অনলাইন পত্রিকা দ্য ওয়্যারের সংবাদের শিরোনাম ছিল, ‘পানির অংশীদারি নিয়ে চুক্তি হয়নি, তিস্তা ইস্যুতে মোদির আশ্বাস’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে এই বলে আশ্বাস দিয়েছেন যে তিস্তা ইস্যুতে একমাত্র তাঁর সরকারই সমাধানে পৌঁছাতে পারবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তিস্তা চুক্তি যে এবার হচ্ছে না, শেখ হাসিনার সফরের আগেই ভারত ও বাংলাদেশের শীর্ষ কর্তারা এ ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত ছিলেন। এরপর গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পে ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা প্রত্যাশা করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত সেই সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছে। ভারত বলেছে, তিস্তা চুক্তির মতো গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পেও একই বাধা আছে। আর সেটি হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তিস্তা চুক্তি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ চুক্তির ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু এবারও আগের সিদ্ধান্তেই অটল আছেন মমতা। তিস্তা চুক্তি হলে শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে বাড়তি সুবিধা পাবেন বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
তিস্তা চুক্তি গ্রহণে মমতাকে মোদি আদৌ রাজি করাতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে ডিএনএ ইন্ডিয়া। ওই প্রতিবেদনে বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, গতকালের বৈঠকে থাকতে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দফায় দফায় মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে মমতা আলোচনায় হাজির থাকতে রাজি হলেও তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে সম্মতিসূচক কিছু বলেননি। বাংলাদেশকে ভারতের ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার বিষয়টিও উঠে এসেছে এ প্রতিবেদনে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত ঋণের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার দেব মুখার্জি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তাতে তিনি নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে ভারতকে আশ্বস্ত করায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। দেব মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর দুই দেশের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি বড় সুযোগ।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বিষয়টি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি, পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলেও উপেক্ষিত থেকেছে বাণিজ্য। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এখনো অনেক কম বলে মন্তব্য করেছে পত্রিকাটি।
অন্যদিকে স্ক্রল ডট ইন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ভারতে ক্রমবর্ধমান হিন্দুত্ববাদ দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এতে বলা হয়েছে, শুধু কূটনীতি নয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের আঞ্চলিক রাজনীতিও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বড় প্রভাব রাখবে।