গ্রাম বাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ইবিআর) তিনটি ইউনিটকে কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন ও কর্তব্যনিষ্ঠা এবং দেশসেবার স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় পতাকা প্রদান করেছেন।
এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে এক কুচকাওয়াজে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রেজিমেন্টের সদস্যরা অতীতের মতো আগামীতেও দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ অর্পিত দায়িত্ব সফলতার সাথে পালনে সম হবেন।
রেজিমেন্টের সদস্যরা কর্মজীবনের সকল ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার উন্নয়ন ঘটিয়ে জাতি গঠনে বলিষ্ঠ অবদান রাখবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জাতীয় পতাকা প্রাপ্ত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ইবিআর) তিনটি ইউনিট হল-রংপুর সেনানিবাসের ৩৪ ই বেঙ্গল, শহীদ সালাউদ্দীন সেনানিবাসের ৩৬ ই বেঙ্গল ও জালালাবাদ সেনানিবাসের ৩৮ ই বেঙ্গল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় পতাকা হল জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান এবং মর্যাদার প্রতীক। আর আবহমান কাল থেকেই যুদ্ধের ময়দানে প্রতিটি জাতির জাতীয় মর্যাদার প্রতীক পতাকা বহন করার রীতি প্রচলিত আছে।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যেকোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। আজ সেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা আপনাদের হাতে তুলে দেয়া হলো।’ এই বিরল সম্মান ও গৌরব অর্জন করায় তিনি ৩৪, ৩৬ ও ৩৮ ইস্ট বেঙ্গলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মদতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন, আমি আশা করি তার মর্যাদা রার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সবসময় প্রস্তুত থাকবেন। আপনাদের প্রতি জাতির এই আস্থা অটুট রাখার জন্য আপনারা সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় রেজিমেন্ট ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পদাতিক বাহিনী হিসেবে তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। পাশাপাশি এ রেজিমেন্টের সদস্যদের যখনই তলব করা হয়েছে তখনই বেসামরিক সরকারকে সহায়তা করছেন এবং বিশ্ব পরিম-লেও তাঁদের কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখে উজ্জ্বল করে তুলছেন দেশের ভাবমূর্তি।
১৯৭১ সালের মার্চে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের ওপর সামরিক অভিযানের জবাবে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেয় এবং দেশকে পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে সেন্টারে ইবিআরের তিনটি ইউনিটের একটি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে কমান্ড দেন লে. কর্নেল মোহাম্মাদ বশিরুল হক।
প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী ইউনিট কমান্ডারদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, নৌবাহিনী প্রধান, উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ, কূটনীতিকবৃন্দ এবং বিশিষ্ট বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।