ময়মনসিংহ; ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ফুলবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন। এতে তিনি ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করেছেন। মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী ফজলুল হক দুলাল বলেন, আদালতের সিনিয়র বিচারিক হাকিম মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফয়জুল বারী, সামাদ মাস্টার, আবদুল ম-ল, মফিজ উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন, মুকছেদ আলী, এবাদুল্লাহ, মুকসেদ আলী, ওয়াহেদ আলী মুনসী, ছোহরাব আলী, আবুল হোসেন, মুছা, আবদুল হালিম, কুদ্দুস, গিয়াসউদ্দিন।
আলোচিত এ মামলার ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানও রয়েছেন। মামলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ২৫ পুরুষসহ মোট ২৬ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৭ জুন আসামিরা ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের সদস্যদের নিয়ে জোড়বাড়িয়া গ্রামে বাদীর বাড়িতে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ চালায়। একই দিনে ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক, রাজ্জাক, ছালাম, মান্নান, ভালুকজানের পালবাড়ী ও ঋষিবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। একপর্যায়ে আসামিদের কয়েকজন ভালুকজান গ্রামের মালেকা খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এর পরের দিন ২৮ জুন একই আসামিরা পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কৈয়েরচালা গ্রামের বসু চৌধুরী, ১২ জুন মুক্তিযোদ্ধা মজিদসহ আটজনকে হত্যা করে। এ ছাড়া ওই দিন গ্রামটির নারীদের ধর্ষণ করে বর্বর নির্যাতন চালায় এই আসামিরা। এরপর ২৯ নভেম্বর তালেব আলী, সেকান্দর আলী, আলতাব আলীকেও হত্যা করে আসামিরা। এর আগে ১০ নভেম্বর আছিম এলাকার আছিম উদ্দিন মোল্লা, ইসমাইল মাস্টার, আবদুল কাদের, আবদুল করিম, আবদুর রশিদ, নায়েব আলীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে ভালুকজান বধ্যভূমিতে ফেলে দেওয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ জুলাই শহীদুল্লাহ মাস্টার ও ছাবেদ আলীকে হত্যায় উল্লিখিত আসামিদের ভূমিকা রয়েছে বলেও মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।