তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও গোপন সামরিক আদালত পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ দিয়েছে পাকিস্তান। এ বিষয়ে উত্থাপন করা একটি বিল পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্টের নি¤œ কক্ষ। বুধবার তা পাঠানোর কথা রয়েছে উচ্চ কক্ষ বা সিনেটে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে পাকিস্তানে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে তালেবানরা ভয়াবহ হামলা চালায়। ওই হামলায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ১৩৪টি শিশুকে। তার বিচার করতে পাকিস্তানে প্রথম স্থাপন করা হয় সামরিক আদালত। সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচার করা হয় এতে। এর মেয়াদ ছিল দুই বছর। গত ৭ই জানুয়ারি এই মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে নতুন করে সামরিক আদালত চালুর প্রস্তাব সামনে আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ জানুয়ারিতে বলেছেন, তার সরকার সেনা আদালত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু ওই সময় পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি তার সেই উদ্যোগ। এরপর বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা চলে। তারপর মঙ্গলবার দিন শেষে ওই বিল পাস করে নি¤œ কক্ষ। পাকিস্তানে গোপন সেনা আদালত ব্যবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার নিজের আইনজীবী নিয়োগ করতে দেয়া হতো না। তাদেরকে দেয়া হতো সেনাবাহিনীর আইনজীবীর সহায়তা। বিচার প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করতে অনুমতি দেয়া হতো না কোনো মিডিয়াকে। সেনাবাহিনী রায় ঘোষণা না করা পর্যন্ত বিচারের সময়সীমা বা এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ্যে বলা হতো না। অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো আপিলের সুযোগ পেতো না। বিচারকদের আইনগত পেশার ডিগ্রি থাকার প্রয়োজন হতো না। তারা রায়ের পেছনে কোনো যুক্তিও প্রকাশ করতেন না। এখন নতুন করে যে বিল আনা হয়েছে তাতে রয়েছে কিছু সংশোধনী। এর মধ্যে অভিযুক্ত বা সন্দেহজনক ব্যক্তি তার নিজের আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে। ওদিকে আগে প্রতিষ্ঠিত আদালত দু’বছরে ১৬০ জনকে দিয়েছে মৃত্যুদ-। এর মধ্য দিয়ে অনেক ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু নতুন করে কেন এই আদালত প্রতিষ্ঠা করা হবে? এর প্রধান কারণ হিসেবে সরকার বলছে, বিচারকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারছে না সরকার। তাই সামরিক আদালত বেছে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকরা অভিযোগ করছেন, এ আদালতে স্বচ্ছতা ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় না।