন সময়ে শিশু শ্রমিক রাকিবের সাথে আলাপচারিতায় ফুটে ওঠে তার জীবনের করুণ গল্প।
নাম রাকিব, বয়স ১৪ বছর। বাসা সদর উপজেলার দক্ষিণ সালন্দর ইউনিয়নের মিলননগর এলাকায়।
৪ বোন, ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট রাকিব। জন্মের পর বাবাকে হারিয়ে অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা রাকিব মায়ের কষ্ট সইতে না পেরে বাকি ভাইদের মতো নিজের হাতে সংসারের হাল তুলে নেয়।
” একদিন না একদিন তো মোক সংসারের হাল ধরিবায় হবে “
২০১৫ সালে অর্থাভাবে পড়ালেখা ছেড়ে দেয় রাকিব। সেবছরই বড়ভাইয়ের সহায়তায় সাহায্যকারী সংস্থা ইকো স্যোশাল ডেভলাপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইএসডিওর অধীনে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ শেখে সে। একবছর পেরিয়ে যায় কিন্তু অর্থাভাবে দোকান দেওয়া হয়ে ওঠেনা তার।
২০১৬ ‘র জুনে ভাড়ায় অটোরিকশা চালানো শুরু করে সে। দিনশেষে মালিককে ৪০০ টাকা তুলে দেওয়ার পরে ১০০-১৫০ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরে রাকিব।
আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাকিবের মতোই নিজেদের জীবনের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তার দুই বন্ধু।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশের বন্ধুরা যখন স্কুলের দিকে ছোটে, রাকিবকে তখন দু’মুঠো অন্ন জোগানোর জন্য জীবিকার তাগিদে বের হতে হয়।
ক্লাস ফোর পাশ করে ২০১৫ সালে সে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হয়। কিন্তু অভাবের তাড়নায় আর পড়ালেখা করা হয়ে উঠেনি।
” সুযোগ পাইলে আরো পড়ালেখা করতে চাই “
তার এই করুণ আকুলতায় কি প্রকাশ পায়না তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি?
হয়তো খুব কষ্ট হয়, কিন্তু সেই পাহাড়সম কষ্টকে বুকে চেপে রেখেই কাজে বের হয় রাকিবদের। শুধু রাকিবই নয়, এভাবেই শৈশবকালেই ঝড়ে পড়ে হাজারো প্রতিভা।