ফিন্যানশিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে হংকং-এর এইচএসবিসি-র অর্থনৈতিক গবেষণার সহ-প্রধান ফ্রেডেরিক নিউম্যানকে উদ্ধৃত করা হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, এটা এশিয়ার জন্য বড় একটা ইস্যু৷ এ ঘটনার মধ্য দিয়ে অন্য দেশগুলোর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠবে৷”
বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মানসুর ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যদি শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত সীমান্ত শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে অন্য দেশগুলের মতো আমরাও ভুক্তভোগী হবো৷ তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি এটা আমাদের জন্যও বাজে একটি খবর হবে৷”
তিনি বলেন, ‘‘একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে৷ এর জন্য বাংলাদেশকে এখন ১৫ ভাগের মতো শুল্ক দিতে হয়৷ কিন্তু তখন শুল্ক দিতে হবে ৪০ ভাগ৷”এছাড়া তাঁর কথায়, ‘‘চীন এই সীমন্ত করের আওতায় পড়তে পারে৷ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এর শিকার হবে৷ তবে শুধু পোশাক নয়, যুক্তরাষ্ট্রে অন্য যেসব পণ্য রপ্তানি হয় সেসব ক্ষেত্রেও এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে৷”
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি সিদ্দিকুর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যদি প্রস্তাবিত সীমান্ত শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান হারাবো৷”
বর্তমানে মার্কিন খুচরা বিক্রেতাদের বাংলাদেশ থেকে পোশাক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়৷ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়, তার ৯৫ ভাগই পোশাক পণ্য৷ যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানিকারকদেরকে চীন থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ, তুরস্ক থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়৷
সেই দিক থেকে তুলনা করলে এখনই বাংলাদেশি পোশাকের ওপর শুল্ক অনেক বেশি৷ তাই সীমান্ত শুল্ক অনেক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে৷ অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে যাবে বাংলাদেশ৷ তবে আহসান এইচ মানসুর মনে করেন, ‘‘এ নিয়ে বাংলাদেশের দেন দরবার করার হয়ত সুযোগ আছে৷ বিশেষ করে গরিব দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সীমান্ত শুল্কের বিরুদ্ধে তার যুক্তি তুলে ধরতে পারে৷”