ঠিক ওই মুহূর্তে কী মনে হচ্ছিল থাঙ্গারাসু নটরাজনের? আইপিএলে ১০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্য যখন হু হু করে বেড়ে যাচ্ছিল! বাবা ছিলেন রেলওয়ে কুলি, মা রাস্তার পাশের দোকানি। স্বল্প আয়ে বেড়ে খুব কষ্ট করে বেড়ে ওঠা নটরাজনকে যখন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ৩ কোটি রুপিতে নিয়ে নিল, অলীক কিছু মনে হতেই পারে এই বাঁহাতি পেস বোলারের কাছে!
মজার ব্যাপার হচ্ছে, নটরাজন পরিচিতি পেয়েছেন তামিলনাড়ুর ‘মোস্তাফিজুর রহমান’ হিসেবে। সেটা অবশ্য তাঁর বোলিংয়ের ধরনটার কারণে। অনেকটা কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের মতোই।
মাত্র কয়েক মিনিটেই জীবনটা বদলে গেল ২৫ বছর বয়সী নটরাজনের। কিন্তু বদলের গল্পটা যে আরও পুরোনো তাঁর কাছে। নিজের এলাকায় টেপ টেনিস ক্রিকেটে হাতেখড়ি নটরাজন যখন চেন্নাইয়ে এসে জনপ্রিয় ক্লাব জলি রোভার্সে সুযোগ পেলেন, সেটিও কি কম! যে ক্লাবে খেলে সর্বোচ্চ ক্রিকেটের পাঠটা নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন কিংবা মুরালি কার্তিকদের মতো তারকারা, সেই রোভার্সের অন্তর্ভুক্তিও তো তাঁর জীবনের বাঁকবদলের গল্প।
রোভার্সে খেলেই সুযোগ পেয়ে গেলেন তামিলনাড়ুর জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগ টিএনপিএলে—দিনদিগাল ড্রাগনসে। টিএনপিএলই যে নটরাজনকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আইপিএলে যাওয়ার রাস্তাটির সঙ্গে।
আইপিএল তো দূরের কথা টিএনপিএলে খেলার কথাই কোনো দিন স্বপ্নে ভাবেননি তামিলনাড়ুর ‘মোস্তাফিজ’, ‘পুরো বিষয়টিই আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আমি টিএনপিএলে খেলার কথাই কোনো দিন ভাবিনি। আইপিএল তো অনেক পরের কথা। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ সুযোগ পেয়ে।’
বড় পর্যায়ে খেলার আত্মবিশ্বাসটা নটরাজন পেয়েছেন টিএনপিএল থেকেই, ‘খুব চাপে ছিলাম, যখন টিএনপিএলে সুযোগ হলো। তবে আমি কৃতজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও বোলিং কোচ লক্ষ্মীপতি বালাজিদের প্রতি। তাঁরাই আমার মধ্যে বিশ্বাসটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন, এ পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা আমার আছে। রঞ্জি ট্রফিতে খেলাটা আমার স্বপ্ন ছিল, আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করেছি। এখন আমার লক্ষ্য আইপিএল খেলা ও সেখান থেকে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা।’