ডিমলা নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলায় একটি ভিক্ষুক পরিবারের প্রতিবন্ধি কিশোরী অন্ত:সত্বা হওয়ার ঘটনায় পরিবারটি এখন চরম বিপাকে পরেছে ।
গতক ১৪ মার্চ মঙ্গলবার বিকালে সরজমিনে উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পূর্নেঝাড় গ্রামের তহমদ্দিনের পুত্র বাকপ্রতিবন্ধি ভিক্ষুক সাহেদ আলী ওরফে নন্দো পাগলার বাড়ীতে গিয়ে কথা হয় পরিবারটির সদস্যদের সাথে। নন্দো পাগলার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। বড় মেয়ে নাজমা (১৬) মানসিক প্রতিবন্ধি। বয়সের তুলনায় শারীরিক গঠন তেমন না থাকায় বর্তমানে সে কাকিনা চাপানী গ্রামের ২নং মিলন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছে।
মানসিক প্রতিবন্ধি নাজমার সরলতার সুযোগে একই গ্রামের জনৈক্য যুবকের দ্বারা ধর্ষনের শিকার হলে সে অন্ত:সত্বা হয়ে পড়ে। বাবা বাকপ্রতিবন্ধি, মা শারীরিক প্রতিবন্ধি ও মানসিক প্রতিবন্ধি কিশোরী নাজমা এ কথা কাউকেই বলেনি। কিন্তু দিনের পর দিন শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখা দিলে তার দাদী আনোয়ারা বেগম গ্রাম্য ডাক্তার অরবিন্দু রায়ের সাথে যোগাযোগ করেন। পল্লী চিকিৎসক ডাঃ অরবিন্দু রায় কিশোরী মেয়েটির শারীরিক গঠন দেখে বলেন, আমার জ্ঞানমতে মানসিক প্রতিবন্ধি নাজমা অন্তত ৪/৫ মাসের অন্ত:সত্বা। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে বিপাকে পড়ে প্রতিবন্ধি পরিবারটি। এখন কি করা যায় ? কি করা উচিত ? কোন কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না পরিবারটি।
মানসিক প্রতিবন্ধি কিশোরী মেয়েটি অন্ত:সত্বা হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। ফলে প্রতিদিনেই পরিবারটির বাড়ীতে শত শত উৎসুক জনতা ভীর করছে। এবং এ ঘটনার ঘৃনা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীরা সাংবাদিকদের জানান এর বিচার হওয়া উচিত। দোষী যেই হোক তাকে খুঁজে বের করে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে অসহায় পিতা বাকপ্রতিবন্ধি নন্দো পাগলা শুধুই কাঁদছে।
এখন আর সে ভিক্ষা করতে যায় না। খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছে নিজ বাড়ীতে। সারাদিন বাড়ীতে বসে শুধুই অঝরে কাঁদে নন্দো, বলছে এলাকাবাসী। এখন আর উৎসুক জনতাকে বাড়ীতে ঢুকতে দিচ্ছে না নন্দো। এদিকে মানসিক প্রতিবন্ধি কিশোরী নাজমার মা শুধুই হাঁসে। কাউকে কোন কথা বলছে না পরিবারটি। মানসিক বিপর্য়য়ে পড়া পরিবারটির দিন কাটছে শুধুই কান্না দিয়ে। চরম বিপাকে পড়া পরিবারটির কিশোরী মেয়েটিকে নিয়ে এখন অসহায় জীবন যাপন করেছ। এ বিষয়ে ঐ এলাকার সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মাজেদা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আমার পারিবারিক কাজে একটু বাইরে আছি। আমি বাড়ীতে ফিরে খোঁজখবর নিব।
যোগাযোগ করা হয় উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সাথে, তিনি মুঠোফোনে বলেন,ঘটনাটি আমার কানে এসেছে। কিন্তু পরিবারটি প্রতিবন্ধি হওয়ায় মেয়েটি এক সময় এক জনের কথা, আর এক সময় অন্য আর এক জনের কথা বলছে। তাই ঘটনাটি আমার লাগানো লোক দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষী ব্যক্তিকে বের করা না গেলে তো কিছুই করার নাই।
এদিকে ডিমলা ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়কারী প্রতিষ্ঠানের পিও আবু তাহের বক্সীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে শুনলাম। তবে মেয়েটির পরিবার বা যে কেউ আইনী সহায়তা চাইলে আমরা প্রস্তুত। এছাড়াও আমাদের টিমসহ আমি পরিবারটির বাড়ীতে গিয়ে খোঁজখেবর নিবো। প্রয়োজনে আইনি সহায়তাসহ সকল সুযোগ সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।
ডিমলায় তিস্তা বালুচরে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন।
ডিমলা নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় তিস্তা নদীর গর্ভ থেকে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে অন্যান্য কৃষি ফসলের মধ্যে মিস্টিকুমড়ার চাষ করে তিস্তা পারে কৃষক-কৃষানিরীর মুখে উজ্জ্বল হাসির ঝিলিক দেখা গেছে।
গত বছরের তুলনায় তিস্তা ধু-ধু বালু চরে বেশি ভাগেই দেখা মিলে কুমড়ার ক্ষেত আর ক্ষেত। ডিমলা উপজেলা তিস্তা নদীর বালু চরে কুমড়ার হলুদ ফুলে নান্দনিক শোভায় মুগ্ধ কৃষক-কৃষানি, তা দেখে থমকে দাঁড়ায় মেঠো পথ দিয়ে চলা হাজারো পথিকরা। এবারে বালু চরে বাম্পার কুমড়ার ফলন পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফোটার দৃশ্যের দেখা মিয়ে তিস্তার চরে।
সরেজমিনে উপজেলা তিস্তার চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যে বালুর চরে কোনদিন ভালোমত কোন ফসল ফলানো সম্ভব হয়নি সেই খসখসে তপ্ত বালু চরে কুমড়ার চাষে হলুদ আর সবুজে ছেয়ে গেছে।
চরের মাঝে লতাপাতা যুক্ত কুমড়া গাছে ডালে ডালে হলুদ আর বড় বড় মিস্টি কুমড়া যা বর্তমানে সকলের নজর কেরেছে। এসব চরে কৃষক-কৃষানি কোন দিন ভাবতে পারেনি ধু-ধু বালু চরে ফসল ফলানো সম্ভব হবে। তবে এবারের মৌসমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের পরামর্শে কৃষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় চলতি মৌসমে ডিমলা উপজেলায় কুমড়ায়র বাম্পার ফলন হয়েছে।
বর্তমান ডিমলা উপজেলার উৎপাদিত কুমড়া নিজ এলাকার চাহিদা পূরণ করে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের বাঘের চর এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক, কৃষানি জহুরা বেগম জানান তাদের তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরে সামান্ন খরচে কুমড়ার বীজ রোপন করে তাতে অনেক টাকার কুমড়া বিক্রি করেছে। আরও যে পরিমান কুমড়া রয়েছে তাও বেশ লাভবান হবে বলে জানান।
ডিমলায় জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
ডিমলা নীলফামারী প্রতিনিধিঃ ‘‘ঐক্যবদ্ধ হলে সবে যক্ষ্মা মুক্ত দেশ হবে’’ এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে নীলফামারী ডিমলা উপজেলা ৬নং নাউতারা ইউনিয়ন নিজ পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক এর পাশাপাশি উপজেলার ২৬ টি ক্লিনিকে ১৫ মার্চ সকাল হতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্র্যাক এর আয়োজনে ডিমলায় জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন ক্যাম্প অনুষ্টিত হয়।
উক্ত ক্যাম্পিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সি.এইচ.সি.পি পলাশ চন্দ্র রায়, ব্র্যাকের ফিল্ড অফিসার মিলন চন্দ্র রায়। যক্ষ্মা কি ভাবে সনাক্ত করা হয় এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রাথমিক ভাবে দ্বিতীয় সপ্তাহ বা অধিক সময় ধরে কাশি আছে কি না, বুকে ব্যাথা হয় কি না, বিকালে জ্বর আসে কিনা, খাওয়ার রুচি আছে কি না, শরীরের ওজন কমছে কি না এ সকল জিজ্ঞাসা করে যক্ষ্মা রোগী সনাক্ত করা হয়।
তাদের কফ, কাশ পরীক্ষা করা হয়। তাতে রোগ ধরা পরলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনা মূল্যে চিকিৎসা করা হয়। এ প্রসঙ্গে ডিমলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডাঃ রাশিদুজ্জামান রাশেদ জানান যক্ষ্মা এখন আর মরন ব্যাধি নয় নিয়মিত ওষধ সেবন করলে যক্ষ্মা ভালো হয়।