আবারো মিডিয়ার ওপর চড়াও ট্রাম্প, সাংবাদিকদের কড়া জবাব

Slider সারাবিশ্ব

63611_Trump-Vai

 

ঢাকা; ক্ষমতার শততম দিন উদযাপন করতে গিয়ে আবারো গণমাধ্যমের ওপর চড়াও হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় তিনি দাবি করেন, তার ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিন ছিল ‘খুবই ফলপ্রসূ’।
মিডিয়া বা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ধার আরো তীক্ষ্ন করেছেন। বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে সমালোচনা হচ্ছে তা ‘বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কহীন’ সাংবাদিকদের ‘মিথ্যা সংবাদ’। তার এমন সমালোচনারও কড়া জবাব দিয়েছে হোয়াইট হাউজে কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সংগঠন হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেন্সস এসোসিয়েশন। এর প্রেসিডেন্ট জেফ ম্যাসন ধারালো ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের শত্রু নয় প্রেস বা মিডিয়া। সাংবাদিকদের এ সংগঠনের বার্ষিক ডিনার বা নৈশভোজে সব সময়ই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এবার তাতে যোগ দেন নি ট্রাম্প। তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এতে যোগ দেবেন না তিনি। তার এমন সিদ্ধান্তে আহত হয়েছে সাংবাদিকদের ওই সংগঠন। তাই এর প্রেসিডেন্ট জেফ ম্যাসন জোরালো গলায় বলেন, এখানে আমরা সমবেত হয়েছি প্রেসকে (মুক্ত প্রেস) সেলিব্রেট করতে, কোনো প্রেসিডেন্সিকে নয়। তার এমন সব ধারালো বক্তব্যে অনুষ্ঠানে সমবেতরা সবাই দাঁড়িয়ে, করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। সিএনএন টেলিভিশনে এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ম্যাসন কিভাবে সমালোচনার তীর ছুড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন একজন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। এর আগে ট্রাম্প তার সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন পেনসিলভেনিয়ায়। অনলাইন বিবিসিতে বলা হয়েছে, সেখানে ট্রাম্প বলেছেন, একের পর এক প্রতিশ্রুতি রেখে যাচ্ছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে যে সমালোচনা হচ্ছে তাকে তিনি ‘বাস্তবতার সাথে সম্পর্কহীন’ সাংবাদিকদের ‘মিথ্যা সংবাদ’ বলে অভিহিত করেন। এর মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রথম ১০০ দিনে যেসব প্রতিশ্রুতি তিনি সম্পন্ন করতে পারেন নি বলে মিডিয়ায় তার সমালোচনা হচ্ছে সে সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজভিত্তিক সাংবাদিকদের বার্ষিক নৈশভোজ, হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেন্টস ডিনারে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের পর এই প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন না। সর্বশেষ ১৯৮১ সালে রিগান গুলিবিদ্ধ হবার পর পুরোপুরি সেরে না ওঠার কারণে ওই সময় নৈশভোজে অংশ নিতে পারেন নি। তবে ট্রাম্পের বিষয় আলাদা। তিনি অসুস্থও নন। রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত ছিলেন এমনটাও বলা যাবে না। কারণ, তিনি এদিন পেনসিলভেনিয়াতে সমর্থকদের সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন, যা তার রাষ্ট্রীয় কাজের অংশ নয়। এর আগে  ট্রাম্পের জলবায়ু পরিবর্তন নীতির প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বড় কয়েকটি শহরে সমাবেশ হয়েছে। হ্যারিসবার্গে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, তার ১০০ দিন নিয়ে গণমাধ্যম যেসব কথা বলেছে, সেজন্যে তাদের ‘বিশাল একটা ফেলের গ্রেড’ দেয়া উচিত। উল্লসিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটনের ১০০ মাইলের বেশি দূরে আসতে পেরে তিনি রোমাঞ্চিত’। তিনি উপহাস করে বলেন, নৈশভোজের বিষয়ে ‘হলিউড তারকাদের একটি বড় দল এবং ওয়াশিংটনের গণমাধ্যম এখন নিজেদের সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে’ এবং নৈশভোজটি হবে ‘খুবই নীরস’। ট্রাম্প তার সমাবেশে আরো বলেন, তার প্রথম ১০০ দিন ছিল ‘খুবই উত্তেজনাকর এবং ফলপ্রসূ’। বারাক ওবামার প্রশাসন সবকিছু ‘অগোছালো’ করে রেখেছিল বলে দাবি করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ‘একটি বড় সিদ্ধান্ত’ জানানো হবে। আগে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে ভাওতাবাজি বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *