জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পুরো মুখ ঢাকা বোরখা আংশিকভাবে নিষিদ্ধ করে বিল অনুমোদিত হয়েছে। এই বিল এখন উচ্চকক্ষের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এই বিলে বলা হয়েছে, সরকারী চাকরিজীবী, বিচারক ও সেনারা কর্মক্ষেত্রে বোরখা পরিধান করতে পারবেন না। তবে ডানপন্থী দলগুলো পাবলিক প্লেসে বোরখা পরিধান সম্পূর্ণ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মাসে জার্মানিতে ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক মুসলিম। দেশটিতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বার্লিনের বড়দিনের মার্কেটে ট্রাক হামলা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। ওই হামলায় ১২ জন নিহত হন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মহিলাদের পুরো শরীর ও মাথা আবৃত রাখা বোরখা জার্মানিতে অত বেশি মানুষ পরেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দ্য মেইজিয়ের বলেন, বোরখা নিষিদ্ধের এই পদক্ষেপ থেকে দেখা যায়, অন্য সংস্কৃতির প্রতি জার্মানির সহিষ্ণুতা দেখানোর সীমা কতটুকু।
ডানপন্থী দলগুলো অবশ্য চায়, এক্ষেত্রে ফ্রান্সকে অনুকরণ করুক জার্মানি। ফ্রান্সে ২০১১ সাল থেকে প্রকাশ্য স্থানে বোরখা পরিধান নিষিদ্ধ। গত বছরের ডিসেম্বরে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল পুরো মুখ ঢাকা বোরখা নিষিদ্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই পোশাক তার দেশের জন্য যথার্থ নয়। ফেব্রুয়ারিতে দেশটির বাভারিয়া রাজ্য কর্তৃপক্ষ সরকারী কর্মক্ষেত্র, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও গাড়িচালনার সময় পুরো মুখ ঢাকা বোরখা নিষিদ্ধের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। তবে সমালোচকরা তখন বলেছেন, বাভারিয়া অঙ্গরাজ্যে মুসলিমের সংখ্যা খুবই কম। ফলে এই নিষেধাজ্ঞার বাস্তবিক প্রভাব হবে সামান্যই।
বিবিসির খবরে বলা হয়, জার্মানি অবশ্য পুরো মুখ ঢাকা বোরখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেনি। কারণ, এতে করে দেশটির সংবিধান লঙ্ঘণ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন আইনপ্রণেতারা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বোরখা নিষিদ্ধের হিড়িক পড়েছে। ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম এমনকি তুরস্কে কিছু মাত্রায় পাবলিক স্পেসে বোরখা পরিধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বোরখা নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে নেদারল্যান্ডে। ডেনমার্ক, রাশিয়া, স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে স্থানীয়ভাবে বলবৎ রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা