শিশুকালের লালিত শখেই রঙ বেরঙের বিশাল পাখির খামার

Slider ফুলজান বিবির বাংলা বিচিত্র সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

Ad. Mamun- birds pic-

 

 

 

 

রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:  শিশু কালে সারাদিন বন বাদারে পাখির পিছু পিছু ছুটে বেড়ানোই ছিল প্রধান কাজ। নাওয়া খাওয়া ভুলে সারাক্ষন পাখির ডিম খোঁজা পাখির বাসা থেকে বাচ্চা তুলে আনাসহ ধ্যানেজ্ঞানে পাখি নিয়েই চলেছে দুরন্তপনা। শিশু কাল আর শৈশবের পাখি প্রেমের ভাটা পড়ে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন চাপে। তবে উচ্চ শিক্ষিত হলেও মনের ভিতরে পাখির প্রতি অগাদ প্রেম ভালবাসা রয়েছে আগের মতই। আজ শৈশবের সেই ভালবাসাকে ঘিরেই নিজের আইন পেশার পাশাপাশি বাড়িতে গড়ে তুলেছেন বহু রঙের বিদেশি পাখির খামার। দেশি পাখি পালন নিষিদ্ধ জেনেই শখের বসে বিদেশি পাখির খামার গড়ে তুলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিন চকপাড়া এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে জেলা জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবি মুনতাসির আল মামুন। এখন মানুষকে আইনের মাধ্যমে সহায়তা করা আর রঙ বেরঙের পাখির একটি আদর্শ খামার গড়ে তুলাই মনের ভিতরে লালিত স্বপ্ন তাঁর।

আইনজীবি (শিক্ষানবিশ) মুনতাসির আল মামুন জানান, ছোটকাল থেকেই পাখি প্রেমে অন্ধ ছিলাম। পাখির কন্ঠ পেলেই মন আনচান করে ওঠত। সেই পাখি প্রেম থেকেই আজ এ স্বপ্নের পাখি খামার। তিনি জানান তার খামারে প্রাই ৮-১০ প্রজাতির বিদেশি পাখি রয়েছে। পড়াশুনা শেষে ২০১৬ সালের প্রথম দিকে শুরু করেন পাখির খার্মা। প্রথমে অল্প পাখি থাকলেও এখন,বাজরিকা,বাজরিগার,লাভবার্ড,কোকাটিল,ফিঞ্জেল,প্রিন্স বার্ডসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাই সাড়ে তিনশ পাখি রয়েছে। এ বছর থেকে বানিজ্যিক ভাবে পাখি বিক্রি করা শুরু হয়েছে। লাখ টাকা দিয়ে শুরু খামার এখন পাঁচ লাখ টাকার পুঁজিতে দাঁড়িয়েছে। মামুন বলেন, এক জোড়া এডাল্ড কোকাটিল সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। বাজরিগার চারশ থেকে সাড়ে চারশ টাকায় পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। তিনি আরো জানান, এ বছরের শেষের দিক থেকে প্রতি মাসে যাবতীয় খরচ বাদে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় করা যাবে। মামুন বলেন এখন আমার স্বপ্ন হলো অসহায় দরিদ্র মানুষকে আইনের সেবা দেওয়া আর পাখির প্রেমে নিজেকে মুগ্ধ করা।
মামুনের বাবা সুরুজ মিয়া জানান, খুব সকালেই পাখির কিচিরমিচিরে আমাদের ঘুম ভঙ্গে। সারা দিন অনেক মানুষ আসে পাখি দেখতে। বাড়িতে এসে পাখি নিয়ে মানুষের গল্প আমাদের আনন্দ দেয়। ছেলের এমন কাজ প্রথমে পাগলামি মনে হলেও এখন ভাল লাগে। আশা করি ব্যবসাও ভাল হবে। শিগগিরই আরো কিছু নতুন নতুন পাখি আনা হবে খামারে। তিনি জানান পাখির খাদ্যের দাম অত্যাধিক বেড়ে গেছে। এতে করে পুঁজি বেশি লাগছে।
পাখি দেখতে আসা আরিফ ও রাতুল জানান, পাখির কিচিরমচির শব্দে মন ভরে যায়। আর নয়ন জুড়ায় রঙ বেরঙের পাখির ওড়াওড়িতে। সুযোগ পেলেই পাখি দেখতে চলে আসি।
২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম জানান, পাখি মানুষকে আনন্দ দেয়। মামুন পাখির খামার করে ব্যবসায়িক মুনাফার পাশাপাশি মনে আনন্দের খোরাকের ব্যবস্থা করেছে। তার এ সাফল্য অন্যদেরও এ পাখির প্রতি ভালবাসার দৃষ্টান্ত তৈরী করবে।
শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এম আবদুল জলিল বলেন, পাখি শুধু মুনাফার বস্তু না মনের আনন্দেরও খোরাক যোগায়। শ্রীপুরে বেশ কিছু পাখির খামার রয়েছে। মানুমের পাখির খামারটা অত্যন্ত মনোরম। বিভিন্ন টিকাসহ যাবতীয় ওষুধপাতিসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয় খামাদিরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *