আদালতে রিট আবেদনের ওপর শুনানি করেন আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
গত ৩১ জানুয়ারি আদালতে উপস্থাপন করা বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ এলাকায় সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন লাগানোর ঘটনার জন্য স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি এবং ওই ঘটনার সময় দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য দায়ী। আগুন লাগানোর ঘটনার সঙ্গে পুলিশের দুজন ও গোয়েন্দা পুলিশের একজন সদস্য সক্রিয়ভাবে জড়িত বলা হয়েছে। তবে তাঁদের শনাক্ত করা যায়নি। হাইকোর্ট এই প্রতিবেদনের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দিয়ে আজ আদেশের জন্য তারিখ ধার্য রেখেছিলেন।
আগুন দেওয়ায় পুলিশ সম্পৃক্ত বলে গণমাধ্যমে আসা খবর যুক্ত করে রিট আবেদনকারীদের করা এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন। সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কারা জড়িত ও এতে পুলিশের কোনো সদস্য জড়িত কি না, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশ দেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২৯ জানুয়ারি গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহিদুল্লাহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল দপ্তরে প্রতিবেদনটি জমা দেন, পরে তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
গত বছরের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ এলাকায় ওই সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত ও কয়েকজন সাঁওতাল নিহত হন। এরপর সাঁওতালদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত ১৬ নভেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), ব্রতী সামাজিক কল্যাণ সংস্থা ও অ্যাসোসিয়েশন অব ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট একটি রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পরদিন হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের আগে ঘটনার দিন আগুন লাগানোয় পুলিশের সম্পৃক্ততা নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর ছবিসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারী পক্ষ।