দিল্লিতে জওহরলাল নেহরুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাঝে মধ্যমণি হয়ে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হামিদ কারজাই, নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা, ভুটানের মহারানি আশি দোরজি ওয়াংমো ওয়াংচুক, নাইজেরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবাসানজো। কিন্তু এঁদের সবাইকে ছাপিয়ে বক্তা, দর্শক সংবাদমাধ্যমের কেন্দ্র ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন সর্বভারতীয় স্তরের যেসব নেতা-মন্ত্রী মমতাকে আক্রমণ শানাতেন সেই তাঁরাই এদিন নিজের আসন ছেড়ে উঠে এসে মমতাকে অভিনন্দন জানান। পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক সফল সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য মমতাকে অভিনন্দন জানান সংযুক্ত জনতা দলের শরদ যাদব। সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা সীতারাম ইয়েচুরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে এসে তাঁর বার্তাকে সমর্থন করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়া প্রসঙ্গে সরাসরি মুখ না খুললেও সেদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এদিন সীতারাম ইয়েচুরিকে মমতা বলেন, “কী করছেন? বিজেপিকে আটকাতে হবে।” মমতাকে সমর্থন করে ইয়েচুরিও বললেন, “ঠিক”। মমতা-ইয়েচুরির এই কথোপকথনেই স্পষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমন করতে এবং বিজেপিকে রুখতে নেহরুর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানেই সূচনা হতে পারে ধর্মনিরপেক্ষ জোটের। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর আমন্ত্রণে রবিবার সন্ধ্যাতেই রাজধানী পৌঁছেছেন মমতা। রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও। মমতার বক্তব্যে উঠে আসে, ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের কথা। রামকৃষ্ণের ‘যত মত তত পথ’-এর কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে আটকানোর ডাক দেন। সর্বধর্ম সম্বন্বয়ের কথা বলে আন্তর্জাতিক মহলের প্রশংসা পেলেন। নেহরুরর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে অচিরেই মমতা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের মাঝে অন্যতম হয়ে উঠলেন। সোমবার সকাল ১১টায় বিজ্ঞান ভবনে কংগ্রেস আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পৌঁছন মমতা। এদিন প্রথম সারিতে বসেছিলেন তিনি। তাঁর পাশে বসা সিপিআইয়ের ডি রাজা এবং সিপিআইএম-এর প্রকাশ কারাত, সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পরেই বিজেপিকে আটকানোর ডাক দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, নেহরুর জন্মজয়ন্তীকে সামনে রেখে কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে নিয়ে জোট বাঁধার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল।