ইন্টারনেট এসে কাজ যেমন অনেক বেশি সহজ করে দিয়েছে, ঠিক তেমনই সবচেয়ে বড় আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, সাইবার ক্রাইম। এর মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে যে অপরাধটি সব চেয়ে বেশি হয় তা হল ‘রিভেঞ্জ পর্ন’ ছড়ানো। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যার শিকার হন মহিলারা।
এই রিভেঞ্জ পর্ন কী? প্রতিশোধ নিতে ফেসবুকে পর্ন ছড়িয়ে দেওয়াকে বলে রিভেঞ্জ পর্ন। অর্থাৎ কারও কোনও অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও ফেসবুকের ওয়ালে পোস্ট করে দেওয়া। এ বার এই রিভেঞ্জ পর্ন ছড়ানো ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে কোনও অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও পোস্ট হলে তা শেয়ার বা রি-পোস্ট করতে বাধা দেবে ফেসবুক। ফোটো-ম্যাচিং সফটওয়্যারের সাহায্যে পোস্ট হওয়া ছবিগুলি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিনা তা যাচাই করা হবে। এর পর যদি ফেসবুক বোঝে যে শুধুমাত্র প্রতিহিংসার কারণে এই পোস্ট ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তবে পোস্টগুলো সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নেওয়া হবে।
ফেসবুকের অন্যান্য পরিষেবা যেমন মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম-এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে এই নিয়ম এখনই কার্যকর হচ্ছে না। তবে এ ধরনের রিভেঞ্জ পর্ন বিষয়ক পোস্ট ফেসবুক খুঁজে বের করবে না। এ ক্ষেত্রে ফেসবুকের রিপোর্ট টুলটি তার মূল্যায়ণ করবে। ফেসবুকের প্রতিটি পোস্টেই অপশন হিসেবে একটি রিপোর্ট টুল থাকে। রিপোর্ট টুলটির মাধ্যমে যে কেউ যে কোনও পোস্ট সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন।
কোনও পোস্ট সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলে ফেসবুকের ‘কমিউনিটি অপারেশন’ দল রিপোর্টটি ঠিক কিনা তা যাচাই করে দেখবে। আর তখন যদি ধরা পড়ে যে ওই পোস্টটি প্রতিশোধ নিতে আপলোড করা হয়েছে তা হলে ফেসবুক তা তৎক্ষণাৎ সরিয়ে ফেলবে। এ ছাড়াও যাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে এ ধরনের পোস্ট বা ছবি আপলোড করা হয়েছে সেই অ্যাকাউন্টটিও ব্লক বা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এরপর ফটো-চিহ্নিতকরণ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুনরায় ওই সব ছবি বা ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিনা, তা পর্যেবক্ষণে রাখা হবে।
এর আগেও অবশ্য শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে এমন ব্যবস্থা নিয়েছিল ফেসবুক। ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান অ্যান্টিগোন ডেভিস বলেন, “এটি আমাদের প্রথম পদক্ষেপ এবং যদি আমরা ওই বিষয়বস্তুগুলোর প্রাথমিক শেয়ার করা প্রতিরোধ করতে পারি তবে আমরা প্রযুক্তিটি আরও উন্নত করার চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে হোয়াটসঅ্যাপেও আমরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করব।”