ইরাকে বাড়ছে বিধবা, পরিত্যক্ত ও বয়স্ক নারীর সংখ্যা। তাই মানবতার কারণে পুরুষদের বহুবিবাহের বৈধতা দেয়ার জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব দিয়েছেন ইরাকের পার্লামেন্টের এক নারী সদস্য জমিলা এল-এবেইদি। তিনি বলেছেন, এসব নারীকে আর্থিক ক্ষেত্রে সুবিধা দেয়ার জন্য এমনটা করা উচিত। তাই তিনি বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও বয়স্ক নারীদের মর্যাদা রক্ষার জন্য পুরুষদের বহুবিবাহ বৈধতা দেয়ার আইন করার প্রস্তাব করেছেন। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে পুরুষদের আর্থিক সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে, যাতে তারা একের অধিক নারীকে বিয়ে করতে পারেন। রোববার রাজধানী বাগদাদে পার্লামেন্ট ভবনে মিডিয়ার কাছে এসব কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। জমিলা বলেছেন, ইরাকে বিভিন্ন কারণে বাড়ছে বিচ্ছেদপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা। এতে বড় রকমের একটি সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। নারীরা পড়ছেন আর্থিকভাবে ভয়াবহ এক সঙ্কটের মুখে। তাই নিজের প্রস্তাবের পক্ষে অন্য এমপিদের সমর্থন চেয়ে জমিলা বলেন, যেসব পুরুষ স্বেচ্ছায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করেছেন বা তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। আমি নারী এমপিদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আইবুড়ো ও বিচ্ছেদপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আমার এসব বোনদের জন্য আমাদেরকে এক-নারী মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। উল্লেখ্য, ১৯৫৯ সালের একটি আইনের অধীনে ইরাকে মুসলিম পুরুষদের জন্য একাধিক বিয়ে বৈধ। ওই আইনের অধীনে একজন বিচারক যদি অনুমতি দেন তাহলে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে একজন পুরুষ একাধিক বিয়ে করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আরও বৈধ কারণ আছে। যেমন যদি প্রথম স্ত্রী সন্তান জন্ম দিতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রেও স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন। তবে এ আইনকে পশ্চাৎমুখী ও সময়োত্তীর্ণ বলে দীর্ঘদিন ধরে এ আইনের সমালোচনা করছেন ইরাকের নারী অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। সাম্প্রতিক ভয়াবহ দুটি যুদ্ধের কারণে ইরাকে বিধবা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। তাই এসব নারীর যাতে একটি ব্যবস্থা হয় এ জন্য পুরুষদের বহুবিবাহের বৈধতা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন এমপি জমিলা। তিনি বলেছেন, তার প্রস্তাবিত বিলের ওপর জনগণের স্বাক্ষর সংগ্রহ করবেন। তবে তার এ উদ্যোগের সমালোচনা করেছে ইরাকি পার্লামেন্টের নারী ও শিশু বিষয়ক কমিটি। কুর্দি প্রতিনিধি রেজান দেলির বলেছেন, প্রস্তাবটি নারীর মর্যাদাহানী ও আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা। গত বছরের অক্টোবরে ইরাকি পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হ। তাতে এলকোহল বা মদ বিক্রি, আমদানি বা উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়। এ নিয়ে ইরাকি রাজনীতিকরা দ্বিধাবিভক্ত। এ নিয়ে যখন রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা চলছে তখন জমিলা তার প্রস্তাব সামনে নিয়ে এসেছেন।