গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুঁড়েঘর

Slider ফুলজান বিবির বাংলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

17506041_1879024545677921_836656187_n

 

 

 

 

 

সোলায়মান  সাব্বির: বাংলাদেশ চির সবুজের দেশ।গ্রামবাংলা এই রুপ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কুঁড়েঘর বাংলাদেশ চির সবুজের দেশ।গ্রামবাংলা হলো রুপবৈচিত্র‍্যময় বাংলার অলংকার। বাংলার রুপবৈচিত্র‍্য গ্রামীনচিত্র ব্যাতীত তুলনা অকপ্লনীয় ছাড়া আর কিছু হবে না।আর এই গ্রামীন জনগনের বসবাস কুঁড়েঘরেই।কুঁড়েঘর হলো বাশ এবং তালপাতা কিংবা কাশফুলের ঝাড় দ্বারা তৈরী ঘর।গ্রামীন জনপদে ফসলের মাঠের হিমেল হাওয়ায় দোল খাওয়া সবুজ ধানের শীষের ওপারে উকি মেরে মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কুঁড়েঘর।

বাংলার গর্ব কৃষকেরা এই কুঁড়েঘরেই বসবাস করে।কখনো কখনো বিশাল পুকুর কিংবা ছোট নদীর কিনারায় একপাশে দন্ডায়মান এই কুঁড়েঘর। এইসকল কুঁড়েঘরে বাংলার মৎস্য শিকারিরা বসবাস করে, যাদের পরিশ্রমের বদৌলতে আমরা আখ্যায়িত হয়েছি “মাছে ভাতে বাঙালি”।গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথে পথ অতিক্রম করার সময় গ্রামীন জনপদের পাশ দিয়ে সবুজ গাছের শীতল ছায়ায় কুঁড়েঘর দৃষ্টি কাড়ে।সাধারণত এই সকল কুঁড়েঘরে সর্বস্তরের জনগন বসবাস করে।কুঁড়েঘরের শীতল ছায়ায় কুপির আবছা আলোতে ছোটছোট সোনামনিরা পড়ালেখা করে।কিশোর কিশোরীরা চাঁদের আলোয় কুঁড়েঘরের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করে আনন্দ পায়।অন্যদিকে সারাদিন হার ভাঙ্গা খাটুনির পর গ্রামীন জনগন মাথা গোজেন রাত্রিযাপনের জন্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদার পরিবারের সন্তান হয়েও জমিদারী এবং বিলাসিতা পছন্দ করতেন না।তিনি তার বিখ্যাত কবিতা ‘সোনার তরী’ লিখার সময় একাধিকবার তার কুঠিবাড়ী ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন নদীর ওপারে একটি ভাঙ্গা কুঁড়েঘরে।বিখ্যাত সাহিত্যিক জন বর্ন নিউম্যান বলেছেন,আমি রাজপ্রাসাদে না জন্মে টেমস নদীর কোন একপাশে একটি কুঁড়েঘরে জন্মালে নিজেকে ধন্য মনে করতাম।কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, সুদুর ফ্রান্সে থেকেও কপোতাক্ষ নদের পাড়ে সেই কুঁড়েঘরেই তার মন সপেছেন এবং বার বার ফিরে আসতে চেয়েছেন।আমেরিকার সাবেক বিশ্বখ্যাত প্রেসিডেন্ট ‘আব্রাহাম লিংকন ‘ হোয়াইট হাউজে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, আমি রাষ্ট্রীয় ভবনে বসবাসের পরিবর্তে আমার শৈশবকালের সেই ভাঙা বাড়িতে থাকতে পছন্দ করব।আব্রাহাম লিংকনের সেই ভাঙ্গা বাড়িটি ছিল একটি কুঁড়েঘর।

নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ বলেছিলেন, সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার জন্য অর্থ সম্পদের প্রয়োজন নেই নদীর পাড়ে একটি কুঁড়েঘরই যথেষ্ট। বিখ্যাত স্বাধীনচেতা নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছেন, আমি সারাজীবন কুঁড়েঘরে শুধুই একা থাকতে চাই এবং আমার জীবনাবসান যেন এই কুঁড়েঘরেই হয়। সারা বিশ্বে প্রায় ৯৩ ভাগ সফল এবং কামিয়াবি মানুষের জন্ম এই তালপাতার কুঁড়েঘরেই।এই সফল মানুষগুলো তাদের সফলতার অনুপ্রেরণা উৎসর্গ করেছেন কুঁড়েঘরকে।পৃথিবীতে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের বাস এবং তাদের মধ্যে এক শ্রেনী হলো ‘সৌখিন’ মানুষ।এই শ্রেনীর মানুষগুলোর বসবাস বিলাসবহুল অট্টালিকায়,অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা উপভোগ্য,সার্বক্ষণিক সুবিধাপ্রাপ্ত। এই বিলাসবহুল জীবনযাপনকারী মানুষগুলো অবসর সময় কাটানোর জন্য বেছে নেয় এই সুন্দর কুঁড়েঘরকেই।

কুঁড়েঘরের হীম শীতল অনুভুতিতে সময় অতিবাহিত করার স্বাদ সকলেরি জাগে। কুঁড়েঘর এমন এক ধরনের আশ্রয়স্থল যা সকল শ্রেনীর মানুষের পছন্দের শীর্ষে।বিশ্ব মনীষীগন তো বটেই অনেক সাধারন মানুষও এই বাশ, তালপাতার সংমিশ্রনে তৈরী সুপ্ত মাটির উপর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *