মো:আলীআজগর পিরু: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বো শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্বো তিনদিনের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে আজ ২০ জানুয়ারি। পবিত্র হজ্বের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশে এই বিশ্ব ইজতেমা।প্রতি বারের মত এবার দ্বিতীয় পর্বে ও দেশ বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।আগামী রবিবার দ্বিতীয় পর্বের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। এবারের দ্বিতীয় পর্বে ও ইজতেমায় ১৬টি জেলার মুসল্লিগণ অংশ নিয়েছেন।দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার শুরুর দিনই অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। জুমার নামাজে দেশী বিদেশী মুসলমানদের সঙ্গে আশপাশের অগনিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা শরিক হবেন। দ্বিতীয় পর্বে ও ইজতেমায় মুসুল্লিদের অংশ নেয়ার জন্য বিশাল চটের প্যান্ডেলকে জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে ।দ্বিতীয় পর্বে ও ১৬টি জেলার জন্য পুরো প্যান্ডেলকে ২৬ খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এসব জেলা গুলো হচ্ছে, ১নং থেকে ৫ নং খিত্তায় ঢাকা জেলার বাকি এলাকা, ৬নং খিত্তায় মেহেরপুর, ৭নং খিত্তায় ঢাকা, ৮ নং খিত্তায় লালমনিরহাট, ৯ নং খিত্তায় রাজবাড়ী, ১০নং খিত্তায় দিনাজপুর, ১১ নং খিত্তায় হবিগঞ্জ, ১২ ও ১৩ নং খিত্তায় মুন্সিগঞ্জ, ১৪ ও ১৫ নং খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ১৬ নং খিত্তায় কক্সবাজার, ১৭ ও ১৮ নং খিত্তায় নোয়াখালী, ১৯ নং খিত্তায় বাগেরহাট, ২০ নং খিত্তায় চাঁদপুর, ২১ ও ২২ নং খিত্তায় পাবনা, ২৩ নং খিত্তায় নওগাঁ, ২৪ নং খিত্তায় কুষ্টিয়া, ২৫ নং খিত্তায় বরগুনা এবং ২৬ নং খিত্তায় বরিশাল জেলার মুসুল্লিগন অবস্থান নেবেন।
এদিকে, দু’পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় রাজধানীসহ ঢাকাসহ মোট৩২টি জেলার মুসুল্লিগন অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকলেও বাকি ৩২টি জেলার মুসুল্লিগন এবারের বিশ্ব ইজতেমায় শামিল হতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে ইজতেমা মাঠে দায়িত্বে নিয়োজিত আয়োজক কমিটির অন্যতম মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান. মাঠে মুসুল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় এবং মুসুল্লিদের অংশ গ্রহণের সুবিধার্থে এবারের বিশ্ব ইজতেমায় ৬৪ জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ৩২টি জেলার মুসুল্লিগনকে দুই পর্বে অংশ গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। বাকি ৩২টি জেলার মুসুল্লিগন আগামি বছর অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম আলম জানান, দু’পর্বের বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকান্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করা হয়েছে। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম, পিপিএম (বার) জানান, ইজতেমার মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে এবার দ্বিতীয় পর্বে ও আইন শৃংখলা বাহিনীর ৬ হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবে। পাশাপাশি পুলিশ ও র্যাবের সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করা হচ্ছে।প্রথম পর্বের মত দ্বিতীয় পর্বে ও থাকছে সকল নিরাপত্তা।
এছাড়া ইজতেমা সফল করার লক্ষ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম ও অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
১৯৬৭ সাল থেকে নিয়মিত বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে একই বছর ২ বার বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে নিয়মিত দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে।