আইপিএল খবর : যতদূর মনে হয় প্রথম কী দ্বিতীয় আইপিএল ছিল সেটা। আমার কলামে লিখেছিলাম, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যতই তরুণদের খেলা বলে মনে করা হোক না কেন, ধারণাটা পুরোপুরি ঠিক নয়। এমনকী আমি এটাও লিখেছিলাম, এমন অনেক ক্রিকেটার আছে, প্রথম শ্রেণি বা ওয়ান ডে ক্রিকেটে যাদের কেরিয়ার গ্রাফ নীচের দিকে নামছে। এদের থেকে কিন্তু আবার সেরাটা বার করে আনতে পারে টি-টোয়েন্টি।
অবশ্যই এই খেলায় প্রচুর তরুণ ক্রিকেটার আছে যারা লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে কভারে বল বাঁচাচ্ছে, বাউন্ডারিতে বল তাড়া করে যাচ্ছে। এই রকম তরুণ রক্ত দলে থাকা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু পাশাপাশি এটাও বলব, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেক পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব ক্রিকেটার এখনও দাপিয়ে খেলছে, যা আমার তত্ত্ব ঠিক বলেই প্রমাণিত করেছে।
কেকেআর অধিনায়ক অবশ্যই এক জন খুব, খুব তরুণ ৩৫ বছরের ক্রিকেটার। ও যত দিন ইচ্ছে ক্রিকেট খেলে যেতে পারে! ঘটনা হল, গৌতম গম্ভীর কিন্তু বুঝিয়ে দিচ্ছে অভিজ্ঞতার দাম কতটা। গম্ভীর যে শুধু ম্যাচটা কোন দিকে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে পারে তাই না, বোলারদের মাথায় কী চলছে, সেটাও যেন বুঝে নেয়।
দশ বছর আগেও এই খেলাটা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল। কয়েক জন বিগ হিটার থাকত দলে। আর বোলাররা ডট বল করার জন্য ইয়র্কারের ওপরই ভরসা রাখত। এখন এই সব হিটাররা কী ধরনের শট খেলতে পারে, সেটা আগে ভাগেই বুঝে নেয় বোলাররা। আর ইয়র্কার ছাড়াও ওদের হাতে প্রচুর অস্ত্র আছে ব্যাটসম্যানদের সামলানোর জন্য।
ক্রিকেটারদের দক্ষতা যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে সেই সব ক্রিকেটারদের প্রয়োজনীয়তা যারা খেলাটার চেয়ে সব সময় এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। এক ধাপই বা বলছি কেন। দুই বা তিন ধাপও এগিয়ে থাকতে পারে। ২০ ওভারের ম্যাচ মানে শরীরের ওপর কম ধকল পড়া। তাই যারা ফিজিক্যাল ফিটনেসটা ধরে রাখতে পারবে, তারা অনেক দিন পর্যন্ত খেলে যেতে পারবে।
এত সব বলেও বলব, এ বারের টুর্নামেন্টটা একটু অন্য ধরনের বাকি বছরের চেয়ে। এ বারে কম সময়ে বেশি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। ফলে শরীরের ওপর চাপটাও বেশি পড়বে। তা বয়সটা যাই হোক না কেন। এই তো পঞ্জাবের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত একটা জয় পাওয়ার পরে দম নেওয়ার সময়ই পেলাম না আমরা। শনিবারই নেমে পড়তে হচ্ছে গত বারের চ্যাম্পিয়ন সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে।
টুর্নামেন্টের একটা সময়ে আমার মনে হয় ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভাবতে হবে কোচেদের। ওদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর অঙ্ক করতে হবে। সেটা শুধু মাঠ আর পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই নয়। সেরা প্লেয়াররা কতটা ঘুমোতে পারছে, সেটাও হিসেবের মধ্যে ধরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের ভাগ্য ভাল, টিমটা খুব শক্তিশালী। তাই মনে হয় না সমস্যা হবে।
আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা হল টিমের এই ছন্দটা ধরে রাখা। আমাদের শুরুটা ভাল হয়েছে। দু’টো দারুণ জয় সবার কাছে বার্তা পৌঁছে দিয়েছে, আমরা ঠিক কী চাইছি। কিন্তু এটাও মাথায় রাখছি, আমরা সবে স্টার্টিং লাইন থেকে বেরিয়েছি। ফিনিশিং লাইন নিয়ে এখন ভাবছিই না।