আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় বাংলা নব বর্ষবরণ উৎসবের মূল আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিপথগামী তরুণদের আলোর পথে আসার আহ্বানে শুরু হয় বাংলা নতুন বছর ১৪২৪ বরণের মূল আকর্ষণ এই মঙ্গল শোভাযাত্রা।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়।
‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ প্রতিপাদ্যে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়।
ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়েরভিসিঅধ্যাপকড. আআমসআরেফিনসিদ্দিকেরনেতৃত্বেমঙ্গলশোভাযাত্রায়বিশ্ববিদ্যালয়েরশিক্ষক–শিক্ষার্থীসহহাজারোমানুষঅংশনেন।
মঙ্গলশোভাযাত্রারূপসীবাংলামোড়হয়েটিএসসিহয়েআবারচারুকলায়গিয়েশেষহয়সকাল১০টারপরে।
এবারের শোভাযাত্রার মূল প্রতিকৃতি ছিল জাতীয় মাছ ইলিশ। ইলিশ ছাড়াও বাঘ, হাতি, কচ্ছপসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি দিয়ে শোভাযাত্রা সজ্জিত করা হয়েছে।
হরেক রঙের মুখোশ, হাতি, বাঘ, ফুল, পাখির প্রতিকৃতি নিয়ে নানা বয়সী নারী–পুরুষ ও শিশুরা শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন।
ইউনেস্কো বর্ষবরণের এ শোভাযাত্রাকে বিশ্বসাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়ার পর প্রথম অনুষ্ঠিত হল মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের আয়োজন তাই যেন একটু বেশিই ছিল।
এ উপলক্ষে চারুকলা অনুষদ গত ২৮ বছরের উল্লেখযোগ্য মোটিফগুলো এবারের শোভাযাত্রায় সন্নিবেশিত করা হয়। শোভাযাত্রায় মোটিভগুলোর মধ্য দিয়ে মানুষের দ্বৈত সত্তাকে তুলে ধরা হয়েছে।
একদিকে ছিল অনেকগুলো সূর্যের মুখের কাঠামো, যার একপাশে থাকবে সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত মুখ। আর অন্যদিকে ছিল সূর্যের বিপরীতে অন্ধকার কদাকার মুখ।
মানুষের অন্তনির্হিত এই দুই রূপ কাঠামোয় তুলে ধরা হয় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি করতে চতুর্থবারের মতো মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
বাঙালির প্রাণের এ উৎসব উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইন্সটিটিউট এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠন বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও সরকারিভাবে পালন করা হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও সব উপজেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করছে স্থানীয় প্রশাসন।
নতুন বছরের প্রথম এ দিনটিতে আজ সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নত মানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে ও কারাবন্দিদের পরিবেশনায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ব্যবস্থাপনায় জাদুঘর ও প্রত্নস্থানগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে (শিশু–কিশোর, প্রতিবন্ধী ও ছাত্র–ছাত্রীদের বিনা টিকিটে)।
নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ রাজনৈতিক দলের প্রধানরা।
গতবারের মতো এবারও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘোষণা দিয়েছে– বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে বৈশাখের সব উন্মুক্ত আয়োজন।