প্রতিরক্ষা বিষয়ক ৪টি সহ ৩৬টি চু্ক্তি সই

Slider টপ নিউজ ফুলজান বিবির বাংলা সারাবিশ্ব

 

60845_f1
ডেস্ক রিপোর্ট; প্রতিরক্ষা বিষয়ক ৪ সমঝোতাসহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোট ২২ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে গতকাল দ্বিপক্ষীয় এসব চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়।
নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে ওই বৈঠক এবং চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীদ্বয় দু’দেশের মধ্যে বিরল-রাধিকাপুর রুটে মালামাল পরিবহনকারী রেল চলাচল, খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী বাস ও রেল চলাচল এবং ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন। পরে তারা (যৌথভাবে) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীর হিন্দি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ‘সোনালী অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে’ বলে মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদি। জবাবে সার্বিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য মতে, মোট ২২ চুক্তি-সমঝোতার মধ্যে ৬ চুক্তি আর বাকি ১৬টি এমওইউ সই হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হয়নি। অবশ্য এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের একান্ত এবং আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে (দ্বিপক্ষীয় আলোচনা) কথা হয়েছে জানিয়ে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তিটি কবে নাগাদ সই করতে পারবে ভারত? সেই ধারণা পাওয়ার চেষ্টা হয়েছে ঢাকার তরফে। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের বিদ্যমান সরকারের আমলেই এই জট খোলার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন। মোদি বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন তাঁর এবং শেখ হাসিনার সরকার তিস্তা চুক্তির বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে পারবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তিস্তা চুক্তির বিষয়টি ভারত দ্রুত সমাধান করবে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন। এদিকে রাতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে চুক্তি, সমঝোতাসহ মোট ৩৬টি ডকুমেন্ট সই হয়েছে বলে জানান।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমাদের দু’জনের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে আমরা রাজি হয়েছি। তিস্তা চুক্তি, গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ, পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার প্রত্যাশা রয়েছে আমাদের।’ নরেন্দ্র মোদি বলেন, সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র দুই দেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যকার বন্ধনকে আরও জোরালো করবে। ভারত সব সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স বা শূন্য সহনশীলতা নীতি ভারতের কাছে অনুপ্রেরণা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ (লাইন অব কনসেশনাল ক্রেডিট বা নমনীয় শর্তে ধারাবাহিক ঋণ) দেয়ার ঘোষণা দেন। এর বাইরে সই হওয়া প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত সমঝোতা মতে পাঁচ শ’ মিলিয়ন ডলার দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয় সামরিক খাতে। মোদি বলেন, এটা বাংলাদেশের চাহিদার ভিত্তিতে দেয়া হবে। এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। সেখানে তাঁকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন নরেন্দ্র মোদি। বিকেলে শেখ হাসিনা দিল্লি সেনানিবাসের মানেকশ সেন্টারে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাত সদস্যের পরিবারের হাতে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা তুলে দেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা ছাড়াও মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, পরিকাঠামো উন্নয়ন ঋণ (লাইন অব ক্রেডিট) সহ বিভিন্ন খাতে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়েছে।
মমতার উপস্থিতিতে তিস্তা প্রশ্নে মোদির আশ্বাস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত চুক্তিটির দ্রুত সম্পাদনের আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ    বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন। হায়দরাবাদ হাউজে মোদির এই ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও, যার কারণে দুই দেশের এই চুক্তি ঝুলে আছে ছয় বছর ধরে। তিস্তার জট খুলতে নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে শীর্ষ বৈঠকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত করা হয়। পরে খুলনা-কলকাতা বাস ও ট্রেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও হাসিনা-মোদির পাশে রাখা হয় মমতাকে। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরের সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও মমতার আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। এরপর মোদি ক্ষমতায় এসেও তার জট খুলতে পারেননি। শনিবার মোদি বলেন, ‘আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং অব্যাহত প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমি আপনাকে (শেখ হাসিনা) এবং বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই। ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমার ও আপনার সরকারই তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে পারবে।’ তিস্তা চুক্তি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও স্বীকার করে নেন মোদি। পশ্চিমবঙ্গ নিজেই পানি পাচ্ছে না অভিযোগ করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে আপত্তি মমতার। কোনো পক্ষের ক্ষতি না করে তিস্তার সমাধানের উপায় খুঁজতে দিল্লিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলাদের নিয়মিত আলোচনা চলছে।
২২টি চুক্তি-সমঝোতার বিস্তারিত: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে ২২ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত সেই তথ্য মতে, ১.  ‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রূপরেখা’ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। ২. ‘কৌশলগত ও ব্যবহারিক শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে’ ঢাকার মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ও ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের ওয়েলিংটনে (নিলগিরি) ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। ৩.  ‘জাতীয় নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও কৌশলগত শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে’ ঢাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও নয়া দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। ৪. ‘মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতার বিষয়ে’ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ৫. ‘আনবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতার’ বিষয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি। ৬. পরমাণু নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণে কারিগরি তথ্যবিনিময় ও সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটি (বিএইআরএ) ও ভারতের অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি বোর্ডের (এইআরবি) মধ্যে বন্দোবস্তনামা। ৭. বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিএইআরসি) ও ভারতের গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপের (জিসিএনইপি) মধ্যে চুক্তি। ৮. তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিকসের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ভারতের ইলেক্ট্রনিকস ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। ৯. সাইবার নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-জিওভি সিআইআরটি) ও ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের (সিইআরটি-ইন) মধ্যে চুক্তি। ১০. বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তজুড়ে বর্ডার হাট স্থাপনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। ১১.  বিচারিক ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। ১২. ভারতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা  তৈরির কর্মসূচির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। ১৩. নৌবিদ্যায় সহায়তার বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। ১৪. ভূবিদ্যা নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। ১৫. কোস্টাল ও প্রটোকল রুটে যাত্রী ও পর্যটন সেবায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস (এসওপি) বিনিময়। ১৬. ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে সিরাজগঞ্জ থেকে লালমনিরহাটের দইখাওয়া এবং আশুগঞ্জ থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত নাব্য চ্যানেলের উন্নয়নে সমঝোতা স্মারক। ১৭. গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। ১৮. অডিও-ভিজ্যুয়াল সহ-প্রযোজনা চুক্তি। ১৯. বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা ঋণ সহায়তা সমঝোতা স্মারক। ২০. মোটরযান যাত্রী চলাচল (খুলনা-কলকাতা রুট) নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তি। ২১. তৃতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় বাংলাদেশকে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক। এবং সর্বশেষ (২২) বাংলাদেশে ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণে অর্থায়নের চুক্তি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলের টুইট বার্তা মতে, উল্লিখিত ২২ চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে বিচার বিভাগের সহযোগিতা, সাড়ে চারশ’ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা, মহাকাশ গবেষণা এবং যাত্রীবাহী নৌ চলাচলে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রগুলো হাসিনা-মোদির অনুষ্ঠানে বিনিময় হয়।
উন্নয়ন প্রকল্পে ৪৫০ কোটি, প্রতিরক্ষা ঋণ ৫০ কোটি ডলার: প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে মোট ৫০০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার ঘোষণা করেছে ভারত। এ নিয়ে পৃথক দু’টি সমঝোতাও সই হয়েছে। প্রথমটি হয়েছে ভারতের তৃতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় আরও সাড়ে চারশ’ কোটি ডলার ঋণ দেয়া সংক্রান্ত। যা উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। দ্বিতীয়টি সামরিক কেনাকাটা সংক্রান্ত ৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা। শনিবার নয়াদিল্লিতে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এই সমঝোতাদ্বয়সহ মোট চারটি চুক্তিপত্র বিনিময় হয়। অনুষ্ঠানে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে তৃতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় আরও সাড়ে চারশ’ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়াটি উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে সামরিক কেনাকাটায় ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণাও দেন। এনিয়ে গত ছয় বছরে বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত হল বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে ৪৫০ কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে, তা বাংলাদেশের অগ্রাধিকার প্রকল্প গ্রহণ করে তাতে অর্থায়ন করা হবে। এর আগে ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে ১৪ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে ২০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়েছিল। ওই প্রকল্পগুলো এখনও বাস্তবায়নাধীন। তারও আগে ২০১০ সালে ১০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়েছিল। ওই ঋণে ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রহণ করা হয়; যার আটটি প্রকল্প এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকিগুলো চলমান।
গণহত্যা দিবসে সমর্থন, বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক শেষে ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে ভারতের সমর্থন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। পরে সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর হিন্দি সংস্করণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে নয়া দিল্লির পার্ক স্ট্রিট ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রোড’ উদ্বোধন করেন তারা। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য ঐতিহাসিক অবদানসহ বাংলাদেশের অগ্রগতি আর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন মোদি।  বলেন, ‘শেখ মুজিব ছিলেন ভারতের প্রকৃত বন্ধু। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী হিন্দিতে অনুদিত হওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।’ মোদি আশা করেন ২০২০ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত সিনেমা মুক্তি পাবে।
ট্রেন-বাস উদ্বোধন: হায়দ্রাবাদ হাউস থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা ট্রেন, খুলনা-কলকাতা-ঢাকা বাস চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় রাধিকারপুর-বিরল রেললাইনও উদ্বোধন হয়। ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানির জন্য ২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ডিজেলের একটি চালানের আনুষ্ঠানিক যাত্রাও শুরু হয় এদিন। আগের ৬০০ মেগাওয়াটের সঙ্গে আরো ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানির ঘোষণা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভবিষ্যতে আরো ৫০০ মেগাওয়াট দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। স্থানীয় পাটের বাজার সুরক্ষায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পাট ও পাটজাত পণ্যে ভারতের আরোপ করা বাড়তি শুল্ক পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেন মোদি।
কর্মব্যস্ত দিন: ওদিকে চার দিনের দিল্লি সফরের দ্বিতীয় দিন শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি টানা বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা ও গার্ড অব অনার দেয়া হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। মোদি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধি সৌধে ফুল দেয়ার পর তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হায়দ্রাবাদ হাউজে যান। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন তিনি। শীর্ষ বৈঠকের পর শেখ হাসিনা ও মোদি এক গাড়িতে চড়ে যান মানেকশ সেন্টারে, সেখানে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানো হয়। এরপর সন্ধ্যায় ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারীর সঙ্গে বৈঠক করেন হাসিনা।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন মোদি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিস্তা সমস্যার সমাধান শুধুমাত্র আমার সরকার এবং শেখ হাসিনার সরকারই করতে সক্ষম হবে এবং যত শিগগির সম্ভব তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, আমাদের অভিন্ন স্থলসীমান্ত ও নদ-নদী রয়েছে। আমাদের জনগণ সেখানে বসবাস করে এবং জীবিকার্জন করে। প্রধানমন্ত্রী মোদি তিস্তাকে ভারতের জন্য, বাংলাদেশের জন্য এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন। তবে এ বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের বিষয় বলেও উল্লেখ করে মোদি বলেন, আমি জানি, বাংলাদেশের জন্য মমতা ব্যানার্জির দরদ আছে, আমারও আছে। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণকে আশ্বস্ত করে বলছি, তিস্তা সমস্যা সমাধানে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমাদের দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমানা রয়েছে। তিনি ২০১৫ সালের জুন মাসে ঢাকা সফরের উল্লেখ করে বলেন, তার এ সফরের সময়ে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয় এবং এই চুক্তি এখন বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত: বাংলাদেশ ও ভারত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি জোরদারের পাশাপাশি অপরাধ কার্যক্রম মুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ সীমান্ত গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠককালে তারা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পরে এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পাশাপাশি অপরাধ কার্যক্রম মুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ সীমান্ত গড়ে তোলার ব্যাপারে উভয়ই অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী তিস্তার মতো অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পদ্মা-গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প এবং আন্তঃসীমান্ত নদীর অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনাসহ পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি দ্রুততার সঙ্গে এসব ইস্যুর সমাধানে আমরা ভারতের সমর্থন পাবো।’ তিনি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় চমৎকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তাদের এই বৈঠককে ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ‘পারস্পরিক উদ্বেগ ও অগ্রাধিকারের ব্যাপারে আমাদের বোঝাপড়া আরো এগিয়ে নিতে আমাদের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের সকল দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’ এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অমূল্য অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, এ জন্য ‘আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’ তিনি বলেন, তার বর্তমান দিল্লি সফরকালে ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী শহীদ সদস্যদের সম্মান জানাতে পেরে তিনি আনন্দিত। একাত্তরের গণহত্যার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় নয়াদিল্লি সমর্থন দিতে সম্মত হওয়ায় তিনি এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
মহাত্মা গান্ধীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন: দিনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ভারতের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের মহান নেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। শেখ হাসিনা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন এবং পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন প্রাঙ্গণে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবনের সংবর্ধনাস্থলে স্থানীয় সময় ৯টা ১৫ মিনিটে এসে পৌঁছলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে স্বাগত জানান। প্রেসিডেন্টের গার্ড রেজিমেন্টের একটি অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রপতি ভবনের প্রধান গেট থেকে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরকে স্কট করে নিয়ে যায়। পরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়ে হেঁটে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। গার্ড পরিদর্শন শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেখানে উপস্থিত তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরসঙ্গী মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দেন। ভারতের পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী রাম কৃপাল যাদব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হংসরাজ, বিদ্যুৎ মন্ত্রী পিযুষ গয়াল, জ্বালানি ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ সম্পর্কিত মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, ভারি শিল্প এবং পাবলিক এন্টারপ্রাইজ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং দিল্লির গভর্নর অনিল বাইজাল এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার থেকে ৪ দিনের সরকারি সফরে দিল্লি রয়েছেন। আজ আজমীর জিয়ারত এবং কাল ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তার (১০ই এপ্রিল) তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
হাসিনা-মোদিকে ‘স্টেপ ডাউনে’র অনুরোধ নিয়ে হাসির রোল: ভারতীয়  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দিল্লিতে যে অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন, সেখানে তাদের মঞ্চ থেকে নেমে যাওয?ার অনুরোধ নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে  দুই দেশের কর্মকর্তারা চারটি চুক্তির দলিল বিনিময় করবেন বলে ঘোষণা দেন উপস্থাপক। এই পর্ব শেষ হওয়ার পর দুই প্রধানমন্ত্রীকে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। উপস্থাপক ইংরেজিতে বলেন, ‘মে আই নাউ রিকোয়েস্ট দ্য টু প্রাইম মিনিস্টারস টু স্টেপ ডাউন।’ সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে হাসির রোল পড়ে যায়। কাউকে তার পদ থেকে সরে যাওয়ার অর্থেও ইংরেজিতে ‘স্টেপ ডাউন’ কথাটি ব্যবহৃত হয়। উপস্থাপকের অনুরোধে সাড়া দিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী তখন মঞ্চ থেকে নেমে এসেছেন। তবে এসময় তারা দু’জনও এই হাস্যরসে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাত নেড়ে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কিছু বলতে দেখা যায়। উপস্থাপক অবশ্য ভুল বুঝতে পেরে এরপর প্রথম সুযোগেই তা শুধরে নেয়ার চেষ্টা করেন। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের হিন্দি সংস্করণের প্রকাশনা উন্মোচনের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মে আই নাউ রিকোয়েস্ট দ্য টু প্রাইম মিনিস্টারস, হু হ্যাভ নট স্টেপ ডাউন, টু জয়েন্টলি রিলিজ দ্য হিন্দি ট্রান্সলেশন অব দ্য আন ফিনিশড মেমোয়ার্স অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি পর্যায়ে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও। বাংলাদেশের খুলনা থেকে ভারতের কলকাতা ট্রেন সার্ভিস এবং রাধিকাপুর-বিরল রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *