শ্রীপুরে পরিবেশ হুমকিতে

Slider গ্রাম বাংলা

16658_gazipur

 

 

 

 

রাতুল মন্ডল, শ্রীপর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেরায় পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য খোলা জায়গায় অবমুক্ত করায় শত বিগা কৃষি জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হয়েগেছে। পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতেও রয়েছে। এমন অবস্থা খুব কমই চোখে পড়ে অন্যান্য এলকায়। উপজেলার বেশ কয়েকটি পোল্ট্রির বর্জ্য খোলা জায়গায় অবমুক্ত করায় এমন বিপাকে পড়েছে কৃষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী গ্রামের জেড আই জালালের মাসুদ পোলট্রি খামারের বর্জ্য অবাদে ছেড়ে দিচ্ছে পাশের কৃষি জমিতে। খামারের পশ্চিম দিকে একটি সলিং রাস্তা তার পাশেই তৈরি করে রেখেছে বিশাল বড় একটি বর্জ্যের খোলা গর্ত। এখানে পড়ছে পোল্ট্রির বর্জ্য, মরা মুরগী, পঁচা ডিম। এগুলো গর্তের পানিতে পঁচে আশপাশের ব্যাপক দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক গ্রামবাসী চলাচল করে এবং সিংগারদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের চলাচলের এক মাত্র রাস্তা এটি। রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে গেলে দূর্গন্ধে নাক চেপে ধরলেও র্গন্ধে পেট ফোলে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। পঁচা বর্জ্য পানির সাথে মিশে প্রায় অর্ধশত বিগা কৃষি জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। দূষিত পানি কৃষকের পায়ে লাগলে গাঁ, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। কৃষি জমিতে ফসল রোপন করলে তা নষ্ট হয়ে যায়। তাই এই ভয়ে কৃষি জমিতে ফসল আবাদ বন্ধ করে দিয়েছে কৃষকেরা। একই চিত্র উপজেলার অন্যান্য পোল্ট্রি খামারে। খামার গুলো হলো, কেওয়া পূর্ব খন্ডের মাওনা শ্রীপুর পাকা সড়কের পাশে শাহজাহান মিয়ার সাদিক পোল্ট্রি ফার্ম, গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের হাসু মিয়ার পোল্ট্রি ফার্ম, ধনুয়া দক্ষিণ পাড়া গ্রামের তাইজ উদ্দিনের পোল্ট্রি ফার্ম, তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের নাজমুল মিয়ার পোল্ট্রি ফার্ম, একই এলাকার সেলিম মিয়ার পোল্ট্রি ফার্ম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কৃষক জানান, মাসুদ পোল্ট্রির খামারের মালিক অনেক ক্ষমতা ধর তাদের বিরুদ্ধে মূখ খোললে অনেক সমস্যা হয়। এই পোল্ট্রির বর্জ্যরে কারণে আমি পাঁচ বিগা ধানের জমিতে চাষ করতে পারছি না। এমন আরো অনেক কৃষক আছে তারাও তাদের জমিতে চাষ করতে পারছে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পোল্ট্রি বর্জ্য খোলা জায়গায় ফেললে যেমন পরিবেশ দূষিত হয়। তেমন বর্জ্য পানিতে মিশে আবাদী জমি নষ্ট করে। এ পোল্ট্রি শিল্পে দেশ যতটা লাভবান হওয়ার কথা ছিলো তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার পাশাপাশি আমাদের মানব দেহে কঠিন রোগ বাসা বাধছে। ডাক্তারা বলছেন, বর্জ্যের র্গন্ধ বাতাসের সাথে মিশে মানব দেহে প্রবেশ করে। এতে শ্বাস কষ্ট ও ডায়রিয়া জনিত রোগ দেখা দিচ্ছে। দূষিত পানিতে নামলে শরীরে পঁচা গাঁ, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে কৃষকেরা।

বিভিন্ন পোলট্রি খামারের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই যেখানে তারা পোল্ট্রির বর্জ্য ফেলতে পারে। সবাই খোলা জায়গায় বর্জ্য অবমুক্ত করছে। অধিক অর্থ ব্যয় হয় বলে পাকা দালান করে বর্জ্যরে গর্ত তৈরি করে না তারা। মাসুদ পোল্ট্রির মালিক জেড আই জালাল বলেন, আমার পোলট্রির বর্জ্য নির্দিষ্ট গর্তে ফেলা হয়। আমার জমিতে আমি বর্জ্য ফেলবো এতে কারো সমস্যা হওয়ার কথা না তো!
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, এই পোল্ট্রি গুলোর বর্জ্য খোলা জায়গায় ফেলে কি না তা তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন জায়গায় পোলট্রি বর্জ্য ফেলা যাবে না। খামারীদের নির্দিষ্ট গর্ত ব্যবহারে পরামর্শ দিয়ে থাকি আমরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *