ফেসবুকে যেভাবে সুখী হবেন

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয়

2036fb96216863c2a13f50bf1537fef9-FACEBOO

গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ফেসবুকে সুখী হতে গেলে নেতিবাচক মানসিকতার বন্ধুদের পোস্ট অনুসরণ বন্ধ করতে হবেফেসবুক ব্যবহার নিয়ে নানা অভিযোগ। এর সঙ্গে নাকি অনেক ব্যবহারকারীর বিষণ্ন, নিঃসঙ্গ, হতোদ্যম হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে! অনেকেই ফেসবুক ব্যবহারকে শুধু সময়ের অপচয় বলে মনে করেন। কিন্তু এর বিপরীত চিত্রও দেখা যায়। ফেসবুকের যথাযথ ব্যবহার আপনাকে সুখী করে তুলতে পারে। মনোবিদ সুজানা ফ্লোরেসের বরাত দিয়ে হাফিংটন পোস্ট ফেসবুক ব্যবহার করে সুখী হওয়ার উপায় তুলে ধরেছে।

নেতিবাচক বন্ধুদের সরিয়ে ফেলুন
নিজের যত্ন-আত্তির একটি সুপরিচিত কৌশল হচ্ছে ইতিবাচক চিন্তা করা। যাঁরা বাস্তব জীবনে ইতিবাচক হন, তাঁরা সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটেও সেই মানসিকতা থেকেই পোস্ট দেন। বন্ধুদের ইতিবাচক পোস্ট আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখবে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, ইতিবাচক মানসিকতার বন্ধুদের ফেসবুকে রাখুন আর নেতিবাচক বন্ধুদের পোস্টগুলো লুকিয়ে (হাইড করে) রাখুন। ফেসবুকের নিউজ ফিড থেকে যাতে বন্ধুদের নেতিবাচক স্ট্যাটাসগুলো দেখতে না হয়, সে জন্য তাঁদের অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকুন। নেতিবাচক মানুষদের একেবারেই বন্ধুর তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলার পরিবর্তে তাঁদের আপডেটগুলো বরং কম দেখুন।
অন্যকে খুশি করুন

কাউকে শুধু মেসেঞ্জারে শুভেচ্ছা জানানো কিংবা লুকিয়ে কোনো প্রশংসা বাক্য বলার চেয়ে প্রকাশ্যে তা করতে পারলে অন্যকে খুশি করা হয়, তেমনি নিজেরও ভালো লাগে। মনোবিদ সুজানা বলেন, ‘প্রকাশ্যে কারও সম্পর্কে ভালো বললে তার মূল্য পাওয়া যায়। কেউ কেউ হয়তো ভালো লাগার কথা প্রকাশ্যে বলতে বিরক্ত হন কিন্তু অধিকাংশের বেলায় এর উল্টোটাই ঘটে।’ ফেসবুকে যা শেয়ার করবেন তাতে যেন সুন্দর বার্তা থাকে, সেটি খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন ড. সুজানা ফ্লোরেস।

জীবনঘনিষ্ঠ বিষয় পোস্ট করুন
মনোবিদ সুজানা বলেন, ফেসবুকে ব্যক্তিগত বিষয় পোস্ট করতে লজ্জা পাওয়ার কারণ নেই। ব্যক্তিগত অর্জন ফেসবুকে শেয়ার করলে আপনার ভালো লাগবে এবং তা থেকে বন্ধুদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও জানতে পারবেন। আপনার ফেসবুক নেটওয়ার্ক অন্তরঙ্গ বন্ধুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পাশাপাশি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী অন্য বন্ধুদের সঙ্গেও শেয়ার করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন আপনার পোস্টে যেন অন্য কেউ বিরক্ত না হন। ফেসবুকে কোনো বিষয় পোস্ট করার পর কী ধরনের প্রতিক্রিয়া এসেছে, সেটা দেখার জন্য যদি বারবার ফেসবুকে ঢুকতে হয়, তবে আপনার ফেসবুক আসক্তি পেয়ে বসতে পারে। আপনি যদি অন্তত ৪৮ ঘণ্টা ফেসবুক ছাড়া কাটাতে পারেন, তবে আপনি ফেসবুক আসক্তদের মধ্যে পড়বেন না।

নিজেকে নিয়ে হাসুন
ফেসবুক নিয়ে একটি বই লিখেছেন মনোবিদ সুজানা ফ্লোরেস। এ বইটির একটি অধ্যায় হচ্ছে ‘অ্যাম আই মাই প্রোফাইল পিক?’ এই অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রোফাইলে দেওয়া ছবিটি সুন্দর হওয়া দরকার। তবে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট নিয়ে মেতে থাকার দরকার নেই। বাস্তব জীবনে বন্ধুরা আপনাকে যেভাবে দেখে অভ্যস্ত ফেসবুকেও সেভাবেই থাকা উচিত। আপনি যদি হাস্যকর কিছু করে থাকেন, ফেসবুকে তা পোস্ট দিতে পারেন। মজার ঘটনা আপনাকে হাসাবে। এই মনোবিদের মতে, ফেসবুকে সব তোষামোদ পোস্ট দেওয়ার দরকার নেই। তার পরিবর্তে সত্যিকার ও মজার পোস্ট দিন।

পছন্দের গ্রুপে যোগ দিন
আপনার ফেসবুকে যেমন নির্বাচিত বন্ধু থাকে, তেমনি এই সাইটটি থেকে পছন্দ অনুযায়ী গ্রুপে যোগ দিয়ে নতুন বন্ধু বানাতে পারেন। আপনার পছন্দসই গ্রুপ না পেলে নিজেই একটি গ্রুপ তৈরি করে নিতে পারেন। মজার এই গ্রুপের মজার পোস্টের কারণে মন ভালো হয়ে যেতে পারে।

পুরোনো অ্যালবামগুলো দেখুন
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হচ্ছে—এখানে শুধু সুখী মুহূর্তগুলোর ছবিই পোস্ট করেন তাঁরা। গবেষকেরা দাবি করেন, আপনার পুরোনো অ্যালবামগুলোর ছবি দেখলে মন ভালো হয় এবং মন ভালো করার থেরাপি হিসেবে কাজ করে তা।

দিনশেষে ফেসবুককে আপনি যেভাবে বানাবেন, ফেসবুক তাই দাঁড়াবে। আপনি যদি আপনার জীবনকে আরও উন্নত করতে চান, অন্যদের সাহায্য করতে চান, তবে ফেসবুক পরোক্ষভাবে বিনোদন ও সংযোগ স্থাপনের কাজ করে যাবে। আপনার উদ্দেশ্য সাধনের একটি মাধ্যম হিসেবেই ফেসবুক ব্যবহার করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *