গোয়েন্দা প্রতিবেদন; রামপালকে কেন্দ্র করে বিএনপির আন্দোলনের প্রস্তুতি

Slider রাজনীতি

 

54842_thumbS_f5
ঢাকা; রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও ভারত বিরোধিতাকে পুঁজি করে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। দলটি চায়, দেশের মানুষের মধ্যে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে সরকারবিরোধী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে রামপাল বিরোধী ইস্যুকে ব্যবহার করতে। রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আগামীকাল তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকা অবস্থান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের আজকের ডাকা মশাল মিছিল নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়কে এমনটাই জানিয়েছে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা। অবস্থান কর্মসূচি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে আটটি সুপারিশ করেছে তারা। প্রতিবেদনে বিএনপি’র আন্দোলন সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিএনপি গত কয়েক বছর সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বশেষ ঈদুল আজহার পর আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা দেয়া হয়। জঙ্গিবিরোধী এবং কথিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেও ২০দলীয় জোটের বাইরে কোনো দল থেকে সাড়া মেলেনি। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের পরিবেশ ও সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনাবিরোধী আন্দোলন করে আসছে। বিএনপি বক্তব্য-বিবৃতি, জনসংযোগ, মানববন্ধন, প্রতিবাদ- বিক্ষোভ সমাবেশ ও লংমার্চের মধ্যে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করলেও পরে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে এসব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ঘেরাও, অবরোধসহ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ- বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সাত দফা দাবি আদায়ের জন্য আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন বিএনপি-জামায়াত এবং সরকার বিরোধী সংগঠনগুলো কৌশলে তাদের কর্মী বাহিনীর অনুপ্রবেশ ঘটাতে পারে। এসব কর্মীরা নাশকতাসহ যে কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাম সংগঠনগুলোর মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলন এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ফ্রন্টসহ সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যানবাহন চলাচলে রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো আইনশৃঙ্খলাবিরোধী যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড চালাতে পারে। এছাড়া, বৃহত্তর আন্দোলনের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিবেদনে কর্মসূচি চলাকালীন সতর্কতা হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তা, শাহবাগ চত্বর, শাপলা চত্বর, পল্টন মোড়, মিরপুর-১, ১০, ১১, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, টিএসসি, ফুলার রোড, দোয়েল চত্বর, ঢাকা মেডিকেল আউটডোর এলাকাসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য মহানগর, জেলা ও উপজেলা শহরে অবস্থান কর্মসূচির সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিদেশি রাষ্ট্রের ইন্ধন ও আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কর্মসূচি পালনের দিন দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যরা আরো সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দেবেন। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ওই নির্দেশনায় রামপাল ইস্যু নিয়ে বিএনপি’র যুক্তি-তর্ক, মিছিল সমাবেশের কথাও বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *