ঢাকা; গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বাম মোর্চা। এ সময় রাজধানীর শাহবাগ, পল্টন, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও লালবাগে হরতাল সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল করে। পালন করে অবস্থান কর্মসূচিও। এর মধ্যে শাহবাগ ও পল্টন এবং মিরপুরসহ একাধিক স্থানে তারা পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। শাহবাগে হরতাল সমর্থকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও জলকামান ছোড়া হয়। এতে কয়েকজন কিছুটা আহতও হয়েছেন। এ সময় শাহবাগ থেকে ১১ জনকে আটক করে পুলিশ। হরতাল সমর্থনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটলেও রাজধানীর অবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের এর আওতামুক্ত বলা হলেও তাদের দুর্ভোগে পড়তে দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড় থেকে হরতাল সমর্থনে মিছিল বের করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় শাহবাগ মোড়ের উপর দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা অতিক্রম করার সময় বিক্ষোভকারীরা গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে একটি গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। তখন হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এর বেশ কিছুক্ষণ পর হরতাল সমর্থকদের মিছিল হোটেল শেরাটনের সামনের মোড় ঘুরে আবার শাহবাগ হয়ে শিশুপার্ক ঘুরে এলিফ্যান্ট রোডে যায়। সেখান থেকে ঘুরে আবার শাহবাগে অবস্থান নেয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি লাকি আক্তার। সমাবেশে তিনি বলেন, এর আগে সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতালে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল। আজ দেশের জনগণের সম্পদ গ্যাস বিদেশি ও লুটেরাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। রাঘববোয়ালদের সিলিন্ডার ব্যবসায় মুনাফা তুলে দেয়ার জন্যই গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ালে রান্নাবান্না, যানবাহন ভাড়া থেকে শুরু করে জনজীবনের ব্যয় বেড়ে যাবে। এই হরতালে সারা দেশের মানুষের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। সমাবেশের পর তারা আবার মিছিল নিয়ে বাংলামোটর মোড় প্রদক্ষিণ করে ফের শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। হরতাল সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশও তখন কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। এরপর জলকামান ছুড়ে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিভিন্নস্তরের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাদেরকে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়। এতে বাকিরাও ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে এই হরতাল ডেকেছি। আমাদের এই ডাকে সাড়া দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল পালিত হচ্ছে। সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণাধীন পরিবহন কোম্পানিগুলো জোর করে রাস্তায় বাস বের করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।