কুমিল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি পুলিশ ঘিরে রাখলেও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটে তা কোনো প্রভাব ফেলেনি। ভোটারদের মধ্যে খুব একটা আতঙ্ক নেই। ওই বাড়ির আশপাশের বাড়িগুলো থেকে ভোটাররা হেঁটে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন। তবে বাড়িরগুলোর গলিতে পুলিশ রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় বয়োজ্যেষ্ঠ ও নারী ভোটাররা বিপাকে পড়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকার কয়েকজন ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। আজ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে লোকজনকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ বাগমারা-সংলগ্ন গন্ধমতি বড় কবরস্থানের পশ্চিম পাশে দেলোয়ার হোসেনের নির্মাণাধীন তিনতলা বাড়ির নিচতলায় জঙ্গি রয়েছে সন্দেহে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে ওই বাড়ি ঘিরে রাখা হয়। জেলা পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছেন। বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষে ওই জঙ্গি বোমা ও বিস্ফোরক নিয়ে অবস্থান করছে বলে পুলিশের ধারণা। ওই বাড়ির কয়েক শ গজ পর্যন্ত পুলিশ কর্ডন করে রেখেছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ করে কাল শুক্রবার এই আস্তানায় অভিযান চালানো হবে।
পুলিশ কর্ডনের ভেতরে থাকা এক বাড়ির বাসিন্দা আফরোজা আক্তার। ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল থেকেই এ জায়গা জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ ঘিরে রেখেছে। তবে তাঁর কোনো ভয় কাজ করেনি। সকালেই ভোট দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন।
একই মন্তব্য করলেন আরেক ভোটার আবদুল কাইয়ুম। তাঁর বাড়িও পুলিশ কর্ডনের ভেতরে। তিনি নিজে ভয় না পেলেও কেউ কেউ ভয় পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রাখায় ওই গলিতে রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই অনেক নারী ও বয়স্ক ভোটার বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্ক ভোটাররা হেঁটে ভোটকেন্দ্রে যেতে চাইছেন না।
এদিকে এলাকার নারী ভোটারদের কেন্দ্র গন্ধমতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক সারিতে নারী ভোটাররা দাঁড়িয়ে। সেখানে কয়েকজন ভোটার বলেন, জঙ্গি আস্তানার বিষয়টি টেলিভিশনে দেখেছেন। তবে ভোট দিতে আসার ক্ষেত্রে তা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এস এম মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোট ২ হাজার ৬৪। বেলা ১১টা পর্যন্ত ৫০০ ভোট পড়েছে। তিনি বলেন, ‘জঙ্গির বিষয়টি নিয়ে ভোটে কোনো প্রভাব পড়তে দেখছি না।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরুষ ভোটারদের কেন্দ্র ল্যাবরেটরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম। দুটি বুথে বিএনপির কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ইউনূস মিয়া প্রথম আলোকে জানান, এ কেন্দ্রের ২ হাজার ৩৬৫ ভোটের মধ্যে ৭৫৪টি ভোট পড়েছে। জঙ্গি আস্তানার ঘটনা কোনো প্রভাব ফেলেনি।
দুটি বুথে বিএনপির এজেন্ট না পাওয়ার বিষয়ে তাঁর দাবি, কেন্দ্রের আটটি বুথের মধ্যে ছয়টিতে বিএনপি এজেন্টের নাম দিয়েছে। দুটিতে দেয়নি।