নজরুল ইসলাম তোফা : কিছু কিছু মানুষ কখনও হারিয়ে যান না। তাঁদেরকে হারিয়ে যেতে দেয়া হয় না। কালের স্রোত শুধুই নশ্বর দেহটাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, রয়ে যায় বিশাল কর্মময় জীবন বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয়ে। যুগে যুগে এমন অনেক মানুষ পৃথিবীর আলোয় এসেছেন, আবার কর্ম করে চলেও গেছেন। রেখে গেছেন কিছু স্মৃতি আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা, হয়ে আছেন অমর। তাঁদের জীবন সম্পর্কে জেনে অনেক কিছুই শিখি, জীবনে চলার পথের পাথেয় সংগ্রহ করি, সংগ্রামের দীক্ষা নেই। এমনি একজন কর্মময় সংগ্রামী ব্যক্তি অফুরন্ত প্রাণ শক্তির আধার, তরুণ প্রজন্মের কাছে, সদাসর্বদা হাঁসোজ্জ্বল, কখনও ভালোবাসার কোমলতায়, কখনও প্রতিবাদে, কখনও গ্রহণে, কখনও প্রত্যাখানে, কখনও প্রতিরোধে, কখনও সমর্পণে, এমন বহুমুখী নান্দনিক গুনের ব্যক্তি, বিচিত্র বর্ণময় অস্তিত্বের সংলাপ, কাহিনী তাঁর নাটকে প্রয়োগ, সত্যিই খোঁজে পাওয়া অনেক কষ্ট সাধ্য হবে। নাটক নির্মাণের পরিসরে যা ব্যঞ্জনায় প্রকাশ করা যায় তা মিডিয়া নাটকের কাঠামোতে বিভিন্ন চরিত্রায়ণের মাধ্যমে মানসিক, সামাজিক, নান্দনিক এবং আদর্শগত দ্বন্দ্বের কোনো অনৈতিক প্রশ্ন তোলা আদৌ সম্ভব নয়। এমন বিশ্বাস থেকেই জীবন যুদ্ধে লড়াকু এবং পরিশ্রমী যুবক গুটি গুটি পায়ে অনেক অমশ্রিন পথ পাড়ি দিয়েছেন ও দিচ্ছেন। একটা বিক্ষুব্ধ, বিদীর্ণ সময়ের অভিজ্ঞতা বহন করার পরও বর্তমানে থমকে থাকার মানুষ নন তিনি। অস্হির সময় কেবলই তাঁর বিবেক বুদ্ধির কোষে একান্তে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে। তার মীমাংসা হবে কিভাবে? সুতরাং তিনি নিজস্ব কর্মেই তার উত্তর দিচ্ছেন। আজও লিপ্ত আছেন, থাকবেন, তার রচনা ও পরিচালনা অসংখ্য নাটকের ভান্ডার নিয়ে হাজির হয়েছেন, হবেন। যা বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে, হবে। এমন সু-মহান জনপ্রিয় ব্যক্তি, তাঁর নিজস্ব চ্যানেল তৈরির আশা নুরূপ পরিকল্পনা, আর পরিকল্পনা শুধুই যে ক্ষণিকের হচ্ছে তা কিন্তু নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই সময় উপযোগী বলা যায়। বাস্তবায়নের সব প্রস্তুতি একেবারে শেষ প্রান্তে। চ্যানেলটিতে অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে খুব শীঘ্রই। চ্যানেলটির নাম দিয়েছেন love tv.
তরুণ প্রজন্মকে জায়গা দাও, তাদের পাশে দাঁড়াও, বাঁচাও তাদের সুপ্ত মনের উচ্চাকাঙ্খা, আগামীর ভবিষ্যত তারাই, এমন দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেই চ্যানেলের হাত দিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা তাঁর সাথে একত্রে মিডিয়া সংশ্লিষ্ট কাজে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। শ্রেণী বৈষম্য ও জাতিভেদকে তিনি চরম ঘৃণা করেন। প্রাসঙ্গিক কথা হলো বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল রেখে যুগোপযোগী চ্যানেল হবে তাঁর। এদেশের সংস্কৃতিকে পাশ্চাত্যের সর্বগ্রাসী ছোবলে কলুষিত বা বিপর্যস্ত যেন না করতে পারে, এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেই অদম্য সাহস আর চ্যালেঞ্জের ঝাণ্ডা উড়িয়ে যাচ্ছেন। নৃত্য, নাটক, মিউজিক, সংগীত, শিল্প সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত মানুষ জন সাধারণের চেয়ে একটু আলাদা হয়। তাদের অনুসারী, গুণমুগ্ধ ভক্ত শ্রোতা থাকে, তাই এসব মানুষের আচার আচরণ, জীবন যাপন, কথা বলা, শব্দ চয়ন সবই অত্যন্ত মার্জিত রুচিশীল হওয়া অবশ্য কর্তব্য বলেই মনে করি। ঠিক তেমনি চরিত্রের একজন ব্যক্তি সত্যজিৎ রায়কে গুরু মেনে নিয়ে মিডিয়া জগতে আনাগোনা এবং লেখক নজরুল ইসলাম তোফা তাঁর জলজ্যান্ত উদাহরণ।
বর্তমানে মিডিয়ায় যা হচ্ছে তা, খিস্তি খেউড়, গালাগাল, কটু বাক্য, অশ্লীল শব্দচয়ন এবং অপসংস্কৃতি মতো নানান অপকর্মে অধিকাংশ মিডিয়া ব্যক্তি বা পরিচালক জাহির করছেন। সেদিক থেকে love tv চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাতা মিডিয়া জগতের নাট্যকার ও পরিচালক অনেক ভালো মনের আদর্শ মানুষ। কথা সাহিত্যিক পদবীতে আজকে উদীয়মান পরিচালক শিমুল সরকারকে দাঁড় করালে কোন অংশে ভুল হবে না। দেখা গেছে তাঁর নাটক চ্যানেলে প্রচার হওয়ার বেশ আগেই নাটক সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। নিজস্ব স্টাইল বজায় রেখে রচনা ও নির্মাণে আত্মবিশ্বাসের সহিত দক্ষতা দেখিয়েছেন। তাঁর কর্মের সফলতার বিভিন্ন অর্জন কতটুকু বা ভবিষ্যতে কি করবেন তার আদ্যোপান্ত।
তিনি জানালেন, চলমান কাজের প্রতিফলন হবে হাস্য রসের এক চরম রসিকতার ভান্ডার ১০০০ পর্বের দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক ‘গোপাল ভাঁড় vs চ্যাপলিন’। এই নাটকটি আগষ্ট মাসে দু’টি চ্যানেলে প্রচার হবে। আরও বলেন, বাংলার চিরায়ত বিখ্যাত চরিত্র গোপাল ভাঁড় ও বিশ্ব বিখ্যাত চরিত্র চার্লি চ্যাপলিনকে এক সুতোয় গাঁথতে চেয়েছেন শিমুল সরকার। টেলিভিশন নাটকের বর্তমান ধারাকে বদলে দিতে এক ঘন্টা ব্যাপ্তির এই ধারাবাহিকে প্রতি পর্বেই থাকবে আলাদা আলাদা ঘটনা। বিখ্যাত দু’টি চরিত্রকে ঘিরে পুরো ঘটনাই জমে উঠবে, সে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, মধ্যযুগে নদীয়া অঞ্চলের প্রখ্যাত রম্য গল্পকার গোপাল ভাঁড়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় গোপাল ভাঁড় ছিল সভাসদদের মধ্যকার নবরত্নদের একজন। শত শত বছর ধরে তার জীবন-রস সমৃদ্ধ গল্পগুলো মুখে মুখে ফিরছে। অপর দিকে, চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চার্লি চ্যাপলিন গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে। নির্বাক যুগে চার্লি চ্যাপলিনের অসাধারণ অভিনয়, ব্যক্তিত্ব, শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ, প্রতিবাদ এ সবকিছু মিলিয়ে তার অভিনয়, নির্মাণ শৈলী এবং বক্তব্য এখনও বিস্ময় আর গবেষণার বিষয়। পরিচালক শিমুল সরকার এই দু’টি চরিত্রকে একত্রিত করে আধুনিক প্যাটার্নে দাঁড় করিয়েছেন। শুধু একস্থানে নয়, একপাড়ায়, একবাড়িতে। পরিচালকের বক্তব্যকে আর একটু খোলাসা করে বলি, এই দু’টি চরিত্র দিয়ে ফিউশনের মতো দাঁড় করিয়েছেন এবং ক্রিয়েটিভ সৃষ্টি দু’টি চরিত্রকে প্রধান রেখেছেন, অজস্র ঘটনা থাকবে, গল্পও থাকবে চমৎকার। প্রয়োজনের তাগিদে আরও কিছু চরিত্র আশপাশে দাঁড় করিয়েছেন। গল্প থাকবে প্রতিটি পর্বে আলাদা । কমেডি ক্লাইমেকসের সৃষ্টিশীল নাটক, খানিকটা ধারাবাহিক নাটকের আদলের মতোই বলা যেতে পারে। পরিকল্পনাকারি এমন ধারার নাট্যপরিচালক শিমুল সরকার বলেন, নাটকের পান্ডুলিপি মিরাক্কেল খ্যাত সৌরভ পালোধী লিখেছেন। তিনি আরও জানান, এ দেশের তারকা নামধারী প্রতিষ্ঠিত, পরিচিত কোনো স্ক্রিপ্ট রাইটার বা আভিনেতাদের দ্বারা করিয়ে নিতে পারতেন কাজটি। কিন্তু তা না করে নাটকের ঘটনার জন্য সৌরভ পালোধীকে রাইটার হিসেবে এবং অভিনয়ে ভিকি নন্দী আর তন্ময় সাহাকে নির্বাচন করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। আবার অভিনয়ের জন্য গোপাল ভাঁড় ও চার্লি চ্যাপলিন চরিত্রে হয়তো অন্য কাউকে যুক্তি যুক্ত হতো না বলে মনে করেন। চরিত্রে শারীরিক কাঠামো এবং কমেডি জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল। তার নির্মাণ অভিজ্ঞতায় এমন দু’টি চরিত্র যুক্তি যুক্ত হয়েছে বৈকি। বাংলাদেশ, ভারতের আনাচে কানাচে খোঁজাখোঁজির পর ভারতের ভিকি নন্দী এবং বাংলাদেশের তন্ময় সাহাকে পেয়েছেন। তিনি তাদের অভিনয়ে রীতিমত মুগ্ধ। তাছাড়া শিমুল সরকার, সুপ্ত মনের উচ্চাকাঙ্খা নিয়ে গ্রাম বাংলার প্রচলিত ধারায় যাত্রা শিল্পের সত্য ঘটনা অন্য আর একটি নাটকে তুলে ধরেছেন। সেটি চমৎকার একটি নাটক যা, ১০০০ পর্বের ধারাবাহিক নাটক ‘একি কাণ্ড’। আবার অন্য দিকে, হুমায়ুন আহমেদের হিমু চরিত্র নিয়ে ‘হিমু ফ্যান ক্লাব’ তৈরি সহ প্রধান দ্বায়িত্বে থেকে হিমু চরিত্রের গবেষণা, নাটক, সিনেমা তৈরির লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মের কাছে দ্বায়বদ্ধতা নিয়ে আগামী দিনে জন্য কাজ করছেন।
শিমুল সরকার শৈশবে নাটক অঙ্গনের অভিজ্ঞতায় নাট্যদুয়ার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য হন। ১৯৯৬ সালে সমকাল নাট্যচক্রে কাজ শুরু করে তারপর নাট্যদুয়ার সংগঠনে আজ অদ্যাবধি মঞ্চ নাটক পরিচালনা করছেন। তিনি প্রধান পরিচালক ও সংগঠক হিসেবে ২০০৩ সালে নাট্যদুয়ার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং দেশব্যাপি এই সংগঠনের ১০ টি শাখা সংগঠন তৈরিতে স্বয়ং তাঁর ভূমিকা রয়েছে। তাঁর প্রথম টিভি নাটক রচনা ও পরিচালনার কাজ ছিলো ‘সায়াহ্ণে সূর্যোদ্বয়’। এটি ছিল একক নাটক ২০০৭ সালে এদেশের খ্যাতিমান টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগরের পছন্দে ২০০৭ সালেই ৯ জুন চ্যানেল আইয়ের পর্দায় সন্ধ্যা ৭-৫০ মিনিটে প্রচারিত হয়। এ ভাবেই ছিলো তাঁর মিডিয়া জগতে পথ চলার শুরু।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন সহ গোটা জীবনের ২০ টি বছর থিয়েটার করে প্রায় ৪০ টি নাটকের ৫০০ এর ও বেশী শোতে অভিনয় করার পরও আক্ষেপ নিয়ে জানান, তিনি অভিনেতা হবেন না এবং সে সিদ্ধান্তে অটল থেকে নির্মাতা হয়ে এবং লেখালেখির জগতে বাকি জীবন অতিবাহিত করবেন। আবারও তিনি বলেন, আসলে অভিনেতা হওয়াটাই উচিত ছিল। কারণ, এদেশের জনপ্রিয় অভিনেতাদের প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ টাকা সম্মানী দিতে হয়। আবার তাদের ভাড়ামুতে গা জ্বলে, এমন ভাবেই হাঁসির ছলে ছুড়ে দিলেন মিডিয়া জগতের হাল হকিকত।
তিনি বলেন, নাটক নির্মাণে ট্রেনিং ওয়ার্কশপের খুব দরকার হয়। তিনি নিজেও চিত্রগ্রহন, সম্পাদনা, প্রযোজনা, প্রমাণ্যচিত্র নির্মাণ কৌশল, কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিপ্লোমা ছাড়াও থিয়েটার কেন্দ্রিক বহু ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করেছেন। লেখালেখি, সাংবাদিকতা ও সম্পাদনায় যেমন: সাপ্তাহিক বিচিত্রা, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক মুক্তকণ্ঠ ও অনলাইন পোর্টাল মিডিয়া ভাইব্রেশনে কাজ করেছেন। তরুণ প্রজন্মের প্রতিভাবান তারুণ্যের প্রতিক, স্বল্প ভাষী, চ্যানেল ও নাট্য পরিচালক শিমুল সরকার অল্প বয়সেই জয় করেছে অসংখ্য শ্রোতা ও দর্শকের হৃদয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র জীবনে অনেক মঞ্চ নাটক ও সংগঠক হয়ে সৃষ্টি করেছেন নাট্যদুয়ার সংগঠন। মঞ্চ নাটকে প্রায় ১০ টি নির্দেশনার কাজের দ্বায়িত্ব ভাব হাতে পেলে, বিমূর্ত ধারার প্যাটার্নে বা করিওগ্রাফির সমন্বয়ে সর্বপ্রথম ইমপ্রোভাইজ কাজে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। বাংলায় এম এ পাশকৃত এই মেধাবী ছাত্র রাজশাহী বিশ্বাবদ্যালয়ের সেরা বিতার্কিক, সেরা বক্তা, সেরা অভিনেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক হল বিতর্ক দলের দলনেতা হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বকারী ২০০৫ সালে বরেন্য নাট্যজন ম হামিদ ও বাংলাদেশের পুরোধা চিত্রগ্রাহক সমীর কুশারীর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে বিটিভিতে অতিথি চিত্রগ্রাহকের পদমর্যাদায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন। অনেক পরিচয় তাঁর কিন্তু সবকিছু পরিচয় ছাপিয়ে একটি পরিচয় নক্ষত্রের মতো সমুজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয়। তিনি মিডিয়া জগতের হাতে গনা অন্যতম সেরা পরিচালকের তালিকার মধ্যে একজন খ্যাতিমান নাট্য পরিচালক হয়েই অনন্দ উপভোগ করেন।
রাজনৈতিক নির্বাচন ২০০৯ সালে গোটা রাজশাহী তথা রাজশাহীর ৬ আসনের বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলমের এলাকায় জঙ্গি মৌলবাদ বিরোধী নাটক, গান, গম্ভীরা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি রাজনীতি করি না। কিন্তু সম্প্রতি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এদেশের মানুষকে গ্রাস করছে। প্রতিনিয়ত এমন ভাবনা আমাকে ভাবায়, এই সংকট কেবলই রাজনৈতিক অঙ্গনে শুধু যে তা নয়, এমন আক্রান্ত পরিবেশ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মাঝে বিরাজ করছে বলে মনে করেন। আবার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার চেয়ে বেশি জরুরি নৈতিক শিক্ষার। মানবিক গুণাবলীর উন্মেষ ঘটাতে হবে কিশোরদের মধ্যে। সংস্কৃতির শক্তি দিয়েই অন্ধকারের শক্তিকে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা যে যে মাধ্যমেই শিল্পচর্চা করি, সে মাধ্যমেই উদার মানসিকতার বাণী প্রচার করতে হবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যদি বাংলার অকুতোভয় দামাল ছেলের দল জয়ী হতে পারে, তাহলে সংস্কৃতির প্রতিটি মাধ্যম দ্বারা নতুন যুদ্ধে অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই জয়ী হতে পারব।তিনি দেশকে আবার অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনায় উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে love TV চ্যানেল খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, বই প্রেমী, সাদা মনের এক আদর্শবাদী চরিত্রের মানুষ পলান সরকারকে নিয়ে সর্ব প্রথম একমাত্র টিভি নাটক “সায়াহ্নে সুর্যোদয়” নির্মান করেছিলেন। ২০০৭ সালের ৯ জুন চ্যানেল আই এ রাত ৭:৫০ মিনিটে প্রচারিত হয়। তারপর তাঁকে নিয়ে লেখালেখি হয় ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় এবং জনপ্রিয় ‘ইত্যাদি’র মতো অনুষ্ঠানে পলান সরকারকে উপস্থাপনের মূল হোতা ছিলেন “সায়াহ্নে সুর্যোদয়” নাটকের নাট্যকার ও পরিচালক শিমুল সরকার। এরপর তিনি আর পেছনের দিকে ফিরে তাকানি। রচনা ও পরিচালনা করেছেন অসংখ্য নাটক, নিম্ন বর্ণিত হলো তাঁর কিছু নাটক ও প্রচারিত চ্যানেলের তালিকা।
একক নাটক, ‘আরজু’ আরটিভি চ্যানেল। টেলিছবি, ‘ওয়ান লাখ ইলেভেন হাজার’ আরটিভি চ্যানেল। একক নাটক ‘শাস্তি’ যা রাজাকার বিরোধী যুদ্ধাপরাধী, চ্যানেল বাংলাভিশন। প্রথম দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক, ‘ডাইরেক্টার’ ১০০ পর্বের চ্যানেল বাংলাভিশন। দীর্ঘ জনপ্রিয় ‘চোরকাব্য’ ধারাবাহিক নাটক, ১০৫ পর্বের আরটিভি চ্যানেল। ‘জবের ব্যাপার’ ধারাবাহিক নাটক, আরটিভি চ্যানেল। ‘হানিমুন ঠ্যালাগাড়ি’ ধারাবাহিক নাটক,আরটিভি চ্যানেল। ‘যাত্রাভঙ্গ’ ধারাবাহিক, আরটিভি চ্যানেল। এছাড়া তিনি শুধুই পরিচালনা করেছেন, অচ্ছুৎ (টেলিছবি, আরটিভি) আগুনের ফুল (মুক্তিযুদ্ধের একক নাটক, বাংলাভিশন) বউ চুরি (টেলিছবি, একুশে টিভি) কেস নাম্বার ৯৯ (টেলিছবি, একুশে টিভি) ঘটনা সামান্য (ধারাবাহিক, আরটিভি) সাহস সঞ্চয় বুরো (ধারাবাহিক, আরটিভি) মামার হাতের মোয়া (দীর্ঘ ধারাবাহিক, একুশে টেলিভিশন) ‘মাকে আমার পড়ে না মনে’ (ঈদের বিশেষ নাটক বিটিভি) এই নাটকে কিংবদন্তী ফেরদৌসী মজুমদার ও হাসান ইমাম কে নিয়ে নির্মিত হয়েছিল। যেটি বিটিভির সেরা নাটকের মর্যাদায় ভূষিত হয়। তাছাড়া তিনি, ‘ফোকাস ঢাকার ৪০০ বছর’ ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। আইপ্রো মোবাইল এসিউর বিল্ডার্স এর বিজ্ঞাপন নির্মাতাও ছিলেন তিনি।
তিনি এতো সাফল্য নিয়েও সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারছেন না, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে তিনি! খুঁজে ফিরেন আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হন বেহুঁশ…হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন। কত কথা জানান দিলেন, সে ভাষায় নজরুল ইসলাম তোফার পক্ষে প্রকাশ করা আদৌ স্বল্প পরিসরে সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কষ্ট থেকে একটু সুখের দিকে আসি। আমি বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারন করি। কষ্ট হয় এটা ভেবে যে কোন বরেণ্য নির্মাতা একটি নাটকও বানালেন না তাকে নিয়ে। কষ্ট থেকেই ভাবনার জন্ম। তিনি এই দেবতা সমতুল্য মানুষকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চায়। ৭১ এর ১০ মাসের কারা জীবনকে নিয়ে নির্মাণ করবেন এই চলচ্চিত্রটি। জেলখানার অন্ধকারে তাঁর সীমাহীন কষ্টের সাথে একটু কল্পনার আশ্রয় নিয়ে একটা সাদা পায়রাকে অবলম্বন করে। নিশ্চিত করতে চান, এদেশে কিছু অজাতি মানুষ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নোংরামি বা না জানার বিষয় গুলোকে টপকে হিমালয় সমান সম্মান জন্মাবে তাঁর নির্মিত হলে সেই চলচ্চিত্র দেখে। চলচ্চিত্রের নাম ‘সাদা পায়রা’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দুটি চাওয়া ১। তাঁর লিখিত অনুমতি ২। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করে কিছু গল্প শুনতে চায় বঙ্গবন্ধুর। তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সিনেমার গল্প সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত।