মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে বরগুনার পাথরঘাটায় আট বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে পায়ে লোহার বেড়ি পরিয়ে মাদ্রাসায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। পায়ে লোহার শেকল আর হাতে ছয় কেজি ওজনের একটি কাঠ নিয়ে হাফেজি পড়াশোনার পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজ সারতে হত শিশুটিকে।
গতকাল সোমবার এক সহপাঠীর সহযোগিতায় পায়ে বেড়ি পরা অবস্থায় শিশুটি মাদ্রাসার বাইরে এলে তার ছবি তোলে স্থানীয়রা। সে ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে ওইদিন বিকেলেই অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আলী হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
নির্যাতিত শিশুটির নাম সিফাত উল্লাহ (৮)। তার বাড়ি পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের নিজলাঠিমারা গ্রামে।
সিফাত উল্লাহর বাবা মো. ছগির মোল্লা জানান, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের সহেরাবাদ বায়তুল ফালাহ হেফজখানায় তাকে হাফেজি পড়তে দেওয়া হয়েছিল। সন্তানকে এ নির্যাতনের কথা তারা জানতেন না।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ও শিশু নির্যতন প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক, পাথরঘাটার সভাপতি ফাতেমা পারভিন বলেন, “শুধু পাথরঘাটায় নয়, সাগর উপকূলের অনেক গ্রামে মাদ্রাসা শিক্ষার নামে শিশু শিক্ষার্থীদের এমন নির্যাতনের চিত্র প্রায়ই চোখে পড়ে। ” তিনি জানান, তার নেটওয়ার্কের সদস্যরা এ নির্যাতনের চিত্রটি বরগুনা জেলা প্রশাসন পরিচালিত নাগরিক সাংবাদিকদের গ্রুপ ‘সিটিজেন ভয়েস’ এ শেয়ার করার পরপরই নির্যাতনকারী ওই হাফেজ আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি মো. জিয়াউল হাসান বলেন, “খবর পেয়েই অভিযুক্ত হাফেজ মাওলানা আলী হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিশুর মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে পাথরঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ” মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা আলী হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।