চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গতকাল দুটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কর্নেল হাটের সিডিএল আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে একটি ও পাশের কাট্টলীর ইশান মহাজন সড়কের আরেকটি বাড়িতে এ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। দুটি বাড়িই নগরীর আকবর শাহ থানার অধীনে। গতকাল বিকাল ৪টা থেকে বাড়ি দুটির চারপাশে ২০০ থেকে ৩০০ পুলিশ অবস্থান নেয়। পাশাপাশি সোয়াত, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলসহ পুলিশের প্রচুর সদস্য সাদা পোশাকে অবস্থান নেন।
বাড়ি দুটির ভেতর কতজন জঙ্গি সদস্য রয়েছেন, আদৌ জঙ্গি আছে কি না কিংবা কিভাবে জঙ্গিরা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি নগর পুলিশের সদস্যরা।
তারা জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়েই তারা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছেন যে বাড়ি দুটির ভেতর জঙ্গি আস্তানা রয়েছে। এসব জঙ্গিদের সঙ্গে মীরসরাই কিংবা সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যদের যোগাযোগ রয়েছে।
সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার জঙ্গি দম্পতি জসিম ও আরজিনাকে ১২ দিনের রিমান্ডে নেয়ার পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এখানে অভিযান চালাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার পশ্চিম জোনের নাজমুল হাসান বলেন, জঙ্গি আছে বলেই আমরা এখানে অভিযান চালাতে এসেছি। অভিযান শুরু হয়েছে। বাড়ির চারপাশ আমরা ঘিরে রেখেছি।
তিনি বলেন, দুটি বাড়িই ৪ তলা বিশিষ্ট। কর্নেল হাট সিডিএ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের চারতলা ভবনটি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঈশান মহাজন লেনের চারতলা বাড়িটি।
সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জঙ্গি সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়ি দুটি থেকে সবাইকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর সেখানে ঢুকে তল্লাশি শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বাড়ির ভাড়াটিয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, জঙ্গি কার্যক্রম নিয়ে সিডিএল আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কের বাড়িটি ও পাশের কাট্টলীর ইশান মহাজন সড়কের ঋশি সাহা মালিকের বাড়ির ভেতরে কখনো কিছু দেখেননি তারা। দুই বাড়ির ভাড়াটিয়ারা দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে ভাড়া থাকছেন।
আবদুল আউয়াল নামের একজন স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, বিকাল ৪টার সময় দেখলাম সিডিএল আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কের বাড়িটির সামনে ২০০ পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। কারণ জিজ্ঞেস করতেই একজন বললো জঙ্গি আস্তানার কথা। এরপর দেখি তল্লাশি করা হচ্ছে।
তবে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সীতাকুণ্ড থেকে পালিয়ে যাওয়া এক জঙ্গির মোবাইল কললিস্টের অবস্থান সেখানে নির্দেশ করায় পুলিশ সদস্যরা অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই জঙ্গির সঙ্গে সীতাকুণ্ড থেকে আটক জসিম ও আরজিনার যোগাযোগ ছিলো বলে ইতিমধ্যে তারা পুলিশকে জানিয়েছে।