এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ ইদানীংকালে বিকেল গড়ালেই ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাম্পাস, বড়মাঠ, বিমানঘাঁটিসহ বিভিন্ন মাঠ, সড়কে শিশু-কিশোরদের সাইকেল, বাইক নিয়ে কারসাজি করতে দেখা যায়।
৩ বছর আগে হাতেগণা ২-৪ জন এসব কারসাজি করলেও বর্তমানে ঠাকুরগাঁওয়ের শিশু-কিশোরদের মাঝে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাইকেল, বাইক রাইডাররা মিলে গড়ে তুলেছে বেশ কিছু ক্লাব, গ্রুপ, সংগঠন। এসব ক্লাব, গ্রুপ, সংগঠনের কাছে প্রাপ্ত তথ্যমতে শুধুমাত্র ঠাকুরগাঁও সদরেই প্রায় ৪০০ শিশু-কিশোর স্টান্ট রাইডিংয়ের সাথে যুক্ত।
আজ শেষবিকেলে এমনই একটি গ্রুপ ‘Stunt Bitto Official’ এর প্রতিষ্ঠাতা ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ফলপ্রার্থী ‘বাসিরুল হাসিন বিত্ত’র সাথে কথা হলো স্টান্ট রাইডিং নিয়ে।
প্রশ্নঃ স্টান্ট রাইডিংয়ের শুরুটা কবে, কিভাবে?
বিত্তঃ আমি ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর সাইকেল স্টান্ট শুরু করি। সর্বপ্রথম সার্ফিং আর হুইলি কমপ্লিট করি। প্রাকটিস করতে করতে দেড় বছরে অনেকগুলো সাইকেল স্টান্ট রপ্ত করে ফেলেছিলাম। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই থেকে শুরু করি মোটরবাইক স্টান্ট। আমি প্রথম ধাপে বার্নআউট নামক স্টান্ট দিয়ে শুরু করি। এরপর হুইলি, বেসিক হুইলি, ফ্লেমিংগো হুইলি, ডোনাট, হাইচেয়ার ডোনাট, সুইচবেক, ক্রিস্ট, হেন্ডেলবার সার্ফিং, সুইসাইড বার্নআউট, হিউমেন কম্পাস, গ্রাউন্ডটাচ স্টান্ট আমি করতে পারি।
প্রশ্নঃ পারিবারিকভাবে এসবে কি সাপোর্ট পাও?
বিত্তঃ পড়ালেখার পাশাপাশি অবসর সময়ে স্টান্ট করি। এসব স্টান্ট রাইডিং শিখতে আব্বু আম্মুর সাপোর্ট ছিল সসবসময়। এছাড়া অনেক বড়ভাই আমাকে প্রচুর হেল্প করছে।
প্রশ্নঃ যারা স্টান্ট রাইডিং শিখতে চায় তাদেরকে কোনো বার্তা দিতে চাও?
বিত্তঃ অনেকে মনে করে স্টান্ট রাইডিং খুব কঠিন। কিন্তু আসলে তা নয়, মন দিয়ে করলে অল্প দিনেই সবকিছু রপ্ত করা সম্ভব। বাইক স্টান্ট কিছুটা রিস্কি। তবে নিয়মকানুন মেনে স্টান্ট করলে এটিও সাইকেল স্টান্টের মতোই সহজ। কারণ, বাইক স্টান্টে বাইক স্পীড ৩০/৪০ এর বেশি লাগেনা। আর স্টান্টিংয়ে সব সেপ্টি কিট রয়েছে। এইগুলো পরে স্টান্ট করলে মেজর কোনো ক্ষতি হয়না।
স্টান্ট রাইডিং ক্রিকেট, ফুটবলের মতোই একটি খেলা। বিশ্বের অনেক দেশেই স্টান্ট রাইডিং খেলা হিসেবে প্রচলিত। কিন্তু বাংলাদেশে এটিকে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
ঠাকুরগাঁওয়ের মতো সারাদেশে স্টান্ট রাইডিং যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, খেলাটিকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান বর্তমানে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।