শ্রীলঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে আগে থেকেই ভয় ছিল শ্রীলঙ্কানদের। লঙ্কান দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করা হাথুরু বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যেভাবে বাংলাদেশ পরিবর্তিত এক দলে পরিণত হয়েছে, যেভাবে বিভিন্ন সময় বড় বড় দলের বিপক্ষে জয় পেয়েছে, সেটি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবনায় ছিল। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগেই তাঁরা আশঙ্কা করেছিলেন, আগের প্রায় প্রতিটি সফরে ব্যর্থ হলেও এবার হাথুরুর অধীনে বাংলাদেশ পরিস্থিতি না পাল্টে দেয়। শেষ পর্যন্ত শঙ্কাই সত্যি হয়েছে। কলম্বোর ঐতিহাসিক পি সারাভানামুত্তু ওভালে টেস্টে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে শ্রীলঙ্কা।
লঙ্কান দলের এই হার নিয়ে চলছে নানামুখী ময়নাতদন্ত। বাংলাদেশের ক্রিকেট শক্তি, তাদের উন্নতি শ্রীলঙ্কান দল হালকা চালে নিয়েছিল কি না, এ নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। শ্রীলঙ্কার ইংরেজি পত্রিকা দ্য আইল্যান্ড জানিয়েছে, পি সারা ওভালে শ্রীলঙ্কার এই হার তদন্তে আজ বিশেষ বৈঠক হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সভাপতি থিলাঙ্গা সুমাথিপালা বসবেন প্রধান নির্বাচক সনাৎ জয়াসুরিয়া, কোচ গ্রাহাম ফোর্ড ও ক্রিকেট ম্যানেজার অশঙ্কা গুরুসিনহার সঙ্গে। সেখানে এই ব্যর্থতার বিভিন্ন কারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। ঠিক হবে করণীয়।
কোচ ফোর্ড অবশ্য ম্যাচ শেষের আগেই তরুণ শ্রীলঙ্কা দলটিকে আরও সময় দিতে হবে—এমন যুক্তি দিয়ে রেখেছিলেন। এটা সত্যি সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনের বিদায়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে তৈরি হয়েছে বিরাট শূন্যতা। ব্যাটিংয়ের আগেই মুরালি-ভাসদের হারিয়ে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল বোলিংয়ে। কিন্তু এই শ্রীলঙ্কাই অস্ট্রেলিয়াকে কদিন আগে ৩-০–তে ধবলধোলাই করেছে; ফলে অনভিজ্ঞতাকে একমাত্র ঢাল করতে পারছে না দল।
শ্রীলঙ্কা এই পরাজয় সহজভাবে নিতে পারেনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ কোচ হাথুরুসিংহে এখন শ্রীলঙ্কায় বেশ বীরের অবস্থানে। দ্য আইল্যান্ড বলছে, পরিকল্পনার জায়গায় শ্রীলঙ্কা যেখানে মার খেয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের জন্য হাথুরু পরিকল্পনাটা সাজিয়েছিলেন দুর্দান্ত। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে হাথুরুসিংহের তামিল ইউনিয়ন ক্লাবে (এই ক্লাবেরই মাঠ পি সারা ওভাল) খেলার কথা উল্লেখ করে আইল্যান্ড বলেছে, পি সারার উইকেট হাথুরু চেনেন তাঁর দুই হাতের তালুর মতোই।
২০১০ সালে পিএস ডি সিলভা ও নিশান্থা রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের দায়িত্বে থাকার সময় হাথুরুসিংহেকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। যেটি হাথুরু নিজে সহজভাবে নিতে পারেননি। পরে তো অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সেখানেই থিতু হয়েছেন। তাঁর পরিবার এখন অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। আইল্যান্ড বলছে, সাত বছর পর বাংলাদেশের কোচ হয়ে এসে হাথুরু সেই জবাবটা বাংলাদেশ দলকে দিয়েই দিলেন দুর্দান্তভাবে।