এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ – বিপিএলের পর এবার শুরু হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লীগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ – আইপিএল।
এটি নিঃসন্দেহে বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বের প্রতিটি মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আজ সবাই এই ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লীগ নিয়ে মাতোয়ারা। কিন্তু বিপিএলের পর এই আইপিএলকে কেন্দ্র করেও ধ্বংসের মুখে অধঃপতিত আজ বাংলার যুবসমাজ।
মূলত, দুই বাংলাদেশী ক্রিকেট তারকা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান কলকাতা নাইট রাইডার্সে এবং কাটারমাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে খেলার কারণে ভিনদেশী এই ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লীগ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ঠাকুরগাঁওবাসীর মাঝে।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে স্বনামধন্য অনেক ক্লাব, নামকরা অনেক মোড় রয়েছে যেখানে সন্ধ্যে নামলেই শুরু হয় বিভিন্ন বয়সী ছেলে-যুবকের আড্ডা, চায়ের কাপে ঝড়, হৈ-হুল্লোড়, হট্টগোল। তবে ইদানীং প্রতি সন্ধ্যায় এসবের সাথে যুক্ত হয়েছে আরেকটি বিষয় – বাজিখেলা।
ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের সরকারপাড়া, হাজীপাড়া, শান্তিনগর, গোয়ালপাড়া, ফকিরপাড়া, আশ্রমপাড়া, খানকা, হলপাড়া, কলেজপাড়ায় নিয়মিতভাবে পুরো আইপিএলজুড়ে নির্বিঘ্নে চলছে এই বাজিখেলা। সরেজমিনে এসব এলাকায় গিয়ে ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ পাই।
মূলত এই বাজির ধরণটি হয় মূলত ওভার, ইনিংস বা ম্যাচভিত্তিক। প্রায় সব বয়সী ছেলে-যুবকেরা এই বাজিখেলায় অংশ নিচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পরিচিত ভাই বাজির ধরণ সম্পর্কীয় এসব তথ্য দেন।
তবে অন্যান্যবারের থেকে এবার অভিনব আরেকটি ইভেন্ট যুক্ত হয়েছে – সাকিব, মুস্তাফিজ ম্যাচে খেলবে কিনা এ নিয়েও চলছে বাজি। তাছাড়া অন্যান্য দলগুলোর তুলনায় সাকিবের দল কলকাতা ও মুস্তাফিজের দল হায়দ্রাবাদের ম্যাচগুলোতে বাজিখেলা হচ্ছে পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি।
ম্যাচ শেষে বাজিতে জেতা একজনকে আড়ালে নিয়ে যাই, কথা হয় তার সাথে। সাংবাদিক আর ক্যামেরা দেখে ভীত হয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানালেও তাকে অভয় দেওয়া হলে পরে সে কথা বলতে রাজি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সে জানায়, বর্তমান সময়ে খেলাধুলা মানেই বাজি ধরাধরি। বিপিএল, আইপিএল, ফুটবলসহ প্রায় সব ধরণের খেলায় সে বিভিন্নজনের সাথে বাজি ধরে। কখনও টাকা আসে, কখনওবা টাকা যায়। এতে করে সে একটা অন্যরকম আনন্দ পায় বলে জানায়।
মনের খোরাক পূরণের জন্য হোক আর যাই হোক, যুবসমাজের জন্য এটি কোনক্রমেই ভালো লক্ষণ নয়, যুবসমাজের অধঃপতনের একটি প্রক্রিয়া মাত্র।
অভিভাবকসমাজ থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের প্রতিটি ব্যক্তিকে এই বিষয়ে সুনজর দেওয়ার দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।
শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের বেলাতেই নয়, দেশজুড়ে নজরদারি বাড়িয়ে যুবসমাজকে এসব আধুনিক জুয়ার হাত থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি।