এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অপ্রতুল পানি সরবরাহেও নাকাল হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষ।
গোপালগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজার রোডের বাসিন্দা অভিজিৎ পাল, বলেন, কোনো দিন সামান্য পানি পাই। আবার কোনো দিন পানি পাই না। পানির কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তা পান করা যাচ্ছে না।
মিয়াপাড়ার এলাকার কামাল হোসেন বলেন, সরবরাহকৃত পানি প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। এ পানি পানের অযোগ্য। এ দিয়ে গোসল, কাপড়, থালা-বাটি ধোয়া যায় মাত্র। পানি কিনে খেতে মাসে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়া লবণাক্ত পানি সরবরাহ করায় অনেকে পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার পানি সরবরাহের বর্তমান পরিস্থিতি উঠে আসে গোপালগঞ্জ পৌরসভার পানি সরবরাহ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক জাকারিয়া আলমের কথায়। তিনি জানান, এ শহরে দিনে এক লাখ গ্যালন পানির চাহিদা রয়েছে। আর সরবরাহ করা হচ্ছে ৪০ হাজার গ্যালন। পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ১২টি ৮০ হর্স ও ৬০ হর্স পাওয়ার পানি সরবরাহ সাব-মারসেবল মোটরের মধ্যে ৮টি বিকল। যে চারটি মেশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে সে গুলো যে কোনো সময় বিকল হয়ে যেতে পারে। শোধনাগারে ঠিক ভাবে পানি শোধন হচ্ছে না বলে পৌরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ২০০২ সালে ৮ কোটি টাকা ব্যায়ে পৌরবাসীকে সুপেয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য মধুমতি নদীর সাথে সংযোগ করে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালু করা হয়। ওই সময় ৫ হাজার গ্রাহকের পানি সরবরাহের চিন্তা করে প্লান্ট স্থাপন হয়। সে সময় গ্রাহক ছিল মাত্র ২ হাজার ৩শ’। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন বাড়ি ঘর নির্মাণ হচ্ছে। পৌর এলাকায় মানুষের বসবাস কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ফলে পানির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পৌর এলাকার পানি সংকটের কথা স্বীকার করে গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু বলেন, পানি সরবরাহ প্লান্ট চালুর পর থেকে প্লান্টটি রক্ষণা বেক্ষণ করা হয়নি। এ কারণে প্লান্টের সব কিছুই প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়েই অর্ধেক শোধন করা পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এই প্লান্টটি চালু রাখতে প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানালেন তিনি।