আন্তর্জাতিক ডেস্ক; জম্মু শহরের চারদিকে অদ্ভুত এক হোর্ডিং বোর্ড বা বিজ্ঞাপন সাইনবোর্ড। এতে লেখা ‘রোহিঙ্গা, বাংলাদেশীজ কুইট জম্মু’। অর্থাৎ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীরা জম্মু ছেড়ে যাও। একই সঙ্গে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে তাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ‘ড্রোগরা’ পরিচয় রক্ষা করতে। এমন হোর্ডিং বোর্ডে ছবি যুক্ত করা হয়েছে জম্মু ও কাশ্মির ন্যাশনাল প্যান্থারস পার্টির নেতাদের। রয়েছে এ দলের চেয়ারম্যান হর্ষদেব সিং ও প্রেসিডেন্ট বলবন্ত সিং মনকোতিয়ার।
হোর্ডিংবোর্ডে জম্মুবাসীকে জাগ্রত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এতে বলা হয়, গত সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি এন পাল বসন্তকুমার ও বিচারক ধীরাজ সিং ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ একটি নোটিশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, রাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর একটি আবেদন জমা পড়েছে আদালতে। সে বিষয়ে সরকারের বক্তব্য কি তা জানতে চেয়ে হাই কোর্টের ওই বেঞ্চ নোটিশ দিয়েছেন মুখ্য সচিব, কমিশনার-সেক্রেটারি হোম, ডিজিপি ও জম্মু জোনের আইজিকে। ওই নোটিশ গ্রহণ করেছেন ডেপুটি এডভোকেট জেনারেল রমণ শর্মা। রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানো বিষয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন এডভোকেট হুনার গুপ্ত। তিনি রাজ্য বিজেপির একজন সদস্য। তার পক্ষে আইনি লড়াই করছেন সিনিয়র আইনজীবী সুনীল শেঠী। উল্লেখ্য, সুনীল শেঠী আবার রাজ্য বিজেপির মুখ্য মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, জম্মুতে অবৈধ বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের নাগরিকের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরকারের হিসাব মতে, ওই রাজ্যের বিভিন্ন অংশে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ১৩ হাজার ৪০০ নাগরিক।
সুনীল শেঠী বলেন, এ সংখ্যা এর থেকেও অনেক বেশি। সুনীল শেঠী দাবি করেছেন, এসব অবৈধ অভিবাসী জাতীয়তাবিরোধী অনেক অপরাধে জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে মাদক পাচার, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার। এসব বিষয় জাতীয়তার বিরুদ্ধে শত্রুতা। সুনীল শেঠী তার আবেদনে আরও বলেছেন, এসব অবৈধ অভিবাসীর কারণে রাজ্যের ভিতরে বিচ্ছিন্নতাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে ভারত বিরোধিতা। বিজেপির এমএলএ রবীন্দর রাইনা বলেছেন, এসব অভিবাসীর বিরুদ্ধে কোনো রেকর্ড নেই। তারা স্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করেন। এটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি। কারণ, তারা সহজেই জাতীয়তাবাদ বিরোধী ভূমিকা পালন করতে পারে। এসব অভিবাসীরা ওই রাজ্যে অবস্থান করুক এর পক্ষে নেই ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেসও। রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র রবীন্দর শর্মা বলেছেন, যদি এসব মানুষ নিরাপত্তার হুমকি হয়ে থাকে তাহলে বিজেপির উচিত বিষয়টি সামনে এগিয়ে আনা এবং এদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার দু’স্থানেই ক্ষমতাসীন বিজেপি। ফলে সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে এসব অভিবাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বিজেপির। রাজ্য পুলিশের সূত্রগুলো বলেছেন, এসব অভিবাসীর বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত থাকার কোনো ঘটনা পাওয়া যায় নি। তবে ভবিষ্যতে তারা যে জাতীয়তাবিরোধী কর্মকান্ড চালাবে না তা বলা যায় না।