একজন ক্রিকেটার কী ভুলে যেতে চান? ভুলে যেতে চান খারাপ দিন। ভুলে যেতে চান তাঁর বাজে পারফরম্যান্স। মোস্তাফিজুর রহমান কি তাহলে ভুলে যেতে চাইবেন কালকের দিনটি? মনে রাখতে চাইবেন না ডাম্বুলায় এ দিনের পারফরম্যান্স!
মোস্তাফিজের জন্য দিনটা আসলে হতে পারে মিশ্র অনুভূতির। ১৩ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কালই সবচেয়ে বাজে বল করেছেন। আবার এই দিনে করেছেন একটি ‘রেকর্ড’ও।
মোস্তাফিজের বোলিংয়ে কাল এলোমেলো ভাব দেখা গেছে অনেকবারই। সেটার প্রতিফলন স্কোরকার্ডেও। তিন স্পেলে মোট আট ওভার বল করে ৬০ রান দিয়েছেন। ওভারপ্রতি ৭.৫০। ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম ওয়ানডেতে ১০ ওভারে ৬২ রান দিয়েছিলেন। এক ওয়ানডেতে মোস্তাফিজের সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড এখনো ওটাই। তবে আগের ১২ ওয়ানডের কোনোটিতেই তাঁর ইকোনমি রেট কালকের মতো খারাপ ছিল না। ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি রান দিয়েছেন মাত্র দুবার। তবে কখনোই সেটি সাতে পৌঁছায়নি।
শুধু এটাই নয়, ওয়ানডেতে কাল সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারিও যে হজম করতে হয়েছে মোস্তাফিজকে! সাত বাউন্ডারি আর এক ছক্কা মিলিয়ে মোট আটবার তাঁর বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ খেয়েছেন ছয়টি বাউন্ডারি। চার-ছক্কা মিলে তাঁর বল ছয়বার মাঠের বাইরে গেছে চার ম্যাচে। যার সর্বশেষটি এবারই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে।
কালকের দিনটি মোস্তাফিজ ভুলে যেতে চাইবেন এসব কারণেই। কিন্তু ভুলে কি যেতে পারবেন আসলে? এমন দিনেও যে একটা আলো এসে পড়েছে তাঁর ওপর! ক্যারিয়ারের ১২তম ওয়ানডে শেষে বাঁ হাতি এই পেসারের উইকেট ছিল ৩৩টি। সেটি যেমন ছিল ১২ ওয়ানডে খেলে কোনো বোলারের সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়ার রেকর্ড, কাল দীনেশ চান্ডিমালের উইকেটটি নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ১৩ ম্যাচেও সবচেয়ে বেশি ৩৪ উইকেট পাওয়ার রেকর্ড তাঁরই। এর আগে ১৩ ম্যাচে ৩৩ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার অজন্তা মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার মাটিতেই তাঁর কাছ থেকেই ক্রিকেট পরিসংখ্যানের ছোট্ট এই গৌরবটি কেড়ে নিলেন বাংলাদেশের মোস্তাফিজ।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে চোটের সঙ্গে লড়াই। যে সময়টাতে মোস্তাফিজের খেলার আনন্দে খেলার কথা, তখনই বল করতে হচ্ছে গুনে গুনে। ম্যাচ খেলতে হচ্ছে হিসেব করে। সেই মোস্তাফিজই শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পর থেকে কাল পর্যন্ত টেস্ট, ওয়ানডে ও প্রস্তুতি ম্যাচ মিলিয়ে বল করেছেন ১০৬.১ ওভার। একটা ম্যাচে একটু তো এলোমেলো হতেই পারেন তিনি। মোস্তাফিজও তো মানুষ!