উপমহাদেশের সংস্কৃতিটা এমন ছিল যে দুই দিন আগেও যাকে মাথায় তুলে নাচানাচি হলো তাঁকেই আবার টেনেহিঁচড়ে মাটিতে নামানো হবে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে একটা টেস্ট হারতে না হারতেই বিরাট কোহলির সমালোচনায় মেতে উঠেছে ভারতীয় সমর্থকেরা। পরিস্থিতি এতটাই বাজে, সৌরভ গাঙ্গুলী এগিয়ে এলেন কোহলিকে বাঁচাতে। সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, কোহলিও মানুষ!
পুনে টেস্টে ৩৩৩ রানে হেরেছে ভারত। দুই ইনিংসেই অধিনায়ক কোহলির আউট হওয়ার ধরনটা চোখে লেগেছে সবার। প্রথম ইনিংসে মিচেল স্টার্কের প্রায় ওয়াইড হতে যাওয়া একটি বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের কঠিন সময়ে স্টিভ ও’কিফের সোজা বল ছেড়ে দিয়ে হয়েছেন বোল্ড। এর পর থেকে মুণ্ডুপাত চলছে কোহলির। গাঙ্গুলি অবশ্য উত্তরসূরিকে আড়াল করতেই চাইলেন, ‘কোহলিও মানুষ, ওকেও একদিন ব্যর্থ হতে হতো। পুনেতে সে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হয়েছে। প্রথম ইনিংসে অফ স্টাম্পের বাইরে খুব ফালতু শট খেলে আউট হয়েছে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ানরা ওখানেই বল করেছে। ওরা (অস্ট্রেলিয়া দল) নিশ্চয়ই ইংল্যান্ড সিরিজে স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসন যে অফ স্টাম্পের বাইরে বল করেছে তা দেখেছে। আর দ্বিতীয় ইনিংসের আগেই ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। ৪৪১ রানের লক্ষ্য খুব কঠিন।’
তবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজেই যে কোহলি স্বমহিমায় ফিরবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই বাংলার ক্রিকেটের হর্তাকর্তার, ‘কোহলি ফিরে আসবেই। কারণ, সে জাত খেলোয়াড়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওর রেকর্ড তো অবিশ্বাস্য। নিজের দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়া সফরে টানা চারটা (আসলে টানা নয়, সব মিলিয়ে চারটি) টেস্ট সেঞ্চুরি করেছে। শচীন টেন্ডুলকারকেও এটা করতে দেখিনি আমি।’ আর হঠাৎ চলে আসা এ চাপ সামলানোর ক্ষমতা ভারত অধিনায়কের আছে, ‘কোহলির নেতৃত্বগুণ দুর্দান্ত। ওর ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। সে সৎ, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর দলকে সে যে বার্তা দিচ্ছে সেটাও পরিষ্কার। পত্রিকায় ওর একটা ছবি দেখলাম, ছুটি কাটাতে পাহাড়ে যাচ্ছে, আমার খুব ভালো লেগেছে।’
শুধু অধিনায়ক নয়, সিরিজ জয়ের জন্য ক্রিকেট বোর্ডকেও পরামর্শ দিয়ে রাখলেন গাঙ্গুলী। খুব সহজ পরামর্শ, ভুলেও যেন আর কোনো স্পিন-স্বর্গ বানানো না হয়! ‘আমি স্টিভ ও’কিফকে ছোট করছি না। কিন্তু ব্যাটিং উইকেটে সে এমন উইকেট শিকারি হয়ে উঠত না। ভারতের উচিত ভালো উইকেট বানানো। মুম্বাই ও চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ড ৪০০-৪৫০ করেছিল। ভারত ৬০০-র বেশি করে ঠিকই ম্যাচ জিতে নিয়েছে।’ সূত্র: জি নিউজ।