হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: আনন্দবাজারের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সিলেট সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদে সিলেট জেলার নামের জায়গায় জেলাটিকে বারবার ‘শ্রীহট্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
‘
শ্রীহট্ট’ সিলেটের প্রাচীন একটি নাম হলেও পরিচয় হিসেবে এখন আর কোথাও এর প্রচলন নেই। এক দু’বার সিলেটের প্রাচীন নাম শ্রীহট্টের ব্যবহার হলে আপত্তির কথা নয়।
কিন্তু ওই সংবাদটিতে সিলেট নামটিকে পুরোপুরিই উপেক্ষা করা হয়েছে। জেলার ওসমানীনগরে পিতার হাতে দুই শিশুর হত্যার বর্ণনা দিয়ে ‘দুই শিশুপুত্রকে কী ভাবে খুন, ঘাতক বাবার স্বীকারোক্তি শুনলে শিউরে উঠবেন’ শিরোনামে তিনবারই জেলার নাম হিসেবে সিলেট নামের পরিবর্তে ‘শ্রীহট্ট’ নামটি লিখা হয়েছিল।
শুধু সিলেটের ক্ষেত্রে নয়, বাংলাদেশিদের নামের বানানের ব্যাপারে প্রায়ই দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা। এটা তাদের একটা রীতিতেই যেনো পরিণত হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে বেশ ক্ষুব্দ ও মনক্ষুণ্ন বাংলাদেশীরা।
গত বছরের অক্টোবর মাসে আনন্দবাজার চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছিল ঐতিহ্যবাহী জনপদ সিলেট’র নামের ক্ষেত্রে। তারা যেনো সিলেটকে চিনেই না।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী সিলেটের বন্ধু কালিকাপ্রসাদের অকালে চলে যাওয়া এবং তার প্রেক্ষিতে তার এক বন্ধুর স্মৃতিচারণ বিষয়ক লেখাই আনন্দবাজারকে বেশ ভালভাবেই চিনিয়ে দিয়েছে পূণ্যভূমি সিলেটকে।
আনন্দবাজারে প্রকাশিত কালিকাপ্রসাদের বন্ধু সৌমিত্রশঙ্কর চৌধুরী’র লেখাটির শিরোনাম এরকম। ‘গর্ব করে বলত, আমি সিলেটি।’ এ লেখাটির একটি অংশে লেখক উল্লেখ করেছেন- ‘‘আরেকটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। কলকাতায় গিয়ে অনেকেই যখন ‘সিলেটি’ পরিচয়ে অস্বস্তি বোধ করে, প্রসাদ সেখানে গর্বের সঙ্গে বলতেন, ‘‘আমি সিলেটি।’’
এর আগে বাংলাদেশের সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বাংলাদেশী নামগুলো ভুল বানানে প্রকাশ পাচ্ছিল। জনপ্রিয় নামগুলোর বানানের ক্ষেত্রেও আনন্দবাজারের এ প্রয়াস প্রায়শই নিরানন্দ করে তুলেছে বাংলাদেশীদের, সেই সাথে সাথে সিলেটিদের।
অতীতে আনন্দবাজার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজার শেষাংশ মোর্তাজা, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ‘মামুদুল্লা’ লিখে ব্যথিত করেছে ক্রিকেটপ্রেমী বাংলাদেশিদের।
গত বছরের অক্টোবর মাসে
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাঈদ চৌধুরী টিপু বলেন, আনন্দবাজার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। অবশেষে তারা দোহার ব্যান্ডের জনপ্রিয় শিল্পী কালিকাপ্রসাদের প্রয়াণের পর তার সৌমিত্রশঙ্কর চৌধুরী’র একটি লেখার মাধ্যমে সিলেটকে পুরোপুরি চিনতে পেরেছে। এতোদিন ধরে তাদের উদাসীনতা সিলেটবাসীসহ বাংলাদেশীদের ব্যথিত করেছে।
.