আবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে শনিবার বিকেলে স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক) মো. খায়রুল হাসান বলেন, আবেদন পাওয়ার পর শুক্রবার সকালে তোফাজ্জেলের বাড়িতে যান তাঁরা। বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিভাগীয় কমিশনারকে জানানো হয়েছে।
আজ বিকেলে মুঠোফোনে তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, তাঁর বড় ছেলে আবদুস সবুর (২২) ১০ বছর বয়সে ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি রোগে আক্রান্ত হয়। সে পায়ের শক্তি হারিয়ে ফেলে। বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়, কয়েক বছর আগে সে শারীরিক ক্ষমতা হারিয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। ছোট ছেলে রাহিনুল ইসলামের (১৩) শরীরে আট বছর বয়সে এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। এক বছর আগে একমাত্র মেয়ের ছেলে সৌরভ হোসেনের শরীরেও একই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
তোফাজ্জেল বলেন, তাঁর বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর পর কে দেখবে—এমন কথা চিন্তা করে তিনি দুই ছেলে ও নাতির মৃত্যুর জন্য আবেদন করেছেন। তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী শিরীনা খাতুন মানসিক প্রতিবন্ধী। মেয়ে উম্মে সালমার বিয়ে দিয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটার পর সে বাবার বাড়িতেই থাকছেন। শহরের প্রাণকেন্দ্র বড়বাজারে তোফাজ্জেলের একটি দোকান ছিল। শুধু দেশেই নয়, ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দুই ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা তো দূরের কথা সংসার চালানোর মতো সক্ষমতাও এখন তাঁর নেই।
তোফাজ্জেল বলেন, এখনো ওই রোগের কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের সব অংশের মাংসপেশীই আস্তে আস্তে জমাট বেঁধে যাবে। চলাফেরা বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলার শক্তিও হারিয়ে যাবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে যন্ত্রণাও।
জেলা প্রশাসনের কাছে লেখা আবেদনে তোফাজ্জেল বলেছেন, দুই ছেলে ও এক নাতির কষ্ট দেখে মাঝে মাঝে আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয় তাঁর।