শততম টেস্টের প্রথম সেশনটা দুর্দান্ত কেটেছে বাংলাদেশের। মধ্যাহ্ন বিরতিতেই ৪ উইকেট। সেই তুলনায় ১ উইকেট নিয়ে শেষ করা দ্বিতীয় সেশনটা ততটা ভালো নয়। কিন্তু এখনো দারুণভাবে ম্যাচে বাংলাদেশ। আর একটা উইকেট তুলে নিতে পারলে বেরিয়ে পড়বে শ্রীলঙ্কার ‘লেজ’। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৪৯ রান করে চা বিরতিতে গেছে শ্রীলঙ্কা।
দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ফিরিয়েছে দিমুথ করুণারত্নে, কুশল মেন্ডিস, উপুল থারাঙ্গা ও আসেলা গুনারত্নেকে। লঙ্কানদের জন্য বিপদের সবচেয়ে বড় কারণ হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাকি দুই উইকেটের একটি মোস্তাফিজুর রহমানের, অন্যটি শুভাশিস রায়ের। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কাকে টেনে তোলে চান্ডিমাল-ডি সিলভার পঞ্চম উইকেট জুটি।
৬৬ রান করে এই জুটি যখনই বিপদের আভাস দিচ্ছিল, ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে বোল্ড করে স্বস্তি ফেরান তাইজুল। ৩৪ রান করা ধনঞ্জয় অবশ্য নিজেকেই দুষবেন উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসায়। অন্য প্রান্তে দিনেশ চান্ডিমাল এখনো ৫৪ রানে অপরাজিত। তাঁকে ফেরাতে হবে দ্রুত। উইকেটরক্ষক ডিকভেলা ১৮ বলে ১১ রানের অপরাজিত ইনিংসটাতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, বেশ স্বচ্ছন্দে ব্যাট করছেন। এই স্বস্তিটাই দেওয়া যাবে না। রাখতে হবে অন্তহীন চাপে।
যে চাপটা বাংলাদেশ শুরু থেকে দিয়েছিল বলেই পেয়েছে সাফল্য। টসে হেরে বল হাতে মাঠে নামা বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজ। ইনিংসের নবম ওভারে করুণারত্নের ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া বলে গালিতে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদী মিরাজ। মোস্তাফিজের পরের ওভারে উপুল থারাঙ্গাকে এলবিডব্লু দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান থারাঙ্গা।
রিভিউতে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার হতাশাটা অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বাংলাদেশের জন্য। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলেই মিরাজের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন মেন্ডিস। বাংলাদেশের অফ স্পিনারের বলটি একটু নিচে নেমে খেলতে চেয়েছিলেন, মেন্ডিসকে আর নিরাপদে ফেরার সুযোগ দেননি আবারও উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো মুশফিক।
শুরুর এই ধাক্কা সামলাতে থারাঙ্গার সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন চান্ডিমাল। কিন্তু ১১ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি এই জুটি। ইনিংসের ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে থারাঙ্গাকে ফেরান মিরাজ। অবশ্য নিচু হয়ে আসা ক্যাচটি দারুণভাবে নেওয়া কৃতিত্ব দিতে হবে সৌম্যকেও।
চতুর্থ উইকেটে চান্ডিমালের সঙ্গে মিলে ৩৫ রান যোগ করেছিলেন গুনারত্নে। ভালো একটা জুটি দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সেই জুটির সমাপ্তি টানলেন শুভাশিস। তাঁর বলে এলবিডব্লু হয়ে গুনারত্ন ফিরেছেন লাঞ্চের আগে ঠিক শেষ বলে।
এরপরই চান্ডিমাল-ডি সিলভার সেই পঞ্চম উইকেট জুটি। এর মধ্যে দুবার রিভিউ নিয়ে বেঁচেছে শ্রীলঙ্কা। মিরাজ ফাইন লেগে দুর্দান্ত বললেও কম বলা হয় এমন ‘ক্যাচ’ নিলেও থার্ড আম্পায়ারের রিপ্লে আবারও বাঁচিয়ে দেয় স্বাগতিকদের।
ভাগ্য পাশে নেই। তবে শততম টেস্টে বাংলাদেশ যেন নিজেই ভাগ্য গড়ে নিতে চায়।