অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) জানিয়েছে, দেশে কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের চলমান প্রবৃদ্ধিকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে গঠিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প উৎপাদন শুরু হয়েছে। নারায়গঞ্জে অবস্থিত দু’টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৭টি শিল্প ইউনিট ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়াও মোংলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিগগিরই উৎপাদন শুরু হবে বলেও তারা জানায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র আকারে শুরু উৎপাদন শুরু হলেও আগামী বছর বড় পরিসরে উৎপাদন শুরু করবে বলে আশা করছে বেজা কর্তৃপক্ষ।
অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র হিসাবমতে, উৎপাদন শুরু হওয়া এই শিল্প কারখানায় প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন ,সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে (পিপিপি) তৈরি হওয়া মোংলা অথনৈতিক অঞ্চলের ভূমি উন্নয়ন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন সংযোগ এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখানেও প্লট ইজারা দেওয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি সেখানেও শিগগিরই উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে।
তিনি জানান, চলতি বছর বেসরকারি খাতের আরো ২টি প্রতিষ্ঠানকে অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের চূড়ান্ত সনদ দেওয়া হবে। এছাড়া এ বছরই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রাক-যোগ্যতা সনদ পাবে।
পবন চৌধুরী বলেন,১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৭৬টি জায়গা আমরা নির্বাচন করেছি।বাকীগুলোও পর্যায়ক্রমে নির্বাচন করা হবে। তবে নির্বাচিত সব জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে এমন নয়,কারণ যাচাই-বাছাইয়ের পর উপযুক্ত মনে হলেই কেবলমাত্র সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হবে।
তিনি মনে করেন,পর্যাপ্ত ভূমি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের একমাত্র শর্ত নয়,এর জন্য উপযুক্ত যাতায়াত ব্যবস্থা, জ্বালানির পর্যাপ্ততা এবং উপকরণ সহজলভ্যতা থাকতে হবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও বলেন, ২০১৯ সালের মধ্যে অন্তত ৩০টি অঞ্চল পুরোপুরি প্রস্তুত করা হবে । এরপর ক্রমান্বয়ে নতুন নতুন অঞ্চল এ তালিকায় যুক্ত হবে। ২০১৯ সালের মধ্যে প্রস্তুত হওয়া ৩০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল আমাদের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে শুরু করবে।
তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোপুরি প্রস্তুত করা গেলে, এতে এক কোটিরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এতে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার। আর তাতে ৪ হাজার কোটি টাকার রফতানি আয় নতুনভাবে যুক্ত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়াও চীন, জাপান ও ভারত আলাদাভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল বাছাই করেছে। এই অঞ্চলগুলো প্রস্তুত হলে আমাদের দেশে বিদেশী বিনিয়োগে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।