শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

শাহরুখ বলে দিয়েছে, মাঠে নেমে তোমরা সব মজা করো

Slider খেলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

image

 

 

 

 

আইপিএল খবর :  প্রশ্ন: কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন আপনার?

ক্রিস লিন: কেকেআরে আমি কয়েক বছর হল খেলছি। কেকেআরের পুরো সংসারটা আমি দারুণ উপভোগ করি। এই দলটার একটা বড় ব্যাপার হল, সবাই খুব একাত্ম। কেকেআর ম্যানেজমেন্ট পুরো গ্রুপটাকে এক করে রাখতে পেরেছে। আর সেটা শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। যেটা সাফল্য পাওয়ার বড় একটা রেসিপি।

প্র: আপনি এ রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছেন। বিগ ব্যাশে ছিলেন। আইপিএলের প্রথম ম্যাচেও দেখা গেল। ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনার মন্ত্রটা কী?

লিন: ব্যাট করতে নামার সময় আমার একটাই লক্ষ্য থাকে। বোলারদের মাথায় চড়তে দিও না। বোলারদের শুরু থেকেই শাসন করো। এটাই আমার মন্ত্র। বিশ্বের যেখানেই খেলি না কেন, সেটা আইপিএল হতে পারে, বিগ ব্যাশ হতে পারে, সিপিএল হতে পারে— এই তত্ত্বটাই মেনে চলি। আমি শাসন করতেই মাঠে নামি।

প্র: যে রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছেন, অস্ট্রেলিয়া টিমে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের জায়গা নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন?

লিন: দেশের হয়ে খেলার কয়েকটা সুযোগ পেয়েছি। আশা করছি আরও পাব। এখন তো আমার সামনে সেটাই লক্ষ্য। অস্ট্রেলিয়া দলে নিজের জায়গা পাকা করা। আর সেটা করার সবচেয়ে ভাল উপায় হল, আইপিএলে ধারাবাহিক ভাবে রান করে যাওয়া। দেখা যাক কী হয়।

প্র: আপনাদের টিমে জাক কালিস কোচ। আগে ব্যাটিং কোচ ছিলেন, এখন চিফ কোচ। কালিসকে পেয়ে আপনি কতটা উপকৃত হয়েছেন?

লিন: জাক কালিস এত অভিজ্ঞ, এত বড় ক্রিকেটার। ক্রিকেটকে গুলে খেয়েছে। ওর অভিজ্ঞতাগুলো, ওর ক্রিকেটীয় জ্ঞান কালিস আস্তে আস্তে ছেলেদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে। তবে কালিসের থেকে আমি একটা জিনিস সবার আগে পেতে চাই।

প্র: কী সেটা?

লিন: কালিসের বরফ ঠান্ডা মাথাটা। এত ধীর-স্থির কী বলব। প্রচণ্ড উত্তেজনার ম্যাচেও কী ভাবে শান্ত থাকতে হয়, জানে। কী ভাবে টিমকে শান্ত রাখতে হয়, জানে। এখনকার টি-টোয়েন্টি জমানার জেট গতির ক্রিকেটে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যত শান্ত থাকতে পারবেন, তত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ব্যাট করার সময় তাই আমি কালিসের মতো মাথা ঠান্ডা রাখতে চাই।

আজও টিমকে বড় স্কোরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব এদের উপর।

প্র: আইপিএলে এখন পর্যন্ত আপনার সেরা মুহূর্ত কোনটা?

লিন: ব্যক্তিগত ভাবে কয়েকটা আছে। আরসিবি-র বিরুদ্ধে এবি ডিভিলিয়ার্সের সেই ক্যাচটা, ব্যাট হাতে টিমকে জেতানো। কিন্তু সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত যদি বলেন, তা হলে বলব, কেকেআরের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা। সেই টিমে আমিও ছিলাম। খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। কিন্তু টিম তো জিতেছিল, টিম গেমে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। দেখা যাক, এ বার কী হয়।

প্র: আপনাদের টিমে এ বার আন্দ্রে রাসেলের মতো ক্রিকেটার নেই। আপনার ওপর তা হলে তো বেশি দায়িত্ব থাকবে টিমকে বড় স্কোরে পৌঁছে দেওয়ার।

লিন: রাসেলের না থাকাটা অবশ্যই বড় ধাক্কা। ওর মতো পাওয়ার-হিটার খুব বেশি নেই। তবে আমাদের টিমেও শুরু থেকে বেশ কয়েক জন পাওয়ার-হিটার আছে। যারা বড় স্কোর তুলে দিতে পারে। নিলামেও টিম ম্যানেজমেন্ট ভারসাম্য রাখার দিকটা দেখে প্লেয়ার নিয়েছে। মনে হচ্ছে সামলে দেওয়া যাবে।

প্র: ইডেনের পিচ এ বার নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। কী রকম বুঝছেন উইকেট?

লিন: হ্যাঁ, ইডেনের উইকেট খুঁড়ে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। আমরা কয়েকটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছি ওখানে। খুব ভাল ব্যাটিং উইকেট। আমার দারুণ লেগেছে ব্যাট করে। তবে বলটা জায়গায় ফেললে বোলাররাও সাফল্য পাবে।

প্র: ইডেনের দর্শকরা কেমন ক্রিকেট আশা করতে পারে ক্রিস লিন এবং কেকেআরের কাছ থেকে?

লিন: ইডেনের উইকেট খুব ভাল। টি-টোয়েন্টির উপযোগী উইকেট হয়েছে। আমার মনে হয় দর্শকরা দারুণ উপভোগ করতে পারবেন ম্যাচগুলো। আশা করছি, ইডেনের দর্শকদের খুব ভাল বিনোদন দিতে পারব। ম্যাচগুলো হাইস্কোরিং হবে বলেই মনে হচ্ছে।

প্র: আপনি তো বোলারদের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। কিন্তু কোন বোলার আপনার দুঃস্বপ্ন?

লিন: এক জনের নামই মাথায় আসছে, কিন্তু সে আর আইপিএলে খেলে না।

প্র: কে?

লিন: মুথাইয়া মুরলীধরন। আমার তো মনে হয় বিশ্বের ৯০ শতাংশ ব্যাসম্যান একই কথা বলবে। মুরলীর বল দেখে বোঝা খুব কঠিন ছিল, কোনটা কী হবে। দুসরা হবে না অফব্রেক। এমনি এমনি তো আর টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়ার রেকর্ড করে বসে নেই। একেবারে আনঅর্থডক্স বোলার। ক্রিকেট ম্যানুয়ালে পাওয়া যাবে না। তা ছাড়া খুব চতুর ছিল। ঠিক বুঝে নিত ব্যাটসম্যানের দুর্বলতাগুলো কী কী। আর সেই মতো বল করত।

প্র: শাহরুখ খানের মতো মেগাস্টার মালিক থাকায় কি আপনারা বাড়তি উদ্দীপিত হন?

লিন: শাহরুখ খান শুধু ভারতে কেন, বিশ্ব জুড়েই বিশাল নাম। আমরা জানি, ওর লক্ষ-লক্ষ ভক্ত। আমরা ওর জন্য খেলতে চাই, জিততে চাই।

প্র: কিন্তু মালিকের সিটে এ রকম একজন মহাকারকা থাকাটা কি বাড়তি চাপের নয়?

লিন: শাহরুখের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একদম উল্টো। ওর সবচেয়ে বড় গুণ হল, কখনও জেতার জন্য চাপ দেয় না। শাহরুখ চায়, আমরা মাঠে নেমে যেন মজা করি। এই মনোভাবটা কিন্তু একটা দলের সফল হওয়ার জন্য খুব প্রয়োজন। ক্রিকেটারদের ওপর যদি চাপ না থাকে, ক্রিকেটাররা যদি মাঠে নেমে খোলা মনে খেলাটা উপভোগ করতে পারে, তা হলে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে।

প্র: আপনাদের টিম মন্ত্রটা কী?

লিন: একে অন্যের জন্য খেলো। অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের জন্য খেলো। টিম মালিকের জন্য খেলো। আমাদের ভক্তদের জন্য খেলো।

প্র: শেষ প্রশ্ন। মাঠে তো বোলাররা আপনার বড় খাদ্য। মাঠের বাইরে কী পছন্দ করেন খেতে? কোনও ভারতীয় খাবার মনে ধরেছে?

লিন: বাটার চিকেন। খুব ভাল লাগে খেতে। কিন্তু একটা ব্যাপারে আমি ভীষণ সতর্ক থাকি। বাটার চিকেনে কোনও ভাবেই যেন মশলা না থাকে। খাবারে মশলা একদম যেন না থাকে। মশলা থাকবে খেলায়! সূত্র :আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *